খাঁচার ভেতর অচিন পাখি পর্ব ২২

খাঁচার ভেতর অচিন পাখি পর্ব ২২
আভা ইসলাম রাত্রি

তখন প্রায় মধ্যরাত। সম্পূর্ন রাত সুহাসিনীর সঙ্গে সুখ দুঃখের আলাপ করে সবেই ঘুমিয়েছে চিত্রা। দু চোখের পাতায় ঘুমের পরশ। ঘুমে তলিয়ে যাবার কিছুক্ষণ পরই চিত্রা স্বপ্নে দেখে, শেহজাদ চিত্রার মুখের দিকে ঝুঁকে আছে। তার কালো ঘোলাটে দু চোখে ভেসে বেড়াচ্ছে ভালোবাসার প্রণয়! চিত্রা লজ্জায় মুখ ফেরায় বরাবরের মত। শেহজাদ চিত্রার পায়ে নেমে আসে।

পায়ে আলতো করে চুমু দিতেই চিত্রা শিরশির করে কেঁপে উঠে। কিন্তু সুখের সকল পরশ ছাপিয়ে হঠাৎ পায়ে কামড় উপলব্ধি করে চিত্রা। চিত্রা ঘুমের মধ্যেই ব্যথায় চিৎকার করে উঠে। কামড়ের ব্যথা এতটা মারাত্মক ছিল যে, চিত্রা গভীর ঘুম থেকে সজাগ হয়ে যায় মুহূর্তেই। সজাগ হবার পরও চিত্রা উপলব্ধি করে, পায়ে যেন সত্য সত্য কেউ কামড় দিয়েছে। পায়ের ব্যথা এখনও তরতাজা!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

চিত্রা আতঙ্কে পায়ের দিকে তাকায়। চিত্রার চোখে ভাসে, কালো চাদর দিয়ে আপাদমস্তক ঢাকা এক জোড়া চোখ। অচেনা পুরুষকে দেখে আর কিছু ভাবতে পারেনা চিত্রা, ভয়ে সজোরে চিৎকার করে উঠে। চিত্রার চিৎকার শুনে পায়ের কাছে বসে থাকা মানুষ চাদর দিয়ে নিজেকে ভালো করে ঢেকে দ্রুত জানালা বেয়ে পালিয়ে যায়। সুহাসিনী চিত্রার চিৎকার শুনে ধড়ফড়িয়ে সজাগ হয়। পাশে চিত্রা জানালার দিকে চেয়ে থরথর করে কাঁপছে। দুহাতে পা-দুটো নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরে অদ্ভুত ভঙ্গিতে কি যেন বিড়বিড় করছে। সুহাসিনী চিত্রার এহেন অবস্থা দেখে ভয় পায় কিছুটা। দ্রুত চিত্রার হাত ধরে বলে,

‘বুবু, এই বুবু? কি হইসে তোর? এমন করতাসস কেন? বুবু?’
চিত্রা আতঙ্কে নীল হয়ে যাচ্ছে। সে সুহাসিনীর হাত চেপে ধরে ভাঙা স্বরে আওড়ায়,
‘আ–মায় কেউ ছুঁ-য়েছে, কেউ এ-সেছে, কে-উ পায়ে—কে..”
সুহাসিনী চিত্রার আধভাঙা স্বর আবছা হলেও কিছুটা বুঝে। সুহাসিনী দ্রুত হারিকেন জ্বালিয়ে আশপাশ ভালো করে দেখে। কেউ নেই, কাকে দেখে চিত্রা এতরাতে ভয় পাচ্ছে? সুহাসিনী চিত্রাকে দুহাতে ঝাপটে নিজের সঙ্গে চেপে ধরে। চিত্রা সুহাসিনীর বুকের মধ্যে মাথা রেখে ক্রমাগত কাঁপছে। সুহাসিনী চিত্রার অগোছালো চুলে হাত বুলিয়ে বোঝায়,

