অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ৪৩

অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ৪৩
Mousumi Akter

চারদিকে ফজরের আজানের ধ্বণি শোনা যাচ্ছে। ছোট ছোট নৌকা আর ডোঙা নিয়ে জেলেরা নেমে পড়েছে নদীতে মাছ ধরতে। অন্ধকারটা একটু আবছায়া হয়েছে কেবল। কৃষ্ণের বাবা বলাই এর নৌকার নিচে কিছু একটা পড়েছে। নৌকাটা কোনোভাবেই সরছেনা। বলাই বিড়বিড় করছে আর বলছে ছেলেটা আজ আসেনি আর আজই নৌকাটা আটকে যেতে হলো। বলাই অনেক সময় চেষ্টা করে নৌকা সরাতে পারছে না। পেছন থেকে হারাধন বলছে,

‘জ্যাঠা কি হয়েছে? ‘
বলাই বলল,
‘ এদিকে একটুখানি আয়তো ভাই। নৌকাটা সরছে না কেন দেখ।’
হারাধন বৈঠা বেয়ে এগিয়ে এলো। বলাই-এর নৌকার কাছে এগিয়ে এসেই হারাধন এর চোখ কপালে উঠল। সে চিৎকার দিয়ে উঠে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘ জ্যাঠা তোমার নৌকার নিচে লা’শ।’
কথাটা শুনেই বলাই এর চোখ কপালে উঠল। বলাই উত্তেজিত কণ্ঠে বলল,
‘ বলিস কি?’

ওদের চেচামেচিতে আরোও কয়েকজন জেলে নৌকা নিয়ে এগিয়ে এলো। বৈঠা আর চৈড় দিয়ে গুতাগুতি করে বলাই -এর নৌকার নিচ থেকে লা’শ বের করল। এতক্ষণ যাবৎ কেউ লাশের মুখ দেখতে পায়নি। নৌকার নিচ থেকে লাশটা বের হতেই সবাই আতকে উঠল। মুখটা সবার পরিচিত অদি আদরের পুজার লা’শ। নঘ্ন দেহটা পানির ওপরে ভাষছে। পেটটা ফুলে উঠেছে। কয়েকজায়গা মাছে ঠোকর দিয়েছে।

ওদের চিৎকার চেচামেচিতে জেলেপড়ার নদীর কূলে মানুষের ভীড় জমল। নদীর কূলে ছোট -বড় সব ধরণের মানুষ এসে ভীড় জমিয়েছে। পূজার লা’শটা ওরা ধরে নৌকায় তুলল। ওদের সবার গামছা দিয়ে শরীরটা ঢেকে দিলো। একজন নৌকা নিয়ে ছুটে গেলো। ছুটে গিয়ে খবর দিলো নদীতে পূজার লা’শ পাওয়া গিয়েছে। পূজার মা-বাবার বুকফাটা আর্তনাদে কেঁপে উঠল জেলে পাড়া। পূজার মা শুধু বলছে,

‘ আমার মেয়ে কার এমন ক্ষতি করেছে। কে আমার বুকটা খালি করল। আমার বিয়ের বারো বছর পরে অনেক সাধনা অনেক পূজার পরে আমার কোলজুড়ে পুজা এসেছিলো। তাই ওর নাম পূজা রেখেছিলাম। আমার পূজার আগে আমি চিতায় উঠতে চাই। ‘

একজন সন্তানহারা মায়ের এই আর্তনাদে কাদছে পুরো জেলেপাড়ার মানুষ। পূজাকে নৌকায় করে তীরে আনা হলো। লাশটা সবাই ধরে পূজাদের বাড়িতে নিয়ে গেলো। পূজার ফুলের মত চেহারা আর শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের ছাপ। পূজার মা-বাবা গাছের সাথে মাথা ধাক্কাচ্ছে। মাটিতে গড়াগড়ি করছে। এত যন্ত্রণা,এত কষ্ট সহ্য করার মত নয়। পুষ্প’র বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে। এখনি মনেহয় হৃদয়টা ফেঁটে যাবে। সে পূজার মুখটা দেখতে যায়নি। নিজের ঘরে বিছানার চাঁদর খামছে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে। চোখের সামনে ভেষে উঠছে পূজার হাসিখুশি মুখটা। কানে বারবার বাজছে, ‘পুষ্পদি, পুষ্পদি।’

