প্রিয় পূর্ণতা পর্ব ২৯

প্রিয় পূর্ণতা পর্ব ২৯
তানিশা সুলতানা

আসমানে মেঘ জমেছে৷ বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। অন্ধকারে ছেড়ে আসছে চারিপাশ। কালো মেঘ গুলো ধেয়ে আসছে যেনো। ইতোমধ্যে বাতাস বইতে শুরু করেছে। টিনের চালের স্কুল বিধায় ঠাস ঠাসস শব্দ হচ্ছে গাছ থেকে ফল ডাল পড়ার। মিষ্টি এবং পূর্ণতার স্কুলর ছুটি হয়ে গিয়েছে।

বৃষ্টি আসার আগমন বার্তা শুনতে পেয়ে দুজনের মনই আনন্দে নেচে ওঠে। বছরের প্রথম বৃষ্টি। স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তারা বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি নামতে শুরু করলেই ওরাও নেমে পড়বে। এবং নাচতে নাচতে বাসায় যাবে। পূর্ণতা মাথা হতে হিসাব খুলে ফেলে। এবং সাদা ওড়না গায়ে জড়িয়ে নেয়। হাঁটু সমান লম্বা কেশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে পিঠ জুড়ে।
মিষ্টি তাকিয়ে থাকে। মনে মনে বলে

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“এমনি এমনি কি ইফতিয়ার চৌধুরী এবং অভিরাজ পাগল হয়েছে? মাশাআল্লাহ মাশাআল্লাহ। এই মেয়েটাকে দেখলেই হৃদয় শান্তি পায়। কি সুন্দর মুখ খানা।
আর আমি?

ওই তো শ্যামলা মুখখানা। ইফতিয়ার চৌধুরী যে আমার সাথে একটু কথা বলে এটাই তো অনেক”
মিষ্টির ভাবনার মাঝেই বৃষ্টির ফোঁটা জমিনে পড়তে থাকে। মুহুর্তেই ভিজিয়ে দেয় জমিনে অবস্থিত সকল কিছু। এক গাল হেসে মিষ্টি এবং পূর্ণতার নেমে পড়ে। কয়েক মুহুর্তে তারাও ভিজে জবুথবু হয়ে যায়। বড়বড় ফোঁটা পড়ছে। শরীরে বেশ অনুভব করা যাচ্ছে।
হেড মাস্টার জয়নাল হক পেছন থেকে ডাকতে থাকে ওদের। কিন্তু বৃষ্টির প্রবল স্রোতে ওদের কানে সেই ডাক পৌঁছায় না।

পিচ্ছিলি কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে পিচ ঢালা পাকা রাস্তায় উঠে পড়ে দুজন। এই রাস্তা হতে ইফতিয়ার চৌধুরীর কালো গোলাপের বাগানটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টির ফোঁটায় গাছ গুলো কেমন সতেজ হয়ে উঠেছে। পূর্ণতা নামটা চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। মৃদু হাসে পূর্ণতা। মিষ্টির হাত ধরে দৌড়াতে থাকে। বৃষ্টি যেনো ওদের এগোতে দিচ্ছে না। রাস্তায় পানি জমে যাচ্ছে।

হঠাৎ ওরা লক্ষ্য করে এক খানা কালো রংয়ের জিপ গাড়ি। বুঝতে বাকি নেই গাড়ি খানা অভিরাজের।
ওদের খুশি দ্বিগুণ বেরে যায়। আজকে অভির সাথে বৃষ্টি বিলাস করবে ওরা। গাড়ির কাছাকাছি যেতেই অভি নেমে পড়ে। বরাবরের মতো পূর্ণতার মনে হয় “পৃথিবীর সব থেকে সুদর্শন পুরুষটি তার স্বামী”
কথাটা লোক সমাজে উচ্চস্বরে বলে বেড়ালে নিশ্চয় সকলেই পাল্টা প্রতিবাদ করে বলবে
“ওই তো শ্যামলা গায়ের রং, চ্যাপ্টা সরু নাক, ছোটছোট বাদামি মনি যুক্ত দুটো চোখ, আর গাল ভর্তি দাঁড়ি, এখানে সুন্দরের কি পেলে? আইরন ছাড়া সাদা রংয়ের শার্ট, সাধারণ ঘড়ি এবং পায়ে বাড়িতে পড়ার চপ্পল, প্যান্টটাও আহামরি দামী নয়। এতো মুগ্ধ হও কেনো?

