কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ১৯

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ১৯
লাবণ্য ইয়াসমিন

কান্নাকাটি করে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে অধরা। সময়ের সঙ্গে রাগ পানি হয়েছে কিন্তু তার পরিবর্তে দুঃখ এসে ভিড় করেছে হৃদয় জুড়ে। জুবায়েরকে হারিয়ে ফেলার দুঃখ। এইটুকু বুঝতে পেরেছে জুবায়ের একদম ঠিক নেই কিছু একটা হয়েছে। লোকটা হঠাৎ এভাবে পরিবর্তন হয়ে যাবে যেটা ওর কল্পনার বাইরে ছিল। কি করবে বুঝতে পারছে না। জুবায়ের ওয়াশরুমে গোসল করছিলো খানিকটা পরে বেরিয়ে আসলো। অধরাকে কাঁদতে দেখে দুহাতে ওকে আগলে নিয়ে মখটা নিচু করে বলল,

আরে বাবা কাঁদার মতো কিছু কি হয়েছে? এভাবে কান্নাকাটি করছো কেনো? আমার ক্ষুধা পেয়েছে খেতে দিবেনা?
জুবায়েরকে বেশ স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। অধরা অবাক হলো কিছুটা। নাক টেনে টেনে উত্তর দিলো,
আপনি আমার নাম ভুলে গেছেন? কার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন বলুনতো? আমার ভালোলাগছে কিন্তু। রেগে যাবো তখন বুঝবেন।
জুবায়ের অধরার দিকে ভ্রু কুচকে তাঁকিয়ে আছে। কিছু একটা ভেবে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

জুহি আমার সঙ্গে মজা করছো কেনো? কি হচ্ছে বলবে? অধরার থেকে দূরে থাকবে। ও তোমাকে উল্টোপাল্টা বুঝিয়ে দিচ্ছে। আর তুমি কান্নাকাটি করে আমাকে ভাসিয়ে দিচ্ছো।
জুবায়েরর মুখে আবারও জুহির নামটা আপনা আপনি চলে আসলো। কি হচ্ছে অধরার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড হিংসা হচ্ছে জুহির কথা শুনে। বউয়ের চেহারা মনে আছে অথচ নামটা ভুলে গেছে অধরা মানতে পারছে না। বিষয়টা নিয়ে কোনো রহস্য আছে কিনা দেখতে হবে। অধরার ধ্যান ভাঙলো জুবায়েরের ফিসফিস আওয়াজ শুনে।

ম্যাম বাইরে যাবেন নাকি এখানেই থাকবেন?
চলুন যাচ্ছি।
অধরা চুপচাপ বেরিয়ে আসলো। খাবার টেবিল আজ মোটামুটি মানুষ শূন্য। শুধুমাত্র জামসেদ আর জুহি বসে আছে। অধরা গিয়ে খাবারের প্লেট সাজিয়ে রাখলো। জুবায়ের সেখানে গিয়ে বসতেই সোজাসুজি চোখ পড়লো জুহির দিকে। ওর কেমন জানি আবছা আবছা লাগছে। অনেক ভাবনা চিন্তার পরে হুটকরে দাঁড়িয়ে গিয়ে মুখটা কঠিন করে বলল,

ও এখানে কি করছে? ওকে কে এনেছে? ওর জন্য আমার বউ কান্নাকাটি করছে। মেজাজ খারাপ হচ্ছে কিন্তু। ভাই তুমি এনেছো ওকে?
জুবায়েরের অদ্ভুত কথা শুনে জামসেদের গলা আটকে গেলো। খুকখুক করে কেশে ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিজেকে ধাতস্থ করে উত্তর দিলো,