পুষ্পর মনে হচ্ছে ও পা’গ’ল হয়ে যাবে। মাথা চেপে ধরে রেখেছে। কয়েকদিনের পরিচয়ের পূজা ওর মনে এত গভীরভাবে জায়গা করে নিলো কীভাবে? পুষ্প শুধু কাঁদছে।
পূজার মৃত্যুর খবর’টা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।

পূর্ণতা মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে ডেকে বলছে, ‘ আম্মুতো চলেই গিয়েছে, পূজা ও হারিয়ে গিয়েছে। আম্মু তোমার কাছে ভালো থাকুক কিন্তু পূজাকে ফিরিয়ে দাও সৃষ্টিকর্তা। ওর জীবনটা কেবল ই শুরু। একটা নিষ্পাপ ফুল ও। আমি পূজাকে ভীষণ ভালবাসি। ওর কিছু হলে পা’গ’ল হয়ে যাবো। তাছাড়া এই পৃথিবীতে একজন আছে সে হলো কৃষ্ণ। পূজা ছাড়া ও বাঁচবেনা। আমার প্রার্থণা কবুল করো সৃষ্টিকর্তা।’

তখন’ই প্রভাত বাইরে থেকে এলো। প্রভাতকে ভীষণ চিন্তিত দেখাচ্ছে। প্রভাত রুমে আসতেই পূর্ণতা বলল,
‘ চৌধুরী সাহেব।’
প্রভাত পূর্ণতার দিকে তাকালো। পূর্ণতার অশ্রুসিক্ত চোখের দিকে তাকিয়ে ভয় পেলো। পর পর দুই দুটো শোক পূর্ণতা কীভাবে সামলাবে। আমার হাতে ওই ঐশ্বরিক ক্ষমতা নেইতো। থাকলে সবাইকে বাঁচিয়ে রেখে তোমাকে দুঃখ পেতে দিতামনা।
পূর্ণতা বলল,

‘ জানেন পূজা কৃষ্ণ নামক ছেলেটাকে ভীষণ ভালবাসে। আপনাকে আমি যতটুকু ভালবাসি তারচেয়েও বেশী ভালবাসে। আপনি যে স্মার্ট ফোনটা কিনেছেন পূজাকে খুঁজে পেলেই দিয়ে দিবেন। ও কৃষ্ণের সাথে ভিডিও কলে কথা বলবে। জানেন সত্যিকারের ভালবাসা দেখতেও ভালো লাগে।’
প্রভাত কিছু না বলে পূর্ণতাকে জড়িয়ে ধরল। খুব শক্তভাবে জড়িয়ে ধরল। জড়িয়ে ধরে বলল,

‘ আমাকে শক্তি দেও পূর্ণ, আমি ভেঙে পড়েছি,দূর্বল হয়ে যাচ্ছি। আমি তোমাকে দেওয়া কথা রাখতে পারছিনা কেন জানিনা।’
‘ কেন কি হয়েছে?’

‘ তোমার আম্মুকে সুখ দিতে পারিনি, তোমার বাবাকে শাস্তি দিতে পারিনি। আমিযে খু’নি নই পূর্ণ। না ‘হলে খু’ন ই করতাম। বাবার কিছু অবৈধ ব্যবসা আছে আমি বুঝি। উপযুক্ত প্রমান নেই বলে আমি তা পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারছিনা। ওরা সুদ,ঘুষের মাধ্যমে অবৈধ টাকা ইনকাম করে। বিভিন্ন বিদেশী নারী-পুরুষের সাথে ব্যবসায়িক ডিল করে। সব ই সুদের কারবার।