সুন্দর কাকে বলে এটা বুঝতে হলে ইফতিয়ারের দিকে তাকাও। চোখ জুড়িয়ে যাবে”
তার স্টাইল জামাকাপড়ে নজর দাও আলাদা সৌন্দর্য খুঁজে পাবে। বিলাসীতা কাকে বলে ইফতিয়ারের থেকে শেখো”
পূর্ণতা নিশ্চয় তখন জবাব দিতো “আমার চোখ দুটো খুলে নিজের চোখে লাগিয়ে দেখুন এই সাধারণ অভিরাজকে অসাধারণ লাগবে। তার সাধারণে মুগ্ধ হয়ে যাবেন”
“গাড়িতে ওঠো

হাসি মুখে আধার নেমে আসে মিষ্টি এবং পূর্ণতার। তারা গাড়ি করে যেতে চায় না। বরং অভিকেও সাথে নিয়ে ভিজতে ভিজতে বাড়ি ফিরতে চায়।
মিষ্টি দু পা এগিয়ে অভির হাত জড়িয়ে ধরে
“ দাভাই আমরা বৃষ্টি বিলাস করতে করতে যেতে চাই”
মিষ্টির কপালে পড়ে থাকা ভেজা ছোটছোট চুলগুলো কানের পেছনে গুঁজে দেয় অভি। মাথায় পাতা পড়েছিলো এক খানা সেটা ফেলে দেয় যত্নসহকারে। অতঃপর বলে

“ঠান্ডা লেগে যাবে।
পূর্ণতা বলে
“কিচ্ছু হবে না। আসুন তো
চাচা (অভির ড্রাইভারকে বলে) আপনি গাড়ি নিয়ে চলে যায়।
অগত্যা অভি আর বারণ করে না। বউ এবং বোনের ইচ্ছে পূরণ করাই তার গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
দুই হাতে দুজনের হাত ধরে পায়ে হেঁটে বাড়ির পথে পা বাড়ায়।
ইফতিয়ার ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় ফিরছিলো। তার পাশে ইরিন রয়েছে। বৃষ্টির কারণে ড্রাইভার ধীরে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছে।
তখনই ইফতিয়ারের নজর আটকায় রাস্তায়। ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে ওঠে তার।

“আপু দেখো ওই যে আমার পূর্ণতা
ইফতিয়ারের দৃষ্টি লক্ষ্য করে ইরিন তাকায়। খুব সহজেই চিনে নেয় পূর্ণতাকে৷ কেনোনা হাজার খানা ফটো দেখেছে পূর্ণতার। এক দম মুখস্থ হয়ে গিয়েছে ওই চোখ মুখ এবং চুল।
মনে মনে ইরিন কয়েকবার মাশাআল্লাহ আওড়ায়।
ইফতিয়ার মুখ এগিয়ে ভালো করে দেখতে থাকে।

“ও বৃষ্টিতে ভিজছে কেনো? আর অভিও এটা এলাও করছে? নির্ঘাত আজকে জ্বর আসবে। চোখ মুখ লাল হয়ে যাবে। মাথা ব্যাথায় ছটফট করবে।
কি করবো আমি আপু?
আমাকে জলদি ডাক্তার পাঠাতে হবে।
ভাইয়ের উত্তেজনা দেখে ইরিনের আঁখিদ্বয় ভিজে ওঠে। ইফতিয়ারকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে।
“ওর পাশে ওর স্বামী আছে ভাই। এতো উতলা কেনো হচ্ছিস? মেয়েটা আর তোর নেই।
এক মুহুর্তের জন্য ইফতিয়ার থমকায়। অতঃপর ঠোঁটের কোণে হাসি টেনে জবাব দেয়
“ ভুল বললে আপু