‘কেউ আহে নাই, বুবু। তুই স্বপ্ন দেখসস। শান্ত হ।’
‘না, ও-টা স্বপ্ন না। কেউ স-ত্যি এসেছে, স-ত্যি এসেছে।’
চিত্রার কথা শুনে, সুহাসিনী কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারে। সুহাসিনী বিছানার পাশে জানালার দিকে তাকায়। জানালা খোলা। রাতেই তো জানালা বন্ধ করে শুয়েছে তারা। জানালা খুলে দিল কে? সুহাসিনী কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারে। সে চিত্রার হাত ধরে বলে,

‘বুবু, নেতাসাহেবের সঙ্গে কথা কইবি? উনার সঙ্গে কথা কইলে বালা লাগব তোর। কল ধরাই দেই?’
চিত্রা মাথা নাড়ে। সুহাসিনী একহাতে চিত্রাকে বুকের সঙ্গে চেপে ধরে অন্যহাতে চিত্রার মোবাইল নিয়ে কল করে শেহজাদকে। শেহজাদ তখন হোটেলের বসার ঘরে বসে টিভিতে আজকের খবর দেখছে। মোবাইলে কল দেখে সে কিছুটা বিস্মিত হয়। চিত্রা এতরাতে কেন কল করেছে বোধগম্য হচ্ছে না। শেহজাদ ভাবে, বাপের বাড়ি গিয়ে খুশিতে হয়ত ঘুমাচ্ছে না। শেহজাদ কল ধরে। সালাম করে প্রশ্ন করে,

‘ঘুমাও নি এখনো? রাত কটা বাজে?’
সুহাসিনী দ্রুত কণ্ঠে বলে,
‘দুলাভাই, আমি! সুহাসিনী কইতেছি।’
শেহজাদ মনে করার চেষ্টা করে, সুহাসিনী কে? তারপর মনে পরে, চিত্রার বোন হবে। শেহজাদ প্রশ্ন করে,
‘তোমার বোন কোথায়?’

‘বুবু আমার কাছেই, আপনার লগে কথা কইব। বুবু, এই বুবু? নে কথা ক।’
সুহাসিনী চিত্রার হাতে মোবাইল ধরায়। চিত্রা কম্পিত হাতে মোবাইল ধরে সালাম করে। শেহজাদ কিছুটা গম্ভীর হয়ে জিজ্ঞেস করে,

‘এতরাত করে সজাগ থাকা শরীরের জন্যে ভালো না। ঘুমাচ্ছ না কেন?’
চিত্রা কি বলবে বুঝতে পারছে না, শুধু হাঁপাচ্ছে। শেহজাদকে বললে শেহজাদ যদি চিত্রাকে চরিত্রহীনা ভাবে? ভয়ে চিত্রার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। সে চরিত্রহীনা নয়, শেহজাদের আগে কেউ চিত্রার শরীর ছুঁই নি। শেহজাদ যদি চিত্রাকে ভুল বুঝে চিত্রার আর বেঁচে থাকার কারণ থাকবে না। চিত্রা দোমনা করছে শুধু। চিত্রাকে কথা বলতে না শুনে শেহজাদ বুঝে, এতরাতে কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে। নাহলে চিত্রা এমন অদ্ভুত ব্যবহার করার মেয়ে নয়। লজ্জায় চুপ থাকা এবং ভয়ে চুপ থাকা এ দুটোর মধ্যে তফাৎ শেহজাদ বুঝে, জানে। শেহজাদ তাই প্রশ্ন করে,

‘সুভাষিণী, চুপ কেন? কিছু হয়েছে?’
চিত্রার বুক জ্বলছে। শেহজাদকে বলবে কিনা ভাবতে বসেছে। পাশ থেকে সুহাসিনী চিত্রার কাঁধে হাত রেখে চোখের ইশারায় শেহজাদকে সব বলতে বলে। চিত্রা সাহস পায় এবার কিছুটা। ধীর স্বরে শুরু থেকে সব জানায় শেহজাদকে। শেহজাদ চুপ থেকে মন দিয়ে শুনে সব। ভাবে কতকিছু। তার রাগ ইতিমধ্যে তরতর করে বেড়ে মাথায় চড়েছে। চিত্রাকে যে ছুঁয়েছে, তার হাত ভেঙে হাওরে ফেলে দেবে শেহজাদ। শেহজাদ তার জীবনের সকল সুখ হারাম করে দেবে, জাহান্নাম করে দেবে তার জীবন। রাগে কপালের রগ ফুলে গেছে শেহজাদের। শেহজাদ রাগ চিত্রার সামনে প্রকাশ করে না। বরং শান্ত স্বরে বলে,
‘রাত হয়েছে, ঘুমাও। আমি দেখছি ব্যাপারটা।’