একদম আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করবেনা। বউয়ের প্রতি দরদ ষোলআনা আবার বাইরের মেয়েকে এনে ভাইকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছো। লজ্জা করছেনা?
লজ্জা করবে কেনো? তুমি ছাড়া কে আছে যে ওই মহিলাকে এখানে আনবে। জুহি তুমি ওকে এখুনি বেরিয়ে যেতে বলো। আমার কিন্তু রাগ হচ্ছে। অতিরিক্ত রেগে গেলে অনর্থ ঘটে যাবে।
জুবায়েরের কথা শুনে জুহির কপালে চিন্তার রেখা ফুটে উঠলো। মনে মনে খারাপ একটা গালি দিলো কোনো এক অগন্তুকের নামে। লোকটা কিসের বশ করেছে আল্লাহ ভালো জানে। জুবায়ের বউয়ের নাম ভুলেছে কিন্তু বউকে মনে রেখেছে। এটা কেমন বশ কে জানে। তবুও শেষ চেষ্টা হিসেবে বলল,

জুবায়ের আমাকে চিনতে পারছো না? আমি জুহি তোমার ভালোবাসা। আমার দিকে একবার দেখো?
জুবায়ের বিরক্ত হয়ে উত্তর দিলো,
দেখে কি করবো তুমি আগেও যেমন ছিলে এখনো তেমনই আছো নতুন কিছুতো দেখছিনা। দেখতে আহামরি সুন্দরীতো নাও। যাইহোক তোমাকে আমি বিশ্বাস করছিনা। খাওয়া শেষ করে চুপচাপ বেরিয়ে যাবে। আমার বউ তোমাকে পছন্দ করছেনা।
সত্যি আমাকে চিনতে পারছোনা তুমি?

জুহি বেশ অবাক হচ্ছে। এখানে আসার আগে ওকে ভালোভাবে বলা হয়েছে জুবায়ের পুরোপুরি ওদের বশে তবে এখন কেনো এমন ব্যবহার করছে বুঝতে পারছে না। তবে বুঝলো ওসব কালো জাদুতে বিশ্বাস করা ওর উচিত হয়নি। জুহির ধ্যান ভাঙলো সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে আসা অল্প বয়সী একটা মেয়েকে দেখে। সাদা গাউনের সঙ্গে লাল রঙের ওড়না মাথায় ঘোমটা টানা মেয়েটাকে কেমন মোহনীয় দেখতে লাগছে। মেয়েটাকে দেখলে যেকারো হিংসা হবে। জুহি অবাক হয়ে এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে। উপস্থিত সকলের নজর মেয়েটার দিকে। কহিনুর টানপায়ে হেঁটে এসে একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লো। একবার জুহির দিকে চেয়ে খাবারে চামচ চালিয়ে দিয়ে বলল,

মিসেস আফ্রান জুহি আপনাকে আমার বাড়িতে স্বাগতম। এখানে আপনার কোনো অসুবিধা হচ্ছে নাতো? আপনার বাচ্চাদুটো কিন্তু বড্ড দুষ্টু। গতকাল রাত থেকে কান্নাকাটি করছে। আপনি বাচ্চাদের বড্ড বেশি আল্লাদ দিয়ে মানুষ করছেন এটা কিন্তু একদম ঠিক হচ্ছে না।

কহিনুর খেতে খেতে নিজের মনে কথাগুলো বলে দিলো কিন্তু জুহির খাওয়া বন্ধ। নিজের পরিচয় এখানে ফাঁস হয়ে গেছে বুঝতে বাকী নেই কিন্তু বাচ্চাদের কথা ভেবে ওর গলা শুকিয়ে আসছে। জামসেদ খাওয়া বন্ধ করে কহিনুরকে দেখছে। মনের মধ্যে নানারকম চিন্তা ভাবনার উদয় হচ্ছে। কহিনুর জুসের গ্লাসে মুখ ডুবিয়ে পূণরায় বলল,

আপনি চিন্তা করবেন না ওদেরকে আমি যথেষ্ট সাবধানে রেখেছি। সমস্যা হচ্ছে ওদের যেখানে রেখেছি তার পাশে আমার সুন্দর একটা সুইমিং পুল আছে। পুলে শখে বশবর্তী হয়ে দশটার মতো কুমির রেখেছিলাম। বাচ্চারা এতো দুষ্ট বারবার সেখানে চলে যাচ্ছে। কখন না জানি ধুম করে পড়ে যায়। বুঝেনতো কুমিরের আবার সুস্বাদু মাং/স ভীষণ পছন্দ। আপনি কতদিন ওখানে থাকবেন বলে ঠিক করেছেন?