মেয়েটা কখনোই আমার ছিলো না। আমি তাকে সারাজীবন আমার মনে করে এসেছি। আর যতদিন বাঁচবো আমারই মনে করবো।
ভালোবাসলে পেতেই হবে এর তো কোনো মানে নেই।
তাই না
ইরিন জবাব দেয় না। পূর্ণতা দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়। ইফতিয়ার উঁকিঝুঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করে। কিন্তু দেখতে পায় না। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সিটে মাথা এলিয়ে দেয়। চোখ দুটো বন্ধ করে বলে

“ভালোই হইছে ওকে পাই নি। পেয়ে গেলে মায়া কমতো। এক সাথে থাকতে থাকতে বিতৃষ্ণা চলে আসতো হয় তো। এক পলক দেখার জন্য ছটফট করতাম না। একটু কথা শোনার জন্য দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতাম না।
ভালোবাসার মূল্য বুঝতে পারতাম না।
তুমি দেখো নিও আপু আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত পূর্ণতাকে ভালোবাসবো।

“একটা জীবন এভাবেই কাটাবি?
“নাহহ
পূর্ণতার নিশ্চিত একটা ভবিষ্যত গড়ে দিয়ে মিষ্টিকে বিয়ে করবো। তোমাদের সময় দিবো। সংসার করবো। বউ বাচ্চা নিয়ে সুখে থাকবো। আর মনের গভীরে খুবই যত্ন করে পূর্ণতাকে সাজিয়ে রাখবো।
হাসে ইরিন।

“ মিষ্টির সাথে কথা বলাবি কবে?
“কালকেই আসতে বলবো।
এখন আসতে বললে সে এখনই দৌড়ে চলে আসবে। পাগল কি না
“ তোর মতোই।

বাড়িতে ফিরতেই শিউলি বেগম দৌড়ে আসেন গামছা হাতে। মিষ্টিকে বকতে বকতে মাথা মুছিয়ে দিতে থাকে। মিষ্টিও বীণা বাক্যে মায়ের বকা শুনতে থাকে।
পূর্ণতা কিছুখন তাকিয়ে থাকে শিউলির মুখপানে। এই নিষ্পাপ মুখখানা দেখে কেউ বলতে পারবে না সে কখনো অপরাধ করতে পারে। শ্রেষ্ঠ মায়ের উপাধি তাকে সকলেই দিবে।
পূর্ণতা মনে মনে আল্লাহকে ডেকে বলে

“আল্লাহ মিষ্টিকে তার মা একটু ভালোবাসুক মন থেকে। মেয়েটা যে মা ছাড়া অসহায়।
নিজ কক্ষে যাওয়ার সময় পূর্ণতার সামনে পড়ে মনির। তৃক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে থাকে পূর্ণতাকে মাথা হতে পা পর্যন্ত। চোখে তার লালসার আগুন। মুখ দিয়ে যেনো লা লা ঝড়বে।
পূর্ণতা দাঁতে দাঁত চেপে বলে

“নজর ঠিক করুন। বলা তো যায় এমন দিন আসলো চোখই থাকলো না সাথে।
বলতে বলতে চলে যায়। মনির হাত মুষ্ঠিবন্ধ করে ফেলে। মনে মনে বিরবির করে
“তোকে বিছানায় না তোলা পর্যন্ত আমার শান্তি নেই”
পূর্ণতা এবং মিষ্টিকে বাড়িতে দিয়ে অভি বেরিয়েছে এবং বলেছে ফিরতে রাত হবে। পূর্ণতা বাড়তি প্রশ্ন করে নি।
রুমে প্রবেশ করতেই আজকেও নজর পড়ে ডাইরিখানা। পূর্ণতা তারাহুরো করে না। আগে ধীরে সুস্থে ভেজা কাপড় পাল্টে নেয়। তারপর তা বারান্দায় মেলে দিয়ে চুলে গামছা পেঁচিয়ে ডাইরিখানা তোলে
পৃষ্ঠা উল্টাতেই নজরে পড়ে গোটাগোটা অক্ষরে লেখা

