আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পরিচ্ছেদ ২ পর্ব ২৩
Raiha Zubair Ripte
খাঁন বাড়িতে উৎসব লেগেছে। হারানো নাতনি ফিরেছে বলে কথা। তাদের আজ সুখের দিন। তুষার হাতে ফোন নিয়ে তন্ময় কে ফোন করে। তন্ময় ঘুমে বিভোর ছিলো। ফোনের আওয়াজে তার ঘুম ভাঙে। আড়মোড়া ভেঙে পাশে তাকিয়ে দেখে দোলন ঘুমাচ্ছে। তন্ময় আস্তে করে শোয়া থেকে উঠে বেলকনি তে গিয়ে ফোন রিসিভ করে।
-“ হ্যাঁ বাবা বলো।
-“ বাসায় আসবি না আজ? তোর মা কিন্তু সকাল থেকো তোদের দুজনের পছন্দের খাবার রান্না করছে। মায়ের দিক টা এবার বোঝ।
-“ বিকেলে আসবো দোলন কে নিয়ে টেনশন করো না।
-“ সত্যি?
-“ হ্যাঁ।
-“ আচ্ছা সাবধানে আসিস রাখি।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তুষার ফোন কে’টে দেয়। তন্ময় রুমে ঢুকে দোলন কে ডাকে। দোলন দু’বার ডাক দিতেই দোলন আড়মোড়া ভেঙে শোয়া থেকে উঠে। সামনে তন্ময় কে দেখে বিস্ময় নিয়ে বলে-
-“ আপনি কখন এসেছেন?
-“ রাতে।
-“ এখন কি সকাল?
কথাটা বলে আশেপাশে তাকালো। সকাল হয়ে গেছে! সে তো সোফায় বসে তন্ময়ের ফেরার অপেক্ষা করছিলো। কখন যে ঘুমিয়ে গেলো টেরই পেলো না।
-“ আশ্চর্য আপনি আমাকে ডাকেন নি কেনো রাতে?
-“ তোমার ঘুম নষ্ট হতো সেজন্য।
-“ খেয়েছিলেন রাতে?
-“ নাহ্।
দোলন খাট থেকে নামলো। দিক বেদিক ভুলে সোজা রুম থেকে বেরিয়ে বেসিন থেকে মুখ ধুয়ে খাবার টেবিলে গেলো। সব খাবার আগের মতোই ঢাকা দেওয়া আছে। দোলন সব খাবার পূনরায় গরম করলো। তন্ময় ততক্ষণে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসে। রুম থেকে বের হয়ে দেখে দোলন খাবার টেবিলে খাবার বাড়ছে।
-“ এতো তারাহুরো কেনো করছো? আমি ক্ষুধার্ত নই।
-“ সে কি বলছেন। রাতে তো খান নি বললেন। এখন তো ক্ষিধে লাগার কথা।
-“ বাট আমার লাগে নি। আচ্ছা এখান টায় বসো তো।
তন্ময় চেয়ার টেনে বসে পাশের চেয়ারে বসতে বলল দোলন কে। দোলন বসলো।
-“ বিকেলো তৈরি হয়ো থাকবে কেমন?
-“ কেনো?
-“ ও বাড়ি যাবো।
দোলনের মুখে হাসি ফুটলো।
-“ সত্যি?
-“ হ্যাঁ।
-“ আবার কি চলে আসবো আমরা?
-“ না।
-“ সত্যি!
-“ হ্যাঁ। এখন আসছি কোর্টে যেতে হবে।
-“ কেনো?
-“ ফাহাদ, ফুপি আর শরাফত উল্লাহ কে কোর্টে তোলা হবে।
দোলন নিশ্চুপ হয়ে গেলো। মানুষ পাশে, সাথে থেকে কতবড় ক্ষতি করে তার ধারনা পেলো দোলন অধরা কে দেখে। মানুষ আজকাল ট্রাস্ট করবে টা কাকে তাহলে?
তন্ময় হাল্কা পাতলা খাওয়া দাওয়া করে বেরিয়ে গেলো।
সায়ানের সামনে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফারাহ্। সায়ানের হাতে ফাহাদের কল রেকর্ড।
-“ ফাহাদের সাথে আপনার কিসের সম্পর্ক ফারাহ্? আপনার থেকে বারবার কেনো ফাহাদের কাছে ফোন গিয়েছে। আপনি ফাহাদ কে কেনো আমাদের সব ইনফরমেশন তাকে দিতেন। হোয়াই?