প্যারা নেই আপনার যতদিন ইচ্ছা থাকুন ওদিকটা আমি দেখে নিবো।
কহিনুর বেশ স্বাভাবিকভাবে খাচ্ছে আর কথা বলছে। অধরা ঠাই দাঁড়িয়ে মেয়ের কথাবার্তা শুনে চোখ বড়বড় করে তাঁকিয়ে আছে। উপস্থিত সকলের চোখে ভয় বিশেষ করে জুহির। বাচ্চাদের জন্যই ওর এখানে আসা। জুবায়েরকে অর্ধেক সত্যি আর অর্ধেক মিথ্যা বলেছিলো সেদিন।

সত্যি হচ্ছে ওর কখনও মৃ/ত্যু হয়নি বরং বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে গিয়ে বিয়ে করেছে। সে ঘরে দুটো ছেলেমেয়ে আছে। মোটামুটি সুখের সংসার কিন্তু কয়েকদিন আগে একটা লোকের প্ররোচনাতে পড়ে এখানে এসেছে। ভেবেছিল জুবায়েরের থেকে কিছু অর্থ নিয়ে ফিরে যাবে। এভাবে ফেঁসে যাবে কল্পনা করেছি। জুহি সবটা ভেবে ছলছল চোখে বলল,

আমার বাচ্চাদের সঙ্গে কিছু করোনা প্লিজ তোমাকে ঠিক চিনতে পারলাম না। তোমার সঙ্গে আমার কিসের শত্রুতা? প্লিজ আমার বাচ্চাদের ছেড়ে দাও। আমি এখান থেকে আজকেই চলে যাবো। প্লিজ বাচ্চাদের ছেড়ে দাও।
কহিনুর প্লেটে ডিম পোচ তুলে নিয়ে অন্য হাতে পানির গ্লাস এগিয়ে নিলো। মনে হলো কিছু শুনেনি। জুহি অস্থির হয়ে উঠছে। কহিনুর সেদিকে চেয়ে শীতল কণ্ঠে বলল,

চলে যাবেন কিন্তু কেনো এসেছেন সেটা বলবেন না? এতো তাড়া কিসের? আছেন কয়েকদিন থাকুন তারপর না হয় যাবেন।
জুহি উত্তর দিলোনা। বুকের মধ্যে তোড়পাড় হচ্ছে। কিভাবে বাচ্চাদের কথা ভুলে গেলো এখন আফসোস হচ্ছে। কহিনুর জুবায়েরের দিকে চেয়ে ভ্রু নাচিয়ে বলল,

জুসটা খান ভালো লাগবে। ওটা সাঈদের স্পেশাল জুস। একদম টাটকা। ওটা খাওয়ার পরে আপনাকে আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিব।
জুবায়ের বিস্ময়কর দৃষ্টিতে চেয়ে আছে কহিনুরের দিকে।মেয়েটাকে চিনতে পারছে কিন্তু নামটা মনে করতে পারছেনা। ও দ্রুত জুসটা ঢকঢক করে খেয়ে নিয়ে চোখ বন্ধ করলো। কহিনুর বাঁকা হাসলো। জুবায়েরের বশ কেটে যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। সকালে আর রাতে জুসের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছে। সাঈদ হাকিমের থেকে ওষুধ এনেছে। চুপচাপ বসে থাকার মতো হাতে পর্যাপ্ত সময় নেই। হঠাৎ কর্ণগোচর হলো,