“আমায় তুমি ক্ষমা করো
হৃদয়ে দিও ঠায়
এ জনমে না পেলেও তোমায়
পরজনমে যেনো পাই”
তাচ্ছিল্য হাসে পূর্ণতা। বিরবির করে কিছু আওড়ায় তবে স্পষ্ট শোনা যায় না। হাতে থাকা ডাইরিখানা অতি যত্নে লুকিয়ে রাখে পড়ার টেবিলে বইয়ের স্তুপে।
তখনই মধ্য বয়ষ্ক একজন মহিলা খাবার নিয়ে আসে পূর্ণতার কক্ষে। আশ্চর্য জনক বিষয় হলো সে কক্ষে প্রবেশের আগে অনুমতি নেয় নি। পূর্ণতা আজকেই প্রথমবার দেখছে মহিলাটিকে।
কৌতুহল দমাতে না পেরে ভ্রু কুচকে শুধায়

“আপনাকে ঠিক চিনলাম না।
মহিলাটি টি-টেবিলে খাবার নামিয়ে মাথার ঘোমটা টেনে জবাব দেয়
“ আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম মালেকা।
কালকেই বড় মালিক আমাকে কাজে রেখেছে আপনার দেখাশোনা করার জন্য।
পূর্ণতা মনে মনে সালামের জবাব দিয়ে আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করে।
“বড় মালিক? জমিদার সাহেব?
“আপনার স্বামী। এমপি সাহেব।
“ ঠিক আছে আপনি যান।
“খেয়ে নিবেন।
মহিলাটি চলে যায়। খিধে পেয়েছে ভীষণ। তাই সময় বিলম্ব না করে খেতে বসে পড়ে পূর্ণতা। গরুর মাংস এবং গরম গরম সাদা ভাত। দেখলেই জিভে পানি চলে আসে। খুশি মনে খেয়ে ওঠে পূর্ণতা।

গ্রামের ছেলেপেলেরা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে দাওয়াত করা হয়েছে অভিরাজকে। সন্ধ্যা ছয়টা হতে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। অভি পৌঁছেছে রাত আটটার দিকে। সকলেই হৈ-হুল্লোড় শুরু করে দিয়েছে। অভিকে দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছে বহু মানুষ। এই ভিড়ের মধ্যে রয়েছে সালামও। অভির বসার জন্য স্টেজ বানানো হয়েছে। সেখানে গিয়ে বসে অভি। তার পাশে গ্রামের মেম্বার এবং চেয়ারম্যানও রয়েছে। গোটা কয়েক পুলিশের দেখা মিলছে।

তখন একটা বৃদ্ধ লোক অভির সামনে আসে। কেঁদে কেঁদে হাত জোর করে নালিশ জানায়
“বাবা আমার মেয়েটা আজকে আটদিন যাবত নিখোঁজ। আমার মেয়েকে খুঁজে এনে দিন।।
পুলিশ বৃদ্ধকে ধরে স্টেজ থেকে নামায়। লোকটা আহাজারি করে কেঁদেই যাচ্ছে।
অভির চোখ মুখ অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। মাথা নুয়িয়ে গভীর ভাবে কিছু চিন্তা করে। অতঃপর দাঁড়িয়ে যায়।
সকলের উদ্দেশ্য সালাম প্রদান করে বলে

