তুমি এসেছিলে বলে পর্ব ৩

তুমি এসেছিলে বলে পর্ব ৩
নাদিয়া আক্তার সিয়া

বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে মেঘ আর অহনা। তারা বুঝতে পারছেনা। এটা বাড়ি না রাজপ্রাসাদ। ছোট বেলায় দাদুমনির কাছে অনেক রাজা-রানীর রাজপ্রাসাধ এর কথা শুনেছে আজ তা দেখেও নিল।
অহনা : মেঘ আমাদের মতো গরিব ঘরের মেয়েদের তারা কেনো নিজেদের বাড়ির বৌ করে এনেছে।
মেঘ : জানি না আপু। কিন্তু তাদের মন কি এই বাড়ির মতো সুন্দর হবে? নাকি আমদের অপমান করবে আমরা তো তাদের মতো এতো বড়লোক নই আমরা তো মধ্যবিত্ত শ্রেণীর।

“এই যে দুই ভাবি এতো কী ভাবছো? বাড়িতে ঢুকবে না?” মিথিলা বলল।
মিথিলার ডাকে তাদের হুশ ফিরল ।
সিমরান : আসো ভিতরে চিন্তা নেই। DON’T WORRY.
শাম্মি : আরে আসো তো।(হাত ধরে ঢুকিয়ে দিয়ে)

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

অরিন সাহেবা (মেহতাব এর মা) : বাহ! আমার দুই ছেলের তো কপাল খুলে গেছে লাল টুকটুকে বৌ পেয়েছে।
এই কথা শুনে দুজনে বেশ লজ্জা পেয়েছে! লাল আভা ছড়িয়ে পড়েছে মুখখানায়!
শাম্মি : লজ্জা পেয়েও না। আজকে রাতে অনেক লজ্জার কথা শুনতে হবে। তক্ষণ এর জন্য বরং তুলে রাখো।
অরিন বেগম : সিমু তোর মেয়ে তো ভালোই পেকেছে।

সিমু বেগম (মেহতাব এর খালামনি) : একদম ঠিক বলেছো আপা। এক এক টা বাদর এর হাড্ডি।
মারজা বেগম (মেহতাব এর দাদী) : আমার নাতনির বৌ গো তো দেখলাম। এখন শুধু পুতি গো দেহনের পালা।
হুল্লা পার্টি নিচে নামতে নামতে তাদের মধ্যে সৌরভ বলে উঠলো,
সৌরভ : দাদী আপনি তো এহনো যৌবোন ধইরা রাখছেন আপনারে দেইখ্যা মনে হয় এহনো পাত্র খুজলে লাইন লাইগা যাইবো।

সৌরভের কথা কর্নপাত হতেই রেগে লাঠি নিয়ে এগিয়ে এলেন।
মারজা বেগম : দাড়া বান্দর ছেড়া তোর একদিন কী আমার একদিন।
সৌরভ : আরে থামো দাদী ভাবি গো সামনে ইজ্জতটা রাখলা না।
লাঠির বারি থেকে বাচার জন্য দৌড় দিয়ে বলতে লাগলো সৌরভ।
সবাই তাদের কান্ড দেখে ইতিমধ্যে হাসি হাসি শুরু করে দিয়েছে। মেঘ আর অহনাও হাসছে।
মারজা বেগম : বদমাইশ পোলাপান তোগো লইগা মইরাও শান্তি পামু না। তায় আবার কবরে গিয়া কইবি,”দাদী উঠো তোমার লেইগা একটা পাত্র পাইছি বিয়া করবা না।”

দাদীর কথা শুনে এবার হাসির আওয়াজ আরো দ্বিগুণ বেড়ে গেল।
অরিন বেগম : হুশ সবাই থাম। আজ সবার অনেক ধকল গেছে সবাই ঘুমাতে যা। আর সিমরান , মিথিলা , শাম্মি তোরা মেঘ আর অরিন কি নিজেদের রুম দেখিয়ে দে। মেঘকে মেহতাব এর রুমে আর অহনাকে আহতাবের রুমে।
তারা ৩ জন মেঘ আর অহনা কে নিয়ে নিজেদের রুম এ দিয়ে চলে গেল।
মেঘ মেহতাবের রুমে ঢুকে চারিদিক পর্যবেক্ষণ করে বলে উঠলো,