ওরা মানুষের সামনে যত ভালো মানুষি দেখায় অতটা ভালো নয়। যা বুঝতে আমার অনেক সময় লেগেছে। আমি চোখ বুজে আমার বাবাকে বিশ্বাস করেছি এটা কি আমার অন্যায়। নিজের জন্মদাতা বাবাকে বিশ্বাস করব নাতো সন্তান হিসাবে এই দুনিয়াতে কাকে বিশ্বাস করব আমি পূর্ণ। আগে ভাবতাম বাবা আর চাচা তাদের অর্ধাঙ্গীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে, তাই ওদের আমি খারাপ ভাবতাম। আস্তে ধীরে বুঝলাম এর বাইরেও কিছু গোলমাল আছে। যা বুঝতে আমার সময় লেগেছে।’

‘ আপনি ভেঙে পড়লে কে সামলাবে সব। পরবর্তী প্রজন্ম কে আপনার এগিয়ে নিতে হবে, আপনার আদর্শে।’
‘ পূজার লা’শ পাওয়া গিয়েছে নদীতে। আমি পারিনি কিছু করতে। ‘ বলেই পূর্ণতাকে আরোও শক্তভাবে জড়িয়ে ধরল প্রভাত। পূর্ণতার মস্তিষ্ক ফাঁকা হয়ে গেলো। নিজের মায়ের মৃত্যুর পর পূজার মৃত্যু পূর্ণতা মেনে নিতে পারছেনা। হাউমাউ কান্নায় আবারও ভেঙে পড়লো প্রভাতের বুকে।পূর্ণতা প্রভাতের বুকে কিল দিতে দিতে বলল,

‘ আমার পূজাকে ফেরত চাই, পূজাকে ফেরত চাই।’
বাস্তবতা বড়ই কঠিন। অনেক কিছুই চাইলেই মানুষ মেনে নিতে পারেনা তাও মেনে নিতে হয়। গাড়িতে করে চৌধুরী বাড়ি থেকে সবাই এলো জেলে পাড়ায় পূজাকে দেখতে।
রাজনসহ পুলিশের পুরো একটা টিম পূজার বাড়ি ঘিরে রয়েছে। রাজনের মাথা হেট হয়ে যাচ্ছে। নিজেকে একজন এসআই বলে পরিচয় দিতে লজ্জা করছে। পূজার মা-বাবা রাজনের পায়ের কাছে পড়ে বলছে,

‘ তুমি কেমন অফিসার বাবা, আমার মেয়েটারে বাঁচাতে পারলেনা।’
প্রভাত পূজার মা-বাবাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল,
‘ পুলিশ কি করবে জানিনা, তবে প্রভাত চৌধুরী খুঁজে বের করবে সেই অপরাধীদের। নিজের বাবা জড়িত থাকলেও তাকে চার টুকরো করে ফে’ ল’ বো আমি। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি।’
রাজন বলল, ‘ আমি চেষ্টা করছি। ‘

প্রভাত হুংকার ছেড়ে বলল, ‘ আর কত মানুষের প্রাণ গেলে চেষ্টা সফল হবে।’
‘ ভাই এখন পর্যন্ত আমি যতটুকু পর্যবেক্ষণ করে পেয়েছি তার সবটাই জেলেপাড়া আর চৌধুরী বাড়ি ঘিরেই রহস্য রয়েছে। এই দুইজায়গার সংযোগ মিললেই আমি ধরে ফেলতে পারব।’
এরই মাঝে পুষ্প এসে রাজন’কে বলল,

‘ কৃষ্ণ কোথায়? এখনো তো কৃষ্ণ এলোনা।’
পুলিশের গাড়ি পাঠিয়েছি কৃষ্ণকে আনতে। ও পাশের ইউনিয়ন এ গিয়েছে পূজার খোঁজে।’
‘ কৃষ্ণ কি জানে?’
‘শুধু বলেছি পূজাকে পাওয়া গিয়েছে।’

‘ ও কি বললো।’
‘ খুশিতে কেমন যেন পা-গ-ল হয়ে ফোনটা কেটে দিলো। এতো খুশি আমি কৃষ্ণকে কোনদিন হতে দেখিনি।’
পুষ্প কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলল,
‘ কৃষ্ণ মরে যাবে৷ এই চিতায় দু’জনকেই না হয় তুলে দিয়েন।’
পুলিশের গাড়িতে কৃষ্ণ আসছে। বারবার পুলিশদের কাছে জিজ্ঞেস করছে, ‘ পূজাকে কোথায় পাওয়া গিয়েছে? ও কোথায় ছিলো? ও কি ইচ্ছা করে লুকিয়ে ছিলো, নাকি কেউ লুকিয়ে রেখেছিলো। ও কি শুকিয়ে গিয়েছে? এ কদিনে কিছু খেয়েছে।:

পুলিশরা ক’জন অদ্ভুত চোখে কৃষ্ণের দিকে তাকিয়ে আছে। কেউ কাউকে এতটাও ভালবাসতে পারে। বাড়িতে পৌঁছে কি করবে এই ছেলেটা। আধাঘন্টাপর কৃষ্ণ বাড়িতে পৌঁছালো। পায়ে কাদা,স্যান্ডেল নেই, শার্টের বোতাম সবগুলা খোলা,এলোমেলো চুল। কেমন পা-গ-লে-র মতো দেখাচ্ছে। জেলে পাড়ায় প্রচুর মানুষের ভীড়। এত ভীড় কেন কৃষ্ণ বুঝে উঠতে পারলোনা। তার কেমন যেন হাত পা থর থর করে কাঁপছে। ভিড় ঠেলে সামনে এগিয়ে যেতেই দেখলো প্রভাত,রাজন,পূর্ণতা,পুষ্প, পূজার মা-বাবা সবাই কাঁদছে। কৃষ্ণের বুকটা কেঁপে উঠল।

তার সামনেই একটা সাদা কাপড়ে লাশ ঢাকা আছে। সবাই কৃষ্ণের জন্য অপেক্ষা করছিলো। কৃষ্ণের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে। কৃষ্ণকে দেখে সবার কান্নার মাত্রা ও বেড়ে গেলো। কৃষ্ণ ছুটে গিয়ে সাদা কাপড়টা সরালো। পূজার ক্ষত-বিক্ষত প্রাণহীন মুখটা দেখে কৃষ্ণের চারদিক ঘুরতে থাকলো। মাথায় চক্কর দিয়ে উঠলো। সে পূজার নাম ধরে জোরে চিৎকার দিলো। কে সামলাবে কৃষ্ণকে। পূজাকে জড়িয়ে ধরে উন্মাদের মত করতে থাকলো। পা’গ ‘লের মত বলতে থাকল,

‘ আমি একদম মরে যাবো, এক মুহুর্ত ও তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। আমি পা’গ’ল হয়ে যাবো পূজা,আমি মরে যাবো। পূজা আমার ফুল, কেন এত বড় শাস্তি দিলে। আমার মনের মাঝে জ্বলে, পুড়ে যাচ্ছে পূজা। তুমি জানোনা তোমাকে আমি কত ভালবাসি। আমার চেয়েও বেশী আমি তোমাকে ভালবাসি। অনেক ভালবাসি। তুমি মরোনি, ওইটা তুমিনা। আমার পূজার মরেনি। আমার পূজা আমার জা’ন।’

রাজন কৃষ্ণের কাধে হাত রাখল। কৃষ্ণ উন্মাদের মত রাজনকে বলল,
‘ দাদা, দেখেন ওরে আমি আঙুল কেটে সিঁদূর দিছিলাম। ও সিঁদূর দিতো মাথায়। ওরে উঠতে বলেন। আমারে ভালবাসি বলতে বলেন,নইলে বুক ফেঁটে চৌচির হয়ে যাবে আমার। পূজার মত কেউ আমারে ভালবাসেনা দাদা। দাদা আপনি আমার পূজারে আমার কাছে একবার ফিরায় দেন। আমি আমার পুজারে আমার বুকের মাঝে লুকায় রাখব। ‘

‘ ও আর নেই কৃষ্ণ। ‘
‘ ও নেই মানে? ও আছে? ওরে উঠতে বলেন। না’হলে আমি এখনি গলায় ফাঁস দিবো, নইলে জলন্ত আ’গু’নে লাফ দিবো দাদা। ‘

