কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৮

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৮
নুজাইফা নূন

-“আপনি দরজা বন্ধ করছেন কেন স্যার ?”
-” তুমি এতো ভালো গান গেয়েছো।তোমাকে তো কোনো না কোন গিফট দিতে হবে তাই না?”
-” গিফট দিতে দরজা বন্ধ করতে হবে কেন?আমার কোনো গিফট লাগবে না‌ স্যার।আপনি‌ আমার থেকে ফোন কেড়ে নিয়েছেন। ফোন টা দিয়ে দিন। তাহলেই আমার চলবে।”

-” সেটা কি করে হয় বলো? আমাকে এতো ভালো গান শুনালে। সামান্য একটা গিফট তোমার পাপ্য।
এটা যেনো তেনো গিফট নয়।স্পেশাল গিফট।আর স্পেশাল গিফট সবার সামনে দেওয়া উচিত নয় । এজন্যই দরজা বন্ধ করতে হলো বলে আবদ্ধ এক পা এক পা করে স্রোতের দিকে এগিয়ে আসে।আবদ্ধ কে স্রোত তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে স্রোতের স্বপ্নের কথা মনে পড়ে গেল।স্রোত মনে মনে বললো ,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-” হায় আল্লাহ! সেদিনের দেখা স্বপ্নের মতো স্যার আমার দিকে এগিয়ে আসছে।স্যার কি সত্যিই সত্যিই আমাকে চুমু দিবে? ছিঃ ছিঃ।এসব হতে দেওয়া যাবে না বলে স্রোত ও এক পা এক পা করে পেছাতে লাগলো।পেছাতে পেছাতে এক‌ পর্যায়ে স্রোতের দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকে গেল। তৎক্ষণাৎ আবদ্ধ দেয়ালের সাথে দুহাত রেখে স্রোতের দিকে ঝুঁকে মুখে ফুঁ দিলো।তাদের মধ্যে আর এক ইঞ্চি সমান দূরত্ব।এক জনের গরম নিঃশ্বাস অন্যজনের উপর আঁচড়ে পড়ছে।আবদ্ধ তার ওষ্ট নিয়ে যায় স্রোতের ওষ্টের দিকে।আর তখনি স্রোত আবদ্ধের হাত থেকে ছোঁ মেরে ফোন টা নিয়ে হাসতে হাসতে বিছানার উপর চলে যায়।আবদ্ধ স্রোত কে প্রাণ খুলে হাসতে দেখে নিজে বোকার মতো মুচকি হেসে ওয়াশরুমে চলে যায়।”

-” প্রায় দশ মিনিট পরে আবদ্ধ ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ বেরিয়ে দেখে স্রোত ফোন নিয়ে কিছু একটা মনোযোগ দিয়ে দেখছে।আবদ্ধ টাওয়াল টা চেয়ারের উপর রেখে বিছানায় স্রোতের পাশে বসে বললো,
-” এতো মনোযোগ দিয়ে কি এমন দেখছো ফোনে?”
-” আপনার বিকাশের পিন কোড বলুন স্যার।”
-” কেন কি করবে?”

-” ঠিক আছে।কিনতে চাও কিনে রাখো।তবে এখন পড়তে পারবে না। তোমার শরীর ভালো না।আগে সুস্থ্য হয়ে উঠো। তারপর গল্প পড়বে।”
-” ঠিক আছে স্যার।

-” আচ্ছা এখন তাহলে ঘুমাও। আগামীকাল সকাল সকাল আমাদের বাড়ি ফিরতে হবে।”
-” কিন্তু এখানে তো সিঙ্গেল বেড। বালিশ ও একটা ।আমারা দুজন মানুষ। এতটুকু জায়গায় কিভাবে থাকবো ??”
-“এমনিতেই আমাদের জন্য নিলয়ের অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।আমি আর নিলয় কে ডিস্টার্ব করতে চাচ্ছি না।তুমি বিছানায় থাকো।আমি বরং ফ্লোরে থাকছি।”
-” না না স্যার।এই ঠান্ডার মধ্যে আপনার ফ্লোরে থাকতে হবে না।আপনি বিছানায় আসুন।একটা রাতের ই তো ব্যাপার।”

-” তোমার সমস্যা হবে না তো?”
-“আমি ম্যানেজ করে নিবো।”
-” ইটস্ ওকে বলে আবদ্ধ লাইট অফ করে বিছানায় এসে শুয়ে পড়লো। স্রোত ও আবদ্ধের গা ঘেঁষে এক‌ই বালিশে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। কিন্তু স্রোতের এইভাবে শুতে সমস্যা হচ্ছে দেখে আবদ্ধ স্রোত কে নিজের বুকের উপর টেনে নিলো।স্রোত ও দুহাতে আবদ্ধ কে আঁকড়ে ধরে আবদ্ধের বুকে নাক ঘষে বললো,

-” জানেন স্যার বাবুই সৈকত স্যার কে পছন্দ করতো।”
-” হোয়াট ? আরু তোমাকে‌ বলেছে যে ও সৈকত কে পছন্দ করে?”
-” বাবুই বলেছিলো‌ ও একজন কে অনেক বেশি ভালোবেসে। কিন্তু সেই মানুষটা কে সেটা বলে নি। আমি বাবুই এর ফোনের ওয়ালপেপারে সৈকত স্যারের ছবি দেখে বুঝতে পেরেছি বাবুই আর কাউকে নয়।সৈকত স্যার কে ভালোবাসে। বাবুই যদি জানতে পারে সৈকত স্যার একটা মানুষ রুপি জা’নো’য়া’র ।তাহলে বাবুই খুব কষ্ট পাবে।”

-” আরুর সত্যটা জানা উচিত।”
-” আমার বিয়েতে তো আমি একটু ও মজা করতে পারি নি।আমার খুব ইচ্ছা ছিলো‌ বাবুই এর বিয়েতে খুব আনন্দ করবো আমি।মহা ধুমধাম করে বাবুইয়ের বিয়ে দিবো। কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেলো।”
-” আমি সৈকতের থেকে ও‌ অনেক ভালো ছেলের সাথে আমার আরুর বিয়ে দিবো। অনেক ধুমধাম করে দিবো।”
-“পুলিশ ভাইয়া কে আপনার কেমন লাগে স্যার?”

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৭

-” ফ্রেন্ড হিসেবে বলতে গেলে নিলয় বেস্ট। ওর মতো বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু বন্ধুর সাথে বোনের বিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আমি পক্ষপাতী নই।নিলয় আমার ফেন্ড সারাজীবন ফ্রেন্ড হয়েই থাকতে।আমি জানি নিলয় আরু কে বোনের নজরে দেখে।নিলয় কখনো আরুর দিকে হাত বাড়াবে না। আর যদি নিলয় কখনো আরুর দিকে হাত বাড়ায় ।আমি ভুলে যাবো নিলয় আমার ফ্রেন্ড ছিলো। নিলয়ের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে আমার।।”

কলিজার ভেতর গেঁথে রাখবো তোমারে পর্ব ২৯