সায়ান চেঁচিয়ে উঠলো। ফারাহ্ কেঁপে উঠলো। পাশেই রাহাত ঘৃণার দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। ফারাহ্ কে এখনও চুপ থাকতে দেখে সাব্বির বলে উঠে-
-“ কি হলো ফারাহ্ চুপ করে আছো কেনো? এন্সার দাও। কেনো তুমি ফাহাদ কে হেল্প করছিলে? তুমি কি জানো না এটা একটা ক্রাইম। তোমার চাকরি চলে যাবে?
ফারাহ্ লম্বা একটা শ্বাস ফেললো।
-“ ফাহাদ আমার ভাই। আপন ভাই। আমি তার বোন।
ফারাহ্ র কথা শুনে চমকে উঠলো সকলে। সায়ান ভ্রু কুঁচকে বলল-
-“ ফারহান আহমেদ আপনার বাবা?
-“ হ্যাঁ।
-“ আপনার ভাই এখন কোথায়?
-“ সেটা জানি না।
-“ ভাই কে বাঁচাতে চাইছেন?
-“ অবশ্যই,, তবে সত্যি ই জানি না সে এখন কোথায়। জানলেও বলতাম না।
-“ আপনি জানেন না আপনার ভাই অপরাধী? সিআইডি হয়ে কি করে পারলেন তাকে সাহায্য করতে?
-“ কারন সে আমার ভাই সেজন্য সাহায্য করেছি। আর সে আপনাদের চোখে অপরাধী হলেও সে আমার ভাই। আমার চোখে সব চেয়ে সেরা বেস্ট ভাই। আমি চাই না আমার ভাই আর খারাপ কাজ করুক। কিন্তু এটাও চাই না সে ধরা পরুক।
-“ আমার মনে হয় না আপনার আর এই চাকরি থাকবে।
-“ কেয়ার করছি না আর।
-“ ওকে। ইউ ক্যান গো নাও।
ফারাহ্ চলে গেলো।
রাফি ফিরেছে আজ খাঁন বাড়িতে। তুলিই তৃষা খবর টা পাওয়ার সাথে সাথে রওনা হয়েছে বিডির উদ্দেশ্যে। এই তো কিছুক্ষণ আগেই এসেছে, এখন ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছে টিভির সামনে।
আজ ফারহান আহমেদ অধরা এবং শরাফত উল্লাহ কে কোর্টে তোলা হয়েছে। টিভি তে দেখানো হচ্ছে তাদের তন্ময় সায়ান রাহাত নিয়ে যাচ্ছে। তার সাথেই রয়েছে হালিম সরকার ও আকবর। তুলি কেবল ই পানির গ্লাস টা হাতে নিয়ে সোফায় বসতেই চোখ যায় কপালে। আর ভাইয়ের পাশে এই অভদ্র লোক টা কে কেনো দেখছে। এই তো সেই লোক যার সাথে সেদিন মার্কেটে ধাক্কা লেগেছিল।
-“ ভাইয়ের পাশে এই অভদ্র লোক কেনো?
তুষার ভ্রু কুঁচকালো।
-“ তুই চিনিস এই ফাহাদ কে?
-“ উনার নাম ফাহাদ!
-“ হু।
-“ কয়েক দিন আগে মার্কেটে এই লোকের সাথে ধাক্কা খেয়েছি। বেয়াদব লোক সরি টুকু বলে নি।
রাফি তুলির দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ ব্যাথা পেয়েছিলি খুব?
