অবিনাশী পর্ব ২৭+২৮

অবিনাশী পর্ব ২৭+২৮
রেজওয়ানা আসিফা

তমার সামনে ইফাদ দারিয়ে আছে। ইফাদও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তমার দিকে। সুন্দরী তমা রানীর বয়সের জন্য চামরায় ভাজ পরে গেছে। প্রথমে চিনতে কষ্ট হলেও পরে চিন্তে পেরেছে। পাশের লোকটাকেও চিনেছে ইফাদ। আরে ! মনে মনে বলছে,ওইতো আমান শেষে পিছে ঘুরা সার্থক হয়েছে।
আমান চৌধুরী তমার কাধে হাত দিয়ে বললো,

-তমা শান্ত হও। কিচ্ছু হয় নি। সব ঠিক আছে। এখানে আমাদের ছেলের বিয়ে হচ্ছে। আমাদের ছেলের কথা ভেবে কিচ্ছু করো না।
তমা সাভাবিক হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আমানের দিকে তাকিয়ে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হউন

– এখন আমি আমার ছেলের ভালোর জন্য যা করবো তাতে তুমি আমায় আটকিয়ো না।
কথাটা বলেই তমা দৌড়ে বাড়ির মধ্যে গেলো, যেখানে আয়ান আর হিয়া বসা। গিয়েই আয়ানের হাত টা ধরে টেনে নিয়ে আসলো বাইরে। সবাই তমার এমন কান্ডে অবাক হয়ে গেলো। ইফাদও তাকিয়ে আছে।
ঈশান ছোট থেকেই অসুস্থ থাকায় ইফাদের সম্পর্কে কিছু না জানলেও আয়ান সব যানে। এমনি মায়ের ডাইরীতে একটা ছবিও দেখেছে।

হিয়া কিছু বোঝার আগেই যেনো সব হয়ে গেলো। তানিয়া তিশা সবাই কিছুই বুঝতে পারছেনা। সবাই তমার পিছে পিছে বাড়ির বাইরে গেলো। তমা আয়ানের হাত ধরে আমান চৌধুরীর সামনে গিয়ে বললো,
-আমি এখানে কোনো ভাবেই ছেলের বিয়ে দিতে পারবোনা আমান। এখানে আয়ানের বিয়ে দিলে ও এখানে আসলে আজীবন নোংরা লোকটার সাথে দেখা হবে। আমি চাইনা এই লোকটার সামনে আমার ছেলে মেয়েরা আসুক আর ওর নোংরা দৃষ্টি আমার ছেলে মেয়ের উপর পরুক। তাই আমাকে ক্ষমা করো

ইফাদের হঠাৎ কেনো যেনো কষ্ট হচ্ছে তমার জন্য। অনেক রাগ তার প্রতি তমার। সে কী ভুল করেছে তা আগেই বুঝতে পেরেছে। কিন্তু আজ আরো বেশি অনুসুচনা হচ্ছে তার। অনেক বড়ো ভুল করেছে সে। তার কোনো ক্ষমা নেই সে সেটা আরো আগেই বুঝেছে। সে যে পাপ এই পাপের শাস্তি অনেক আগেই পেয়ে গেছে সে। যখন একটার পর একটা সন্তান জন্মের পরেই মারা গেছে তখন তায বুঝতে বাকি ছিলো না কোন পাপের শাস্তি এইসব।
তমা আয়ানের হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সবাই তাকিয়ে দেখছে। তানিয়া কিছু বলবে কী বলবে না সেটা নিয়ে দিধায় পরে গেছে। কারণ এর পূর্বের কাহিনি সে জানেনা।

হিয়া লেহেঙ্গার ভর সামলাতে পারছে না। দৌড়ে আসতে গিয়ে সবুজ ঘাসের মধ্যে লুটিয়ে পরলো। আয়ান পিছে তাকিয়ে থেমে গেলো। ইফাদ গেছে দৌড়ে হিয়া কে তুললো তানিয়া তিশাও এগিয়ে গেলো।
হিয়া কাদছে। ইফাদকে জড়িয়ে ধরে কাদছে আর বলছে,
-ছোট আব্বু, ওকে থামাও। ও কোথায় যাচ্ছে। ওকে থামাও আব্বু!
আয়ান তমার হাত ছাড়িয়ে হিয়ার কাছে আসতেই তমা আয়ানকে আরো শক্ত করে ধরে টেনে গাড়িতে তুলতে গেলো।
হটাৎ ইফাদ বলে উঠলো,