মেঘ : বাহ! রুম টা তো অনেক সুন্দর। ছেলেদের রুম এতো পরিপাটি হয় নাকি? কিন্তু মেহতাব কোথায়?
এই সব ভাবতে ভাবতে পিছনে যেতেই কোনো এক দেহের সাথে পিঠ ঠেকলো মেঘের। পিছনে তাকাতেই সে রীতি মতো অবাক! মেহতাবকে ভালো করে এই প্রথম দেখলো কোনো কমতি নেই যেন! নিজেকে তার সাথে মাপতে গেলে কোনো অংশেই মানানসই নয়। উচ্চতা হবে হয়ত ৬ ফুট, গায়ের রঙ ধবধবে ফর্সা, চুলগুলো সিল্কি যা বাদামি আর কালো কালারের মিক্স, দীর্ঘ আঁখিপল্লব, ঠোঁটটা হাল্কা গোলাপি সব মিলিয়ে যেকোনো মেয়েকে পাগল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। রাস্তায় হাটলেও যেকোনো মেয়ে তাকে দেখে উস্ঠা খেয়ে পরবে নিশ্চিত।

মেহতাব : এই মেয়ে?
মেহতাব এর ডাকে মেঘ এর হুশ ফিরল।
মেঘের গলা থেকে যেনো কথা বের হচ্ছে না। রিনরিনিয়ে বলে উঠলো,
মেঘ : জ্বি বলুন?
মেহতাব : যাও ফ্রেশ হয়ে নেও।

মেহতাবের কথা শুনে মেঘ যেন আকাশ থেকে পরল। সে ভেবেছিল তাকে মেহতাব অনেক কটু কথা শুনাবে কারন এই বিয়েটা হঠাৎ হয়েছে। কেউই তার জন্য প্রস্তুত ছিলো না।
মেঘ : আপনার কিছু বলার থাকলে বলতে পারেন আমি কিছু মনে করব না।(মেহতাব এর দিকে তাকিয়ে)
মেহতাব : তুমি যদি ভেবে থাকো যে আমি তোমাকে অত্যা**চার করব কারন এই বিয়ে আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে হয়েছে। তাহলে তুমি ভুল ভাবছো। আমি মেয়েদের গায়ে হাত তুলি না বা তাদের সম্মান কে অপমান এর চোখে দেখি না।

মেঘ : আসলে আমি আপনার কাছে দুঃখিত আমার পরিবারের সম্মান বাচানোর জন্য আজ আপনাকে আমার মতো একটা অজানা, অচেনা মেয়েকে বিয়ে করতে হলো।
মেহতাব : IT’S NOT YOUR FAULT . SO , DON’T BE SORRY . যাও ওয়াশরুম এ গিয়ে চেঞ্জ করে নেও নাকি এগুলো পরে ঘুমাবে।
মেঘ : হুম, যাচ্ছি।

মেঘ ওয়াশরুমের আয়নায় নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।নিজেই নিজের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড়িয়ে বলে উঠলো,
মেঘ : কে বলেছে তুই সুন্দর না? মাশআল্লাহ! করো নজর যেন না লাগে।

তুমি এসেছিলে বলে পর্ব ২

মেঘ মেহতাব এর থেকে অতো সুন্দর না হলেও কম যায় না। গায়ের রং ধবধবে ফর্সা না হলেও ফর্সা , চুলগুলো অনেক সিল্কি কোমর পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে, গোলাপি ঠোট, ঠোঁটের বাম পাশে ছোট একটি তিল। যেকোনো পুরুষকে পাগল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

তুমি এসেছিলে বলে পর্ব ৪