-“ না কাকাই।
-“ এই ফাহাদ যেখানে কাজ করতো ব্রো সেই অফিসের মালিকের সাথে আমার এবারের প্রজেক্ট।
তুষার চমকালো।
-“ কিহ! আগে তো বলিস নি।
-“ সাব্বিরের সাথে দেখা হয়েছিল মালদ্বীপ। ফারহানের ছেলে ফাহাদ আরেক ধুরন্ধর। আমাকে বোকা বানিয়ে চলে এসেছে বিডি।
-“ তুই গাধা গাধাই রয়ে গেলি।
-“ আমি কি জানতাম নাকি।
তন্ময়, সায়ান,লিখন,সাব্বির,রাহাত,লারা। অধরা, শরাফত উল্লাহ আর ফারহান, হালিম সরকার, আকবর কে নিয়ে যাচ্ছে কোর্টে। চারিপাশে সাংবাদিক রা ছুটে ছুটে আসছে। কয়েক জন পুলিশ তাদের আটকে রেখেছে। তন্ময় পুলিশ দের চোখ কান খোলা রাখতে বলেছে। কারন ফাহাদ এখন ধরা পড়ে নি। হালিম সরকার,আকবর তারা তাদের সকল দোষ স্বীকার করেছে। এখন আদালত থেকে তাদের শাস্তির মেয়াদ দেওয়া হবে।
খাঁন বাড়ি থেকে তুষার আর রাতুল,রাফি এসেছে কোর্টে। জজ আসতেই শুরু হলো বিচার।
হালিম সরকারের পক্ষে লড়ার জন্য তার ছেলে হৃদয় উকিল জোগার করেছে কিন্তু তাতেও হালিম সরকার কে বাঁচানো গেলো না। নারী পা’চার করা,নিজের স্ত্রী কে পা’চার করা,তুষারের মেয়ে কে কিডন্যাপ করা,রাতুল কে হত্যা করা,সাথে তুষার কে মা’রার প্ল্যান করা। সব প্রমান হওয়ায় সকল অপরাধী কে এক এক মেয়াদি তে শাস্তি প্রধান করা হলো। অধরা কে ১২ বছরের,হালিম সরকার কে ৬ বছরের,আকবর কে ৩ বছরের,শরাফত কে আড়াই বছরের,আর ফারহান কে ২০ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে।
টিভিতে যারা নিউজ চ্যানেলে এদের দেখছে সবাই ছি ছি করছে। নিজের বউ কে কি করে একটা মানুষ পাচার করতে পারে! কতটা নিকৃষ্ট এই লোক! আবার কেউ বলছে,,একটা মেয়ে কি করে এমন শয়তান হতে পারে? ভালোবাসার অভিনয় করে তাকেই মা’রার প্ল্যান করে!
রাতুল নির্নিমেষ চোখে অধরার সব স্বীকারোক্তি শুনলো। কেমন তাচ্ছিল্য হলো ভাগ্য কে নিয়ে। মেয়েটা র কি একটু ও মায়া জন্মায় নি তার উপর কখনও? মেয়েটার কি একটু ও অপরাধবোধ হচ্ছে না? অধরা কে মেয়ে কনস্টেবল নিয়ে গেলো। আর বাকিদের পুরুষ কনস্টেবল।
রাতুল পলকহীন চেয়ে অধরার যাওয়া দেখলো। তুষার রাতুলের কাঁধে হাত রাখলো। রাতুল ইশারায় বুঝালো সে ঠিক আছে।
তাদের সবাই কে নিয়ে কারাগারে রাখা হলো। তুষার রা কোর্টে থেকে বের হতেই রাতুল দাঁড়িয়ে যায়। তুষার দের এগোতে বলে চলে যায় কোথাও একটা।
তুষার আর রাফি গাড়িতে বসে অপেক্ষা করে। রাতুল সোজা পুলিশদের সেই জিপের কাছে চলে যায়,অধরা একা বসে আছে সাথে সেই মহিলা কনস্টেবল । অধরা ঘাড় ফিরিয়ে তাকাতেই দেখে রাতুল এগিয়ে আসছে। এখন কেমন একটা লাগছে রাতুলের সামনে থাকতে। সত্যি ই সে একটু ও ভালোবাসে নি কোনোদিন রাতুল কে। ভালোবাসলে মারতে পারতো না কখনও। রাতুল এগিয়ে আসলো।
-“ কিছু বলবেন?
রাতুল মাথা ঝাঁকাল। রাতুল কিছু বলতে চায়। কিন্তু গলা দিয়ে বের হতে চাইছে না। কারন সে এখন যেটা বলবে তার উত্তর তার নিজেরই জানা তবুও জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে। কাঁপা গলায়ই বলল-
-“ কখনও কি একটুর জন্য ও আমার প্রতি তোমার অনুভূতি জন্মায় নি অধরা?