-দারাও তমা! একটা মিনিট দারাও।
তমা দারিয়ে পরলো। ইফাদ উঠে আসলো হিয়াকে নিয়ে। হিয়া হাটতে পারছে না। ডুকরে ডুকরে কাদছে।আয়ান আর সহ্য করতে না পেরে দৌড়ে গিয়ে হিয়াকে ধরলো। আয়ান হিয়াকে ধরার পর ইফাদ ছেড়ে দিয়ে তমার দিকে এগিয়ে আসো। ইফাদ কে তমার কাছে দেখে আমান এগিয়ে আসলো তমার কাছে।
-তমা আমার শাস্তি তুমি ওই ছোট মেয়েটাকে দিতে পারো না। ওরা তো দুই জন দুই জনকে ভালোবাসে।প্লিজ তমা!
তমা আট্টোহাসি দিয়ে বললো,

– ভালোবাসা বলতে তুমি কিছু বোঝো নাকি আবার ! তোমার মুখ দেখলে আমার ঘৃণা হয়। এখনো হচ্ছে প্লিজ সরে যাও । তোমার মুখে আমার থুথু দিতে ইচ্ছে করছে।
ইফাদ কষ্ট পেলো তারপরও বললো,
-যা ইচ্ছে দাও। ইচ্ছে করলে কয়েকটা থাপ্প*ড় মেরে দাও আমাকে। তোমার জা ইচ্ছে তুমি করো। তারপরও ওদের এভাবে আলাদা করো না।

– আমার সন্তানের জীবন আমি তোমার কথাত ঠিক করবো না। আমার যা ইচ্ছে তাই করবো।
ইফাদ আমানের দিকে তাকিয়ে বললো,
-একটু বোঝান প্লিজ। ভালোবাসা মানে কী সেটা নাহয় আমি বুঝি না। আমি তো বোঝেন। প্লিজ একটু বোঝান ওকে।
আমান তমার দিকে তাকাতেই আ অন্য দিকে ফিরে গেলো। ইফাদ আয়ানের কাছে গিয়ে বললো,

-তুমি একটু বোঝাও না তোমার মাকে! তুমিও তো ওকে ভালোবাসো।
আয়ান হিয়াকে জড়িয়ে ধরে হঠাৎ বললো,
-আমার জীবন শেষ হয়ে গেলেও আমি ওকে ছেড়ে যাবো না।
কথাটা বলে সে আমার হিয়াকে নিয়ে বাড়ির মধ্যে গেলো। তানিয়া তিশা নূহা নূর শেহজাদ ঈশান সবাই হাসি মুখে আমার ভেতরে গেলো। এমন কি উপস্থিত সবাই বিয়ে দেখতে গেলো। দারিয়ে আছে একমাত্র ইফাদ আমান আর তমা। ইফাদ তমার দিকে তাকিয়ে চোখ মুছে ভিতরে চলে গেলো।
তমাকে ধরে আমান একটা চেয়ারে নিয়ে বসালো। কাধে হাত দিয়ে বললো,

-নিজে তো ভালোবাসা পাও নি। সেই কষ্ট টা তো বোঝো তাহলে ওদের কেনো আলাদা করছো? দেখো ছেলে মেয়ে গুলো কতো ভালো আছে।
তমা শান্ত হয়ে বসে আছে। তমাকে নিয়ে আমান চৌধুরী বিয়ের আসরে গেলো। তমা আর কোনো কথা বললো না।
বিয়েটা ভালো ভাবে সম্পূর্ণ হলো।
হিয়া খুব কান্নাকাটি করছে। তিশা তানিয়ার কানে কানে বললো,

-হিয়া কীভাবে কাদছে দেখো।আমি তো জীবনেও কাদবো না। কে কাদে ভাই! ভালোবাসার মানুষরে বিয়ে করতে পারলে হাসে হাসতে চলে জাবো।
তানিয়া মৃদু হেসে বললো,
-এখন বুঝবে না। যখন নিজের সাথে হবে তখন বুঝবে।
কান্না কাটির পালা শেষ করে সবাই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো। হিয়া কে কোলে করে আয়ান গাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। হিয়া আয়ানের গলা পা জড়িয়ে ধরে মনে মনে ভাবছে,

