কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৫

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৫
নুজাইফা নূন

-” কবুল বলো স্রোত। তোমাকে শেষ বারের মতো অনুরোধ করছি।প্লিজ কবুল বলো স্রোত।”
-” আমি আপনাকে বলছি তো আমি বিবাহিত।আমি বিবাহিত জানার পরেও আপনি আমাকে বিয়ের জন্য জোড় করতে পারেন না স্যার।এটা অন্যায়।”

-” উঁহু! আবারো সেই একই কথা।আমি বিবাহিত, আমি বিবাহিত কথাটা শুনতে ভালো লাগছে না স্রোত।আমি ১০০% শিওর তুমি শুধু নামেই বিবাহিত ।আবদ্ধ তোমাকে তার স্ত্রী হিসেবে মেনে নেয় নি।আর কখনো মানাবেও না। আর পাঁচ টা দম্পতির মতো তোমাদের মধ্যে কোনো প্রকার স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে নি।আবদ্ধ তোমাকে ছুঁয়ে ও দেখে নি।ডিড আই সে ইট রাইট ?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-” আবদ্ধ আমার স্বামী।সে আমাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিক বা না নিক , ছুঁয়ে দেখুক বা না দেখুক।সেটা একান্তই আমাদের পার্সোনাল ব্যাপার। আমাদের পার্সোনাল ব্যাপার নিয়ে আপনার মাথা না ঘামালেও চলবে স্যার।”
-“প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড।আমি তোমার মুখে আর একবার ও আবদ্ধের কথা শুনতে চাই না। আবদ্ধের মধ্যে কি এমন আছে? যা আমার মধ্যে নেই ?

কেনো আবদ্ধ কে ভুলতে পারছো না তুমি ? আবদ্ধ তো তোমাকে ভালোবেসে না।আর কখনো ও বাসবেও না। বিশ্বাস করো স্রোত আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ।আর ভালোবাসি বলেই তোমাকে গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচিয়ে এই সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে এসেছি। আমরা এক সাথে অনেক টা সময় কাটিয়েছি‌। তবু ও তোমাকে ছুঁয়ে দেখি নি আমি।প্লিজ স্রোত তুমি আমার আর ধৈর্য্যর পরীক্ষা নিয়ো না।আবদ্ধ কে ভুলে যাও। এখন তোমার মুখে শুধু একটাই নাম থাকবে।সেটা হলো সৈকত।অনলি সৈকত।”

-” আপনি আমাকে গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। এজন্য আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ ।কিন্তু আপনি যেটা চাচ্ছেন সেটা কখনো সম্ভব নয়।”
-” তুমি চাইলেই সম্ভব স্রোত।”
-” আমি সত্যিই চাই না।আমি আবদ্ধ স্যারের স্ত্রী।আর আমি জানি আবদ্ধ স্যার আমাকে পাগলের মতো খুঁজে বেড়াচ্ছে।তিনি ঠিক আমাকে এখান‌ থেকে নিয়ে যাবে।”

-“আমরা আবদ্ধের থেকে অনেক দূরে চলে এসেছি ডার্লিং।আবদ্ধ তোমার নাগাল ই পাবে না। তাছাড়া তুমি মিসিং হবার পরেও তোমার মনে হয় আবদ্ধ তোমাকে গ্ৰহন করবে? করবে না।আবদ্ধ তোমাকে ছুড়ে ফেলে দিবে।তাই তোমার জন্য এটাই ভালো হয় আবদ্ধের কথা ভুলে গিয়ে সৈকত নাম টা নিজের হৃদয়ে গেঁথে নেওয়া। কারণ আর মাত্র কয়েক মিনিট পর থেকে তুমি আমার বিবাহিত স্ত্রী হয়ে যাবে।আমি আবদ্ধের মতো এতোটা ভালো নয় যে বিয়ের পরেও ব‌উ কে ছুঁয়ে দেখবো না।”