শেহজাদের শান্ত কন্ঠ শুনে চিত্রা ভেবে বসে, শেহজাদ তাকে ভুল বুঝেছে। চিত্রা এবার শব্দ করে কেঁদে বলে,
‘আমি চরিত্রহীনা নই, নেতাশাহ। আমি শুধু আপনাকে ভালোবাসি, আপনাকে ছাড়া আর কাউকে নিজেকে স্পর্শ করার সুযোগ দেওয়ার আগেই যেন আল্লাহ যেন আমাকে মৃত্যু দেন।। বিশ্বাস করুন, আমি কিছু করিনি। আপনাকে —–‘
‘হুস, শান্ত! আমি তোমাকে বিশ্বাস করি। তোমার শরীর ছুঁয়ার আগে মন ছুঁয়েছি। তোমার মনের ভেতরের কথা আমার চেয়ে ভালো কেউ বুঝবে না। এখন কান্না থামিয়ে ঘুমাও। আমি সকালে মানুষ পাঠাচ্ছি।’

‘আপনি সত্যি —- ‘
‘সুভাষিণী, ঘুমাতে বলেছি আমি।’
শেহজাদ হালকা ধমকের স্বরে বলে। চিত্রা মাথা নাড়ে। সালাম দিয়ে ফোন কেটে দেয়। সুহাসিনী পাশে থেকে উদগ্রীব কণ্ঠে প্রশ্ন করে,
‘বুবু, দুলাভাই বিশ্বাস করল তোরে?’
চিত্রা কান্নার মধ্যেও হালকা হেসে ফেলল। চোখের জলে মাখামাখি গাল,চিবুক অথচ ঠোঁটে বিশ্বজয় করা মৃদু হাসি। চিত্রা সুখের হাওয়ায় ভেসে ভেসে উত্তর দিল,

‘সুহাসিনী, জানিস! আমি বোধহয় জীবনে খুব বড় কোনো পূণ্য করেছিলাম, তাই আল্লাহ খুশি হয়ে আমাকে আজ ফেরেশতার মত স্বামী দিয়েছেন। এই জীবনে আমার আর কিচ্ছু চাওয়ার নেই জানিস, কিচ্ছু না।’
চিত্রার কথা শুনে বুক থেকে ভার নেমে যায় সুহাসিনীর। আনন্দে বুকটা ভরে যায় তার। মনেমনে সুহাসিনী দোয়া করে শেহজাদের দীর্ঘায়ুর জন্যে। তার বুবু এবং দুলাইভাই একসঙ্গে সারাটাজীবন বাঁচুক, থাকুক সুখে।

চিত্রা কল কেটে দিয়েছে অনেকক্ষণ হল। শেহজাদ টিভি বন্ধ করে সোফার মধ্যে ভ্রু কুঁচকে মাথা নিচু করে বসে আছে। তার চিন্তায় ভাবছে হাজার কথা। নির্বাচন আজকে দুপুর বারোটায়। নির্বাচনের আগে শেহজাদের শত্রুর অভাব হয়না। শেহজাদ শত্রুর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাই এবারের নির্বাচনে তাদের নজর পরেছে শেহজাদের স্ত্রীর দিকে। শেহজাদ রাগে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে। শেহজাদ কিছুটা আন্দাজ করতে পারে, এটার কার কাজ! রাগে সোফার হাতল শক্ত করে ধরে শান্ত হবার চেষ্টা করে সে। তারপর টেলিফোন করে মেহজাদকে। মেহজাদের ফোন ওয়েটিংয়ে। এতরাতে কার সঙ্গে কথা বলছে মেহজাদ? কল কেটে যাওয়ার পর মেহজাদ সঙ্গেসঙ্গে কল দেয় আবার। শেহজাদ কল ধরেই প্রশ্ন করে,