-কিছুক্ষনের মধ্যেই কীভাবে মানুষ টার ব্যক্তিগত হয়ে গেলাম। এই মানুষটাই এখন আমার সব।
মাত্র গাড়ীতে উঠলো সবাই। পৌছাতে পৌছাতে সময় লাগবে অনেক।তাই তিশা নূহা আর বাইকে করে নিয়ে নূর শেহজাদ। তানিয়া হিয়ার সাথে যাবে এইজন্য ওদের সাথে জায়নি। ওরা সকালে ফুল কিনে রেখেছে। এখন গিয়ে বাসর ঘর সাজাতে হবে নাহলে ফুল নষ্ট হয়ে জাবে।

চারজন বাড়িতে চলে এসেছে। তিশা বোরকা খুলেই ওরনা কোমরে বেধে নিলো। নূর পাশে নিয়ে এক ধকম দেওয়ার সাথে সাথে ওরনা টা কোমর থেকে খুলে মাথায় চলে গেলো। নূহা বোরকা খুলে ওই বাড়ি থেকে আনা চকলেট খাচ্ছে। নূহার সাথে সাথে শেহজাদ ও বসে পরলো। ওদের এসব কান্ড দেখে নূর হা করে তাকিয়ে আছে। কোমরে হাত দিয়ে বললো,

-তোমাদের না এনে তানিয়া ভাবি আর ঈশান কে নিয়ে আসলে ভালো হতো। হুদাই সময় নষ্ট করছো। একটা বাচ্চাআ সাথে সাথে আরেকটাও শুরু করেছে।
শেহজাদ বুঝতে পারলো তাকেই বলেছে। তারাতাড়ি উঠে গেলো। শেহজাদ আর নূর ফুল গুলো খুলতে লাগলো। আর তিশা বিছানায় নতুন চাদর বিছিয়ে দিলো। তারের প্ল্যান আগে থেকেই করা ছিলো। থিম সাদা থাকবে। বরাবরই এই সব গুলো মানুষের পছন্দের রং সাদা। তাই সাদা গোলাপ আর আরো নানা রকমের সাদা ফুল দিয়ে সাজানো শুরু করলো।

টানা ৩ ঘন্টা ধরে সম্পূর্ণ ঘর সাজানোর পর সবাই বসার ঘরে রেস্ট নিচ্ছে আর তিশা ফুল গুলোতে হালকা পানি দিয়ে দিলো। তারপর ঘরটা তালা মেরে চাবি না নূরের কাছে দিলো। নূর বললো, এই পরিশ্রমের মূল্য কতো চাইবো কেউ বলোতো!
নূহা মোবাইলে বোরকা দেখতে দেখতে একটা ছবি নূরের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,

-বেশি না রে ভাইয়া এই বোরকা টা কিনে দিলে আমি ওই চাবি চুরি করে আয়ান ভাইয়াকে দিয়ে দিবো।
নূর অনুমান করে বললো,
-এটা আনুমানিক ২ হাজার টাকা হবে। ফুল এনেছি ৩ হাজার টাকা !
নূর তিশার দিকে তাকিয়ে বললো,
-ওরে থামতে বলো। নাহলে মাইর খাবে।
শেহজাদ বললো,

-২০ হাজারের এক টাকাও কম হবে না।
নূর শেহজাদের কাধে হাত দিয়ে বললো,
-এইতো মনের কথা বলেছো। তিশা একটা কাজ করো, তানিয়া ভাবিকে একটা ফোন করে জিগ্যেস করো তো কোথায় আছে! সন্ধ্যা হয়ে গেছে এখনো আসে না।
তিশা ফোন করতে যাবে তার আগেই বাইরে গাড়ির আওয়াজ পেলো। সবাই তারাতাড়ি বাইরে গেলো।
সব নিয়ম কানুন শেষ করে বউ কে ঘরে আনা হলো।
তারপর দুই জনের কিছু ছবি তুললো। পারা প্রতিবেশী অনেক মেয়ে মহিলারা বউ দেখতে চলে এসেছে। কিন্তু হিয়ার এতো ভাবি গহনা লেহেঙ্গা পরে বিরক্ত লাগছে।
তাই তিশা কে চুপিচুপি ডেকে বললো,