অধরার কি যেনো একটা হলো। কথাটার মাঝে কিছু একটা ছিলো। সে সত্যি ভালোবাসে নি কিন্তু মুখ দিয়ে বলতে কেনো পারছে না? পরনের কাপড় খামচে ধরলো। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলল-
-“ না।
রাতুল স্মিত হাসলো। আহ জীবন বড়ই অদ্ভুত।
-“ ভালো থাকবেন রাতুল যেহেতু দ্বিতীয় জীবন ফিরে পেয়েছেন। দ্বিতীয় বার সুযোগ দিবেন জীবন কে। দ্বিতীয় কোনো নারীকে সব টুকু দিয়ে ভালোবাসবেন।
-“ সব টুকু ভালোবাসা এক রমণী কে দিয়ে রেখেছিলাম,,জানো তো?
-“ কিন্তু সেই রমণী আপনার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা রাখে নি। তাই এবার আর জীবনসঙ্গী চুজ করতে প্রথম বারের মতো ভুল করবেন না।
-“ কাশ সে বুঝতো।
-“ ভালো থাকবেন।
গাড়ি চলে গেলো। রাতুল চেয়ে রইলো যতক্ষণ দেখা যায় সেই গাড়ি।
পুলিশ কনস্টেবল গুলো ফারহান দের নিয়ে আসছে। সাংবাদিক রা জেঁকে ধরেছে। হালিম সরকার লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছে না। অনেক লোকের সমাগম দেখা দিলো কোর্টের সামনে টায়।
এরমধ্যে হঠাৎ পাশ থেকে এক লোক হালিম সরকারের দিকে ইট ছুঁড়ে দিলো। সেই লেকের দেখাদেখি সকলে ইট পাথর ছুঁড়তে লাগলো। বেঁধে গেলো এক ঝামেলা। তন্ময়, সায়ান,রাহাত রা কেবলই বের হয় কোর্ট থেকে। আর বের হতেই এমন ঝামেলা দেখে দ্রুত এগিয়ে আসে। পাশ থেকে কালো চাদরে ঢাকা এক লোক তার মুখ ঢাকা। চাদরের নিচ থেকে পিস্তল বের করে তাক করে।
লারা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতেই সেটা খেয়াল করে। তন্ময় কে বলার জন্য মুখ খুলতেই পিস্তল থেকে বেরিয়ে আসে বুলেট। সোজা ফারহান আহমেদের বুকে গিয়ে বিঁধে। তন্ময় থমকে যায়। গুলির আওয়াজে সকলে ভয় পেয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। ছোটাছুটির মধ্যেই এক লোকের সাথে ধাক্কা লেগে মুখের সামনে থেকে চাদর সরে যায়। লারা থমকে যায়। কাঁপা কাঁপা গলায় উচ্চারণ করে তামিম ফারুকী!
ফাহাদ চাদর সরে যেতেই আবার সবার অগোচরে চাদর দিয়ে ডেকে নেয় মুখ। আবার ফের পিস্তল তাক করতেই পাশ থেকে তন্ময় চাদরে ঢাকা ব্যাক্তির হাতে পিস্তল দেখে নিজের পিস্তল টা বের করে শুট করে। লারা দৌড়ে আসে তন্ময় কে বাঁধা দেওয়ার জন্য কিন্তু পারলো না। গুলি গিয়ে ফাহাদের বুকে বিঁধে। ফাহাদের হাত থেকে পিস্তল নিচে পড়ে যায়। মুখ থেকে চাদর সরে যেতেই তন্ময় দেখে এটা ফাহাদ।
দৌড়ে এগিয়ে আসে লারা। চোখ দিয়ে তার জল গড়িয়ে পড়ছে। ফাহাদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুখে তার লেগে আছে হাসি।
অন্য দিকে ফারহান আহমেদ কে পুলিশ টিম হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছে।
লারা ফাহাদের কাছে আসলো। মাটিতে বসে ফাহাদের মাথা কোলে নিলো।
-“ তামিম ফারুকী এটা কি করলেন আপনি। তন্ময় তুই কি করলি এটা। ধর না ওরে হসপিটালে নিয়ে চল তন্ময়।
চিৎকার করে ডাকলো তন্ময় কে। তন্ময় এগিয়ে আসলো। লারা কাঁদছে, ফাহাদ তাকিয়ে আছে লারার মুখের দিকে। মেয়েটা কাঁদছে! কেনো কাঁদছে? তার মতো এমন অপরাধীর জন্য কেনো কাঁদছে? র’ক্তাক্ত বুক টা চেপে ধরে ফাহাদ। ব্যাথায় চোখ মুখ কুঁচকে আসছে।
-“ কাঁদছেন কেনো লারা? কাঁদবেন না। কান্না মানাচ্ছে না আপনার চোখে।
লারা তন্ময়ের দিকে তাকালো। তন্ময় কে ঠাই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রেগে বলল-
-“ গাধার মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেনো এম্বুলেন্স ডাক তাড়াতাড়ি। আর তা না হলে ওরে ধরে গাড়িতে উঠা।
তন্ময় আর সায়ান ফাহাদ কে ধরতে নিলে ফাহাদ মানা করে। লারা অসহায় চোখে তাকায়।
-“ এমন করছেন কেনো। ধরতে দিন না ওদের একটু।
-” উঁহু আমার হাতে সময় নেই লারা। আমি আজ ভীষণ খুশি জানেন কেনো?