“আমাকে আপনারা যোগ্য ব্যক্তি ভেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। আপনাদের মূল্যবান ভোট প্রদান করে বিজয়ী করেছে। সমাজ সেবার সুযোগ করে দিয়েছেন। ইনশাআল্লাহ আমি আপনাদের নিরাশ করবো না। ভরসা রাখুন
সকলেই হাত তালি দিতে থাকে। সালাম তার পাশে বসে থাকা লোককে বলে
“ আমার পূর্ণর জামাই। কি সুন্দার না?
লোকটা তার পান খাওয়া দাঁত বের করে হেসে বলে
“তোর বাড়ি ঘর তুইলা দিছে এই জামাই?
“ হ

বাজারে আমারে দোকান দিয়া দিছে কাপড়ের। এহন রিকশা চালাইতে হয় না।
লোকটা বেশ প্রশংসা করে অভির।
অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে অভির নজর পড়ে সালামের পানে। সে হেসে স্টেজ থেকে নেমে এগিয়ে যায় শশুরের দিকে। সালাম বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। পরনে তার ছেঁড়া গেঞ্জি এবং রংচটা লুঙ্গি।
অভি গিয়ে জড়িয়ে ধরেন শশুরকে। ভালো মন্দ খবর জিজ্ঞেস করে হাত ধরে স্টেজে গিয়ে ওঠে এবং জোর গলায় সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় শশুর বলে। খুশিতে সালামের চোখে পানি চলে আসে।

পূর্ণতার চোখে ঘুম নেই। অভি না ফেরা ওবদি ঘুম আসবেও না। তাই রুম হতে বেরিয়ে ছাঁদের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।
লম্বা চুল গুলো হাত খোঁপা করে নিয়েছে। ছাঁদে ওঠার সিঁড়ির পাশেই মনার কক্ষ।
সেই কক্ষ হতে পরিচিত কন্ঠস্বর শুনে থেমে যায় পূর্ণতা। দরজায় হাত রাখতেই বুঝতে পারে দরজা খোলা। অতি সাবধানে অল্প ফাঁকা করে দরজায়। দৃষ্টি রাখে কক্ষের ভেতরে।
স্পষ্ট দেখতে পায় এবং শুনতে পায় অতি পরিচিত দুজন নরনারীর কথোপকথন। অতিরিক্ত অশ্লীল অবস্থা দেখে দ্রুত দৃষ্টি ঘুরিয়ে নেয়। দরজায় কান পেতে শুনতে থাকে তাদের কথা।

“ কতোদিন এভাবে লুকিয়ে রাখবো আমাদের সম্পর্ক? এভাবে চলছে না।
পুরুষটি মেয়েটার বক্ষবিভাজনে মুখ লুকিয়ে নেশালো কন্ঠে জবাব দেয়
“মিষ্টির বিয়েটা হয়ে গেলেই সবাইকে সবটা জানিয়ে দিবো।
মেয়েটা পুরুষটির চুলের ভাজে হাত লুকিয়ে আবেদনময়ী ভঙ্গিমায় আশকারা দেয় তাকে।
“আর দূরে থাকতে পারছি না জান। লুকিয়ে লুকিয়ে আর কতো? মিষ্টিকে নিয়ে এতো ভাবার কি আছে?
“ভুলে গেলে না কি? জমিদার বাড়ির সমস্ত সম্পত্তি মিষ্টির নামে। এখন ভুলভাল কিছু করলে আমার ছেলেরা বঞ্চিত হবে।

প্রিয় পূর্ণতা পর্ব ২৮

“ মে রে ফেললেই হয় মিষ্টিকে। ঝামেলা চুকে গেলো।
পুরুষটি জবাব দেয় না। মেতে ওঠে নারীর শরীরে। দুই হাতে মুখ চেপে চাপা স্বরে কেঁদে ওঠে পূর্ণতা। দৌড়ে চলে যায় ছাঁদে। হাঁটু মুরে বসে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। নালিশ জানায় আল্লাহর দরবারে
“আল্লাহ এই মানুষ গুলো বিচার করুন। কঠিন শাস্তি দিন এদের।

প্রিয় পূর্ণতা পর্ব ৩০