‘কার সঙ্গে কথা বলছিলে?’
উর্বশীর কথা এখন শেহজাদকে বলা যাবে না। নির্বাচনের কারণে এমনিতেই শেহজাদের মাথা গরম থাকবে। তাই মেহজাদ কথা এড়িয়ে বলে,
‘ফ্রেন্ডের সঙ্গে। তুমি এতরাতে কল করলে কেন? কোনো আর্জেন্ট?’
শেহজাদ আর কথায় ধরে না। গম্ভীর স্বরে বলে,
‘ভোরে তোমার ভাবিজানের বাড়ি যাবে, এবং দুপুরের মধ্যে তাকে আয়ুষ্মান মহলে নিয়ে আসবে। কথার খেলাপ যেন না হয়। আমি ভোরে কল করব আবার।’

মেহজাদ অবাক হয়ে প্রশ্ন করে,
‘কিন্তু ভাবিজান তো গতকালই গেলেন বাপের বাড়ি। বললেন দুদিন থাকবেন। তাহলে আজকে কেন নিয়ে আসব?’
শেহজাদ অতিষ্ট হয়ে বলে,
‘কথা বাড়াবে না। যেটা বলছি সেটা করবে। রাখছি।
মেহজাদ কিছু বলার আগেই কল কেটে দেয় শেহজাদ।

অমল ঠাকুর হসপিটালে সুহাসের পাশে বসে আছেন। সূহাসের অবস্থা রাতের দিকে শোচনীয় হলেও, আজকে সকাল থেকে বেশ উন্নত। সুহাসের মুখে আপেলের টুকরো তুলে দিচ্ছে লালু। তাদেরকে অবাক করে শেহজাদ প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে কেবিনের দরজা খুলে প্রবেশ করে। অমল ঠাকুর শেহজাদকে দেখে উঠে দাঁড়ান।
‘আরে, হবু মেয়র সাহেব যে। আসুন, আসুন।’

হাত বাড়িয়ে অমল ঠাকুর এগিয়ে গিয়ে শেহজাদকে জড়িয়ে ধরেন। শেহজাদ শান্ত চোখে অমল ঠাকুরের দিকে চায়। দুহাতে ঠেলে নিজের থেকে অমল ঠাকুরের স্বাস্থ্যবান দেহ সরিয়ে দেয়। অমল ঠাকুর শেহজাদের পায়ের দিকে চেয়ার ঠেলে বলেন,
‘বসুন, আমরা আলাপ করি দু কথা। গতকাল এতবড় হাঙ্গামা করে ফেললেন, নিশ্চয়ই এখনো মাথায় কিছু প্যাঁচ নিয়েই হাজির হয়েছেন। তা বলুন, এবার কি হাঙ্গামা করার ইচ্ছে?’

শেহজাদ আরাম করে চেয়ারে বসে। অমল ঠাকুর দাঁড়িয়ে আছেন। শেহজাদ তার পাশের চেয়ারে আঙ্গুলের ইশারায় দেখায়। অমল ঠাকুর দাঁতে দাঁত চেপে চেয়ারে শেহজাদের সামনেই পায়ের উপর পা তুলে বসেন। শেহজাদ নিজের সামনে পায়ের উপর পা তুলে কারো বসা পছন্দ করে না। তার তীক্ষ্ম দৃষ্টি অমল ঠাকুরের পায়ের দিকে। অমল ঠাকুর শেহজাদের দৃষ্টি বুঝে কেশে উঠেন। এদিক ওদিক তাকিয়ে আস্তে করে পা নামিয়ে ফেলেন। শেহজাদ এবার কথা তুলে,