-এই গুলো খুলে পাতলা শাড়ি বা জামা পরতে পারলে ভালো হতো।
তিশা গিয়ে তানিয়াকে বললো। তানিয়া হিয়ার সুকেজ থেকে হিয়ার জন্য কেনা নতুন একটা শাড়ি নিয়ে ওর রুমে নিয়ে গেলো। হিয়া রুমে গিয়েই ধপাস করে সুয়ে পরলো।
উপরে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে বললো,

-বিয়ে যে এতো জালা তোমার আগে বলা উচিৎ ছিলো তানিয়া! কোন পাগলে বলছিলো আমাকে বিয়ে করতে। পাগল হয়ে যাচ্ছি এখন। এতো ভারি গহনা শাড়ি লেহেঙ্গা পরে।
তিশাও আছে এখানে। সে হিয়ার কথা শুনে ঢুক গিলে বললো,
-বলো কী! বিয়ে অনেক ঝামেলা নাকি? তাহলে বাবা আমি কাইন্দা বাচি। বিয়ে করবো না।
-এহহহহ! তোমারে দিয়ে কী ঘরের খাম দিবো না। ননদ বিদায় করতে হবে আগে।
তানিয়া হেসে হেসে কথা গুলো বললো।
হিয়া ক্লান্ত হয়ে বললো,

-যে যাই বলো!বিয়ে করা প্রচণ্ড বিরক্ত। যখন অপরিচিত মুরব্বি মানুষের সামনে ঘন্টা খানেক বসে থাকা লাগে, বিশ্বাস করো কী যে কষ্ট লাগে। তখন শুধু একটা চেনা মুখের আশায় থাকতে হয়।
তানিয়া হাসতে হাসতে বললো,
-যাও তো তুমি আগে এই জামা টা পরে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হও তারপর শাড়ি পরাবো আমি !
হিয়া উঠে বসে বললো,

-সেকি ! এতো টাকার মেকআপ এখনি ধুয়ে ফেলবো? বাইরে তো আরো অনেকক্ষন বসতে হবে বোধহয়।
-আমার যা এমনিতেই সুন্দর ! মেকআপ নিয়ে বসা লাগবে না।
তানিয়া একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,
-আর এই গুলা এখন না ধুলে সব আমার দেবরের পেটে যাবে। যেনে শুনে অবলা ছেলেটার এতো বড়ো ক্ষতি কীভাবে করি বলো! মেকআপ খেয়ে পেটে আসুখ হবে তো!

তানিয়ার কথা শুনে তিশা সাথে সাথে বিছানার পাশে টি টেবিলে রাখা ম্যাগাজিনটা পরার ভান করে নিজের মুখটা আড়াল করে নিলো। হিয়া লজ্জার চাপে হাসতে ভুলে গেছে। আস্তে আস্তে জামাটা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।
দশ মিনিটের মধ্যেই হিয়া বেড়িয়ে এলো। তারপর তানিয়া হিয়াকে একটা সোনালী পারের কালো জামদানি শাড়ি পরিয়ে দিলো। একটু হালকা সাজিয়ে দিলো, বউ হিসাবে জেটা না সাজলেই নয়। চোখে একটু কাজল, হালকা একটু লিপস্টিক।

রাত বাজে ১১ টা। হিয়া বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। সে গুনে রেখে প্রায় ১০০ মহিলার কম আসেনি। সব গুলো কে চিবিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে তার। সবার আগে আয়ানকে চিবাতে ইচ্ছে করছে। কোন দুঃখে এই অনুষ্ঠান করেছে এই পাপে আয়ানের গলা টিপে দিতে ইচ্ছে করছে।

এখন ঘর ফাকা। তিশা নুহা তানিয়া কেউ খায়নি। সবাইকে খাবার পরিবেশন করতে তমার সাথে সাথে সাহায্য করেছে। আর তাদের প্ল্যান ছিলো হিয়াকে নিয়ে একসাথে খাবে। তাই সবার খাওয়ার পর একটা বড়ো প্লেটে খাবার নিয়ে আসলো তানিয়া। তারপর একসাথে সবাই খেতে বসলো।
দরজা ভেতর থেকে লাগিয়ে দিয়েছিলো তিশা। হঠাৎ বাইরে দরজা ধাক্কানোর শব্দ শোনা গেলো। তিশা খেতে খেতে বললো,