কৃষ্ণের আহাজারি দেখে সবাই কাঁদছে। কৃষ্ণ আবার পূজাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
‘ তুমি ওঠো পূজা, তোমার পায়ে ধরি, তুমি একবার ওঠো। আমার বুকের মাঝে পুড়ে যাচ্ছে পূজা। আমি তোমার সাথে সাতপাক ঘুরতে চাই, সংসার করতে চাই, তোমাকে আরোও ভালবাসতে চাই।আমার রুহ অবধি পুড়ে যাচ্ছে তুমি ছাড়া। তুমি কি আমার রুহের হায় শুনতে পাচ্ছোনা।’

কৃষ্ণের পা’গ’লামি বেড়েই যাচ্ছে। ঘন্টা দু’য়েক এর মাঝেই পূজাকে শশ্মানে নেওয়া হলো। শশ্মানে চিতায় দিয়ে আগুন দেওয়া হলো। দাউ দাউ আ’গু’নে পুড়ছে পূজার শরীর। সেই আ’গু’ন দেখে কৃষ্ণ বারবার বলছে,
‘ আমার পূজার শরীর পুড়ে যাচ্ছে, ওর যন্ত্রণা হচ্ছে। ও একা কেন পুড়বে? জিন্দা থেকে ওই আ-গু’নের চেয়ে বেশী দগ্ধ হচ্ছি আমি বেশী। আমাকে পূজার কাছে যেতে দিন।’

কৃষ্ণ বারবার আগুনে ঝাপ দিতে যাচ্ছে। সবাই মিলে কৃষ্ণকে ধরে রেখেছে। কৃষ্ণ আবারও কাঁদতে কাঁদতে বলতে,
‘ আমাদের না হওয়া সংসারের গল্পটা কেউ জানলোনা পূজা, এইপারে না পেলাম তোমাকে, না পারলাম তোমার হাসিখুশি মুখটা দেখে জীবন কাটাতে। ওইপারে কিছু চাওয়ার থাকলে আমি বারেবার তোমাকে চাইবো। না হওয়া সংসারটা চাইবো। আমাদের ভালবাসায় কোনো ভুল ছিলোনা, মিথ্যা ছিলোনা, তাও আমাদের মিলন কেন হলোনা? এই অভিশপ্ত জীবনটা আমি কীভাবে পাড়ি দিবো। কেন এত ভালবেসে একা করে চলে গেলে পূজা। তোমাকে হারানোর যন্ত্রণা আমি সহ্য করতে পারছিনা। এই কালো ছেলেকে কেউ আর বলবে না ‘ এত সুন্দর বুঝি কোনো ছেলে হয় কৃষ্ণ। তুমি এত সুন্দর বলেই ভালবাসি।’

রাজন বলল,
‘ কৃষ্ণ এমন করলে তুই বাঁচবিনা।’
‘ পুজা মরে গেছে, আমি কেন বাঁচব? আমার পূজাকে বাঁচাতে পারেন নি, আবার আমাকে বাঁচিয়ে রেখে কেন মৃত্যুর স্বাদ ক্ষনে ক্ষনে দিতে চাচ্ছেন। আপনারা কেউ বুঝবেন না আমার পূজার কত কষ্ট হচ্ছে। ও অনেক কষ্ট হচ্ছে। ওতো ম’র’তে চায়নি। ওকে জোর করে মা’রা হয়েছে। ও কত কষ্ট পেয়েছিলো তখন দাদা। বাঁচার জন্য ছটফট করেছিলো। আমি কেন বুঝলাম না ও বিপদে। কেন বাঁচাতে পারলাম না। ওর কষ্টের ভাগ আমি এখন কীভাবে নিবো। আমাকেও মা’রে’ন আপনারা। মা’রে’ন।,’

কৃষ্ণ পা-গ-লের মত বকতে বকতে সেন্সলেস হয়ে গেলো। দ্রুত ডাক্তারের কাছে নেওয়া হয়। ডাক্তার জানায় আকস্মিক আঘাত পাওয়ায় ব্রেন স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে। সেন্স না ফিরলে কিছু বলা যাচ্ছেনা।

অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ৪২

( এটা কল্পনায় সাজানো গল্প। সিনেমাটিক গল্প। বাস্তবের সাথে কিছুই মেলাবেন না। কোথাও কোনো মিল রাখা হয়নি বাস্তবের সাথে।)

অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ৪৪

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here