নূর তুমি? আমি কিছুতেই তোমার নামটা মনে করতে পারছিলাম না। কোথায় ছিলে তুমি? বাবাকে তোমার মনে পড়েনি? কেনো করলে এমন?
জুবায়ের নিজের স্থান ছেড়ে কহিনুরের পাশে গিয়ে ওকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে নিলো। অধরা বুঝতে পারছে না কিছু সময়ের মধ্যে জুবায়ের হঠাৎ আগের ফর্মে কিভাবে ফিরে আসলো। তবে ও খুশি হলো। সকলে যখন কহিনুরকে নিয়ে বিজি হয়ে পড়লো জুহি চুপচাপ সরে পড়লো। সাঈদ গেলো ওর পিছু পিছু। কহিনুর সেদিকে তাঁকিয়ে হাসলো।

হাটুর মধ্যে মাথা রেখে বসে আছে পাথর। অতীত বর্তমানের মুখোমুখি হয়ে মন মেজাজ বিষিয়ে আছে। সকলের সঙ্গে ওকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো কিন্তু ওর স্মৃতির গোলক এতোদিন আটকে রাখা হয়েছিলো। ওয়াশিম খান নিজের কাজে ওকে ব্যবহার করার জন্য এমনটা করেছে বুঝতে ওর বাকি নেই। রাতে অর্ধমানবে রুপান্তরিত হওয়ার পর সবটা সামনে এসেছে। গোলক আপনা আপনি ওর কাছে ফিরে এসেছে।

দাদু এই জন্য ওকে চোখে চোখে রাখে। পাথর কহিনুরকে ভেবে কষ্ট পাচ্ছে। এভাবে ফিরবে বলেতো জাদুলিপিতে নিজের ইচ্ছা গুলো লিখে রাখেনি। বাবাকে এখন ভীষণ প্রয়োজন কথাটা ভেবে ও দ্রুত বিছানা থেকে উঠে পড়লো। আনমনে দেয়ালের দিকে এগিয়ে গেলো। লম্বা সরু রাস্তা পরিয়ে ভদ্রলোকের সামনে যেতে ওর সময় লাগলোনা। বিশাল কক্ষের মাঝখানে ছোট্ট একটা পালঙ্ক রাখা। ভদ্রলোক বালিশে হেলান দিয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে বই পড়ছে। পাথর হন্তদন্ত হয়ে বাবার পাশে গিয়ে বসে পড়লো। হঠাৎ ছেলেকে দেখেও উনি অবাক হলেন না। বই থেকে চোখ সরিয়ে ছেলেকে একবার দেখে নিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,

অবশেষ সবটা মনে পড়লো? তোমার অপেক্ষায় ছিলাম। আগেই বলেছিলাম কহিনুরের থেকে দূরে থাকো। এতোটা যন্ত্রণা পাবে আমার জানা ছিলো।
পাথর চুপচাপ বাবা হাত থেকে বইটা সরিয়ে নিয়ে কোলের উপরে মাথা রাখলো। বাবা নামক মানুষটার ভালোবাসা কখনও সেভাবে উপলব্ধি করা হয়নি। আজ কেমন অসহায় লাগছে। পাথরকে চুপচাপ দেখে উনি ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

সবটা না জেনে এভাবে কষ্ট পাওয়ার মানে আছে? পাগলামি করোনা কষ্টের দিন ভুলে গিয়ে যা তোমার তা নিজের করে নাও।
কোনটা আমার বাবা? ও তো ফিরবেনা কখনও। তোমার জাদুলিপি আমার সঙ্গে মজা করেছে। আমি ওখানে যেটা লিখেছিলাম সেটা হয়নি। কহিনুর নেই বাবা।
আচ্ছা কহিনুর আসলে কি সেটা কি তুমি জানো? না জেনে কষ্ট পাচ্ছো। যাও রহস্যের সমাধান করো। কহিনুরের আদলে যে আছে সে আসলে কে জানবে না?
বাবার কথা শুনে পাথর চট করে মাথা তুলে চাইলো। বুঝতে না পেরে জিঞ্জাসা করলো,