-” ছিঃ ছিঃ! আমি ভাবতেও পারছি না আপনি এতোটা নিচু মনের মানুষ।আপনাকে আমি শিক্ষক হিসেবে সম্মান করতাম। কিন্তু আপনি সম্মান পাবার যোগ্য‌ নন।”
-“এতো দিন শিক্ষক হিসেবে সম্মান করেছো‌।এখন স্বামী হিসেবে ভালোবাসবে।”
-” আমি মরে গেলেও আপনার মতো জা’নো’য়া’র কে বিয়ে করবো না।আর ভালোবাসা তো অনেক দূরের কথা।আপনি একটা অমানুষ। বিশ্বাসঘাতক।আপনি আবদ্ধ স্যারের সুযোগ নিয়েছেন।আপনি তার বন্ধু হবার যোগ্যতা রাখেন না।স্যার যদি আপনার ব্যাপারে জানতে পারে ।আপনাকে আস্ত রাখবে না।আপনাকে কে’টে রাস্তার কুকুর দিয়ে খাওয়াবে।”

-” কথাটা বলা মাত্রই সৈকত স্রোতের চুলের মুঠি ধরে বললো, তোকে ভালোবাসি মানে এই নয় যে তুই যা নয় তাই বলে যাবি।তোকে অনেক ভাবে বুঝিয়েছি। কিন্তু তুই বুঝতে চাইছিস না।আমি যদি ঐ গুন্ডাদের হাত থেকে তোকে না বাঁচাতাম ।তাহলে এতোক্ষণে আবদ্ধ আবদ্ধ করার জন্য তুই এই পৃথিবীতে থাকতিস না।তোর জন্য প্রকৃতি ম্যাম কে খু’ন করতেও হাত কাঁপে নি আমার।আর তুই কি আমাকে জা’নো’য়া’র বলছিস‌? জানোয়ার যখন বলছিস তখন জানোয়ারের মতোই কাজ করবো। তুই বিয়ে করবি না তো? ঠিক আছে দরকার নেই বিয়ের । বিয়ে ছাড়াই বাসর হবে। সোজা আঙ্গুলে যখন ঘি না উঠে তখন আঙ্গুল বাঁকা করতে হয়।”

-” সৈকতের কথা শুনে কাজী সাহেব বললেন,
আপনি এটা ঠিক করছেন না স্যার।একে তো আমাকে এইখানে জোর করে তুলে নিয়ে এসেছেন। তারপর আমার এই মেয়ের সাথে অন্যায় করেছেন।বিয়ে কোনো ছেলে খেলা নয়।বিয়ে একটা পবিত্র বন্ধন।আমি বিয়ের মতো সেই পবিত্র বন্ধন নিয়ে কখনোই ছেলেখেলা করতে পারি না।আমি যদি জানতাম একটা বিবাহিত মেয়েকে জোর করে তুলে এনে আপনি তাকে বিয়ে করতে চাইছেন ।তাহলে এখানে না এসে সোজা পুলিশ স্টেশনে চলে যেতাম।”

-” স্রোত যেহেতু বিয়ে করবে না।তাই এখন আর তোকে আমার কোন প্রয়োজন নেই বলে সৈকত কাজী সাহেবের হাতে দশ হাজার টাকা তুলে দিয়ে বললো,
-” চুপচাপ বাসায় চলে যা।তবে হ্যাঁ ।ভুলেও মুখ খুলবি না।এইখানে আসার আগে আমি একটা খু’ন করে এসেছি। জানিস তো একটা খু’নে’র ও যে শাস্তি,দশ টা খু’নে’র ও সেই শাস্তি।মুখ খুললে তুই ও খালাস হয়ে যাবি।”

-” মৃত্যুর ভয় আমি পাই না। মেয়েটা আমার মেয়ের বয়সী।তাকে আমি এই জাহান্নামের আগুনে ফেলে রেখে যেতে পারি না।আমি তাকে সাথে করে নিয়ে তবেই ফিরবো।আর যাতে উপযুক্ত শাস্তি পান, তার ও ব্যবস্থা করবো।”

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৪

-” আগে নিজে বাঁচুন। তারপর না হয় অন্যের কথা ভাবুন বলে সৈকত কাজী সাহেবের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে। মূহুর্তের মধ্যে কাজী সাহেব সেন্সলেস করে নিচে পড়ে যায়।কাজী সাহেবের এ অবস্থা দেখে স্রোতের ভয়ে বুক কেঁপে উঠে। শীতের মধ্যে কপাল বেয়ে ঘাম টপ টপ করে পড়তে থাকে। স্রোত কি করবে ভেবে না পেয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই সৈকত ল্যাং মেরে স্রোত কে নিচে ফেলে দিয়ে শার্টের বোতাম খুলতে শুরু করে।।”

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৬

1 COMMENT

Comments are closed.