-“ নিজের বাবা কে কেনো মারতে গেলেন?
-“ বিকজ আই হেট হিম।
তন্ময় ভ্রু কুঁচকালো।
-“ হেট করেন কেনো? তার সাথে তো কাজ করতেন।
ফাহাদ হাসলো। তার হাতে যে সময় নেই। বলতে পারবে না সব কথা। পকেট থেকে একটা ছোট্ট ডায়েরি বের করলো। সেটা তন্ময়ের হাতে দিলো।
-“ সব প্রশ্নের জবাব এটায় আছে।
এদিকে ফারাহ্ টিভিতে গণ্ডগোল দেখে তখনই ছুট লাগায়। কিন্তু এসে নিজের ভাইকে এমন মাটিতে লুটিয়ে থাকতে দেখে দৌড়ে আসে। ভাই কে জড়িয়ে ধরে ভয়ার্ত কন্ঠে বলে-
-“ ভাই এ অবস্থা কেনো তোমার? আর তোমরা হা করে কি দেখছো? আমার ভাই কে তুলো।হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা কেনো করছো না?
তন্ময় বোনের হাত ধরলো।
-“ শান্ত হ। আমিই মানা করছি। একটা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন চেয়েছিলি তাই না? তারই ব্যাবস্থা করলাম। এবার নিজের মতো করে বাঁচবি। ভুলে যাস না এই ভাই কে।
লারা বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। ফারাহ্ র দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ ফারাহ্ ধরো তো তোমার ভাই কে।
ফাহাদ লারার হাত টেনে ধরলো।
-“ কাছে এসে বসুন তো লারা। শেষবার একটু মন ভরে দেখি। আপনাকে ভালেবাসি কি না জানি না তবে কিছু একটা ফিল করেছি। সুন্দর ছেলে দেখে বিয়ে করে নিবেন কেমন? আর আর শুনুন আমাকে ভুলে যাবেন না ওকে? মনে রাখবেন। আর একটু জড়িয়ে ধরবেন? পরেরবার জন্ম নিলে যেনো আবার আপনার সাথে দেখা হয় আমার লারা।
লারা জড়িয়ে ধরলো ফাহাদ কে। ফাহাদ চোখ বুঝলো। এতো শান্তি লাগছে কেনো ফাহাদের? মৃত্যু যন্ত্রণা অতি নিকটে বলে?
আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পরিচ্ছেদ ২ পর্ব ২২
ফাহাদ শরীরের পুরো ভর ছেড়ে দিলো লারার উপর। লারার ভয়ে বুক কেঁপে উঠলো। ফাহাদ কে ছেড়ে ফাহাদের মুখের দিকে তাকালো। ফরহাদ শ্বাস ফেলছে না। ফারাহ্ আচমকা ভাইকে এমন নিশ্চুপ হয়ে থাকতে দেখে শরীরে ধাক্কা দিয়ে ডেকে উঠলো। নাহ্ ফাহাদ রেসপন্স করছে না। লারা আর ফারাহ্ ফাহাদ কে ধরে চিৎকার করে কান্না করতে লাগলো।