ওটা কহিনুর ছিল? কিন্তু ওই মৃ/ত্যু?
আমি বললে তুমি মানবে কেনো? নিজের খোঁজ করে সবটা জানো তবেই না শান্তি পাবে।
কোথা থেকে শুরু করবো?
সুলতান হাউজের কোনো এক কক্ষে তোমার সব প্রশ্নের সমাধান আছে। আশাকরি সবটা তোমার কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে।
পাথর হন্তদন্ত হয়ে উঠে বসলো। বাবাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু দিয়ে যেভাবে এসেছিলো সেভাবেই বেরিয়ে গেলো।

শিকদার হাউজে গুরুত্বপূর্ণ একটা মিটিং বসেছে। রিজু শিকদারের মা গত হয়েছেন বছর খানিকটা আগে। সকল সম্পত্তি রিজু নিজের নামে করে নিয়ছিলো ভাইদের ফাঁকি দিয়ে। জার্মানিতে নিজের স্ত্রী পুত্র আর দুই স্ত্রী নিয়ে ওর একার বসবাস। বাকী ভাইয়েরা নিজেদের মতো আলাদা থাকে। ওর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ। রিজুর মেজাজ চরম খারাপ। অনেক কাঠখোট্টা পেরিয়ে বাবা মায়ের সম্পত্তি দখল করেছে যার সবটা দখল হবে ভাবতে পারছেনা।

সুলতান গ্রুপ থেকে নোটিশ এসেছে।সেখানে অধরা বারি তার বাবা নওশাদ বারির সম্পত্তি ফেরত চেয়েছে। আগে দুপক্ষের একটা মিটিং ডাকা হবে তারপর বাকীটা কোট দেখে নিবে। এতোদিন পরে নওশাদ বারির মেয়ে ফিরবে রিজু ভাবতে পারেনি। ভয় হচ্ছে। সঙ্গে অরিত্রী নিখোঁজ গতকাল রাত থেকে। রাগারাগি করে মেয়েটাকে অতিরিক্ত মারয/ধর করা ঠিক হয়নি। কোথায় আছে জানাটা খুব দরকার ছিল তবুও যেতে পারছে না। রিজুর ধ্যান ভাঙলো মাহীমের আওয়াজ শুনে,

অধরা বারি আপনার ফুফাতো বোন তাইনা? নওশাদ বারি নিখোঁজ ছিলেন।জার্মানিতে এসে কখনও নিজের বাবা মায়ের খোঁজ করেননি। আপনার বাবা মা তাদের দেখাশোনা করেছে। সম্পত্তি নিতে হলে এতো বছর কোথায় ছিলেন? তাছাড়া হঠাৎ আজ কেনো সম্পত্তি চাইছে বুঝতে পারছিনা। আপনি বরং ভদ্রমহিলার সঙ্গে দেখা করুন। উনার স্বামীর এতো টাকা পয়সা থাকতে উনি আমাদের দিকে নজর দিয়েছে কেনো? অদ্ভুত মহিলা।

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ১৮

রিজু ছেলের কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। যে সম্পত্তির জন্য একদিন নিজের আপনার লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলো আজ সেটা চলে যেতে চলেছে। কি করবে মাথায় কাজ করছে না। হাতের ফোনটা অনবরত বেজে চলেছে। রিজু ধাতস্থ হতেই ফোনটা চোখের সামনে তুলে ধরলো। টেক্সট এসেছে আগামীকাল সুলতান হাউজে নিমন্ত্রণ পেয়েছে। কিছু একটা ব্যবস্থা সেখানে করে ফেলবে কিন্তু প্রশ্ন জাগ্রত হলো, অরিত্রী কোথায়?

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ২০