-কে দরজা ধাক্কাচ্ছে! ভেতরে খাচ্ছি তো।
বাইরে থেকে করুন কন্ঠে কেউ বললো,
-বোন আমি………..
কন্ঠোটা শুনে ঘরের সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।সবাই বুঝে গেছে এটা কে। কিন্তু তিশা না বোঝার ভান করে বললো

-আমিটা কে আবার। নাম নেই নাকি?
আয়ান বুঝতে পারলো তিশা বুঝেও এমন করছে। রেগে বললো,
-তুই বাইরে আয় একবার। তারপর বোঝাচ্ছি আমি টা কে।
-আমাকে হুমকি দিলে? ভেবে চিন্তে দিলে তো! ভুলে গেলা নাকি তোমার বউটা ভেতরে। দরজা আজকে আর খোলা হবে না গো। জাও সোনা ভাই ঘুমাও। বউ দেবো না। কতো বড়ো সাহস আমাকে হুমকি দেয়।
আয়ান বুঝতে পারলো, ধমকে কাজ হবে না। তাই ভালো ভাবে বললো,

– না না ধমক কোথায় দিলাম। বলছিলাম একটু দরজা টা খোল না প্লিজ।
সবার খাওয়া এতোক্ষনে শেষ তাই তানিয়া দরজা খুলে দিলো।
আয়ান ভেতরে এসে বললো,
-বলছিলাম সারাদিন খুব ধকল গেলো তো। তাই অনেক ক্লান্ত লাগছে আর ঘুমও পাচ্ছে। যদি আর কোনো নিয়ম কানুন না থাকে তাহলে তো আমরা ঘুমাতে পারি।
আয়ানের কথা শুনে তানিয়া আর তিশা হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। হিয়া মুচকি মুচকি হাসছে।
তিশা বললো,

-যে গান শুনে, সি*গারেট খেয়ে রাতের ৩ টা বাজে সুতে জায় তার আজ ১১ টা বাজে ঘুম পাচ্ছে। এটা হাস্যকর !
আয়ান মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো,
– সত্যি ঘুম পাচ্ছে ! উল্টা পাল্টা ভাবছো তোমরা!
-হ্যা হ্যা যানি তো খুব ঘুম পাচ্ছে। তিশা চলো আর বেচারাকে বিরক্ত করে লাভ নেই। আমাদের পাওয়া না বুঝে নিয়ে আমরা ওদের ছেড়ে দেই।

একটু পরেই শেহজাদ আর নূর আসলো। ঈশানের শরীর টা ভালো লাগছে না তাই আরো আগেই তানিয়াকে বলে সুয়ে পরেছে।
সবাই হিয়া আর আয়ানকে নিয়ে আয়ানের ঘরের সামনে নিয়ে গেলো। ঘরের সামনে গিয়ে আয়ান অবাক হয়ে বললো,

-আমার ঘরে তালা দেওয়া কেনো? ঘরে যাব কীভাবে?
শেহজাদ বললো,
-চাবির দাম মাত্র ২০ হাজার টাকা। মাত্র 20!
আয়ান নূর কে বললো,

– শেহজাদ বলছে কী? ২০ হাজার টাকার আগে পরে মাত্র লাগাচ্ছে। এটা নাকি মাত্র! একটা চাবি নাকি ২০ হাজার টাকা !
-হ্যা ঠিকি বলছে। ২০ হাজার দাও। চাবি নাও। তারপর বউ নিয়ে ঘরে ঢোকো।
এক ঘন্টা ধরে আয়ান একটার পর একটা অজুহাত দিয়েই জাচ্ছে। তিশা বিরক্ত হয়ে বললো,
-দেখ ভাই নতুন বউ এর সামনে এতোক্ষন ধরে এই ছ্যাঁচড়ামি করছিস তোর লজ্জা লাগে না। এর থেকে টাকা দিয়ে দে না।

অবিনাশী পর্ব ২৬

আয়ান শেষ পযর্ন্ত উপায় না পেয়ে পকেট থেকে ২০ হাজার টা বের করে নূরের হাতে দিলো। সবাই হুররেররর বললো। আর নূর চাবিটা আয়ানের হাতে দিলো।

অবিনাশী পর্ব ২৯