‘কাপুরুষের মত সামনে থেকে আঘাত না করে, দূর্বলতায় হানা দেওয়া মানুষকে আমি ঘৃনা করি। প্রথম এবং শেষবারের মত বলে যাচ্ছি, লড়াই হবে সামনাসামনি-মুখোমুখি। আমার পরিবারের মানুষকে এ লড়াইয়ে জড়ালে তার পরিবারকেও ছারখার করে দেওয়া হবে। কথাটা মাথায় রাখবেন।’
অমল ঠাকুর শেহজাদের কথা ধরতে পারেন না। তিনি বিস্ময় নিয়ে বলেন,
‘কে কার পরিবারকে লড়াইয়ে জড়িয়েছে? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।’
শেহজাদ ভ্রু কুঁচকে ফেলে। তাচ্ছিল্যভরা চাওনি নিক্ষেপ করে বলে,

‘নাদান বাচ্চা সাজবেন না। আপনি যতটা নিষ্পাপ দেখান, মূলত ততটাও ধোঁয়া তুলসী পাতা না।’
শেহজাদের কথায় অমল ঠাকুর মুখ বাঁকিয়ে বলেন,
‘তুমি লাগে জব্বর ধোঁয়া তুলসী পাতা?’
শেহজাদ বিরক্ত হয়। সে ধোঁয়া তুলসী পাতা নয় সেটা এত ঘটা করে তাকে জানাতে হবে না। শেহজাদ নিজের চরিত্রের সার্টিফিকেট নিশ্চয়ই অমল ঠাকুরের কাছে জানতে চায়নি। শেহজাদ অতিষ্ট ভঙ্গিতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। সুহাসের দিকে আড়চোখে চেয়ে অমল ঠাকুরকে উদ্দেশ্য করে বলে,

‘একটামাত্র ছেলেকে হারাতে না চাইলে, আমার কথাটা মাথায় রাখবেন। শেহজাদ আয়ুষ্মান মিছামিছি বাণী ছাড়ে না, করে দেখায়। আল্লাহ হাফেজ।’
শেহজাদ যেমন ঝড়ের গতিতে আসে, তেমনই ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে যায়। অমল ঠাকুর এখনো ফ্যালফ্যাল চোখে চেয়ে আছে দরজার দিকে। শেহজাদের এত কথা তার মাথার উপর দিয়ে গেছে। তিনি কি এতই বোকা যে শেহজাদের মত মানুষের সঙ্গে পাঙা দিয়ে তার পরিবারের দিকে হাত বাড়িয়ে দেবে? ভূতে ধরেছে তাকে? শেহজাদ আন্দাজ করতে পারলে তাদের জীবন জাহান্নাম করে দেবে এটুকু তো জানেন অমল ঠাকুর। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই অসাধ্য সাধন কে করেছে? সুহাস বেডে শুয়ে ভাঙা স্বরে বলে,

‘এ ক্ষ্যাপা বাঘের পরিবারে হাত দিয়েছে কে? আমরা তো দেইনি। তাহলে?’
অমল ঠাকুর ধীর পায়ে ছেলের শিয়রে এসে বসেন। চিন্তিত বদনে বলেন,
‘আমরা ছাড়াও ওর আরো শত্রু আছে নাকি? জানতাম না তো।’
সুহাস কিছু একটা ভেবে হালকা হেসে উঠে। তারপর বলে,
‘শুনলাম ওর নাকি নতুন রাণী হয়েছে। রাণীর জন্যে ক্ষেপে আছে নাকি এত?’
‘হতে পারে। শুনেছি চোখে হারায় রাণীকে।’

খাঁচার ভেতর অচিন পাখি পর্ব ২১

সুহাসের চোখে মুখে কামনা খেলা করে,
‘নেতাসাহেবের রাণীকে একবার না দেখে শান্তি পাব না বোধহয়। রাণীর দিকে যে হাত বাড়িয়েছে, তাকে খুঁজে বের করো। হয়ত সেই হবে শেহজাদ আয়ুষ্মানকে হারানোর মূল অ/স্ত্র।’

খাঁচার ভেতর অচিন পাখি পর্ব ২৩