বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ২৬
জাওয়াদ জামী
আজ কায়েস গ্রামে রওনা দিবে। সে বাসে করে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু তাহমিদ তাকে একা ছাড়তে চায়নি, বিধায় নিজের গাড়িতে কায়েসকে পাঠাবে।
সকাল থেকেই কুহুর মন খারাপ। আজ প্রথমবারের মত মনে হচ্ছে, ও এই বাড়ির বউ। ইচ্ছে করলেই এখন বাবার সাথে গ্রামে যেতে পারবেনা। কিংবা ইচ্ছে করলেই যখন খুশি তখন ফুপুর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গ্রামে যাওয়া হবেনা।
একটা অদৃশ্য শেকলে আজীবনের জন্য বাঁধা পরে গেছে। একটা সংসারের অংশ এখন সে। যে সংসারের ওর কাছ থেকে দ্বায়িত্ব, কর্তব্য, ভালোবাসা পাওনা হয়েছে। এই পরিবারটাই এখন ওর সবকিছু। এই পরিবারের একজন পুরুষকে আবর্ত করেই চলবে ওর জীবন। সেই পুরুষই ওর ধূ ধূ জীবনে সঞ্জীবনীর সঞ্চার করেছে।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
সেই পুরুষটাই ওর প্রথম প্রেম। যে কুহুর শরীরের সাথে মনও ছুঁয়েছে। কিন্তু যাদের সাথে জীবনের উনিশটা বছর পার করে এসেছে, তাদের ছাড়া কুহু থাকবে কিভাবে! ছোট ভাই-বোন দুটো কুহু বলতে পাগল। শিহাব মাঝেমধ্যেই বলে, কুহুকে জড়িয়ে না ধরলে ওর ঘুম আসেনা। কুহু ঢাকায় আসার পরেও ছেলেটা ফোন করে কান্নাকাটি করেছে, ওর ঘুম আসছেনা বলে। এখন তো শিহাবকে একাই ঘুমাতে হবে। ঘুমন্ত ভাইয়ের মাথায় আর হাত রাখা হবেনা। ভাবতেই কহুর চোখে অশ্রুরা হানা দেয়।
” আমার বউ এভাবে মুখ গোমড়া করে আছে কেন? বাবা চলে যাবে তাই মন খারাপ? এভাবে মন খারাপ করেনা, বউ। ভর্তির ঝামেলা মিটে গেলে গ্রাম থেকে ঘুরে আসবে। আমি নিজে তোমাকে সেখানে নিয়ে যাব। এবার একটু হাস। ”
তাহমিদের কথা শোনামাত্রই কুহুর মনের মেঘ কেটে যায়। ও নিজেকে ছেড়ে দেয় তাহমিদের হাতে।
কায়েস আজ বিদায় বেলায় মেয়েকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদল। কুহুও তাই। কায়েসের বারবার মনে হচ্ছে মেয়েটাকে বুঝি খুব তারাতারি পর করে দিল। থাকত নাহয় আর কিছুদিন বাবার রাজকন্যা হয়ে। আবার পরক্ষণেই তাহমিদের দিকে তাকিয়ে মনটা খুশিতে ভরে উঠে। না সে তার মেয়েকে যোগ্য মানুষের হাতেই দিয়েছে।
” ভাগ্নে, আমার মেয়েটাকে তোমার কাছে রেখে গেলাম। ওকে একটু দেখে রেখ। আমার মেয়েটার অন্য কোনও চাহিদা থাকবেনা, আমি ভালো করেই জানি। তুমি শুধু ওকে একটু ভালোবাসা দিও, দেখবে আমার মেয়েটা তোমাকে চোখের মনি করে রাখবে। এর আগে এই বাসায় থেকেছে অন্য পরিচয়ে। কিন্তু আজ ওর পরিচয় সম্পূর্ণ আলাদা। ও যদি কোন ভুল করে তুমি ওকে বুঝিয়ে বল। আমার মেয়েটা জীবনে অনেক কষ্ট করেছে, ওকে আর কষ্ট পেতে তুমি দিওনা। ”
” মামা, তুমি নিশ্চিন্তে গ্রামে যাও। তোমার মেয়ে এখন আমার স্ত্রী। আর একজন স্বামী হিসেবে স্ত্রী’র সুযোগ-সুবিধা, সুখ-দুঃখ দেখার দ্বায়িত্ব আমার। আমি দ্বায়িত্ব পালনে কোন ত্রুটি করবনা। ”
” আমি জানি তোমাদের এখানে ওর কোন অযত্ন হবেনা। তবুও তো আমি একজন বাবা। যার মাথায় কখনো মায়ের ছায়া ছিলনা, মা’য়ের কাছ থেকে সংসার সম্পর্কে ধারনা পায়নি। সেই মেয়েটা হয়তো সংসারের অনেক কিছুই বুঝবেনা। আমার ভয় এখানেই। ”
” কায়েস, তুমি আমাকে আমার পরিবারের সবাইকে ভালো করেই চেন। তুমি এত ভয় পাচ্ছ কেন? কুহু আমার ছেলের বউ নয়। ও আমার মেয়ে। আর মেয়ে যদি ভুল করে, মা হিসেবে আমাকেই ওকে শোধরাতে হবে। ভুল আমরাও করেছি, আমার শ্বাশুড়ি তখন আমাদের শুধরে দিয়েছেন। শ্বাশুড়ির কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা আমরা ভুলভাবে প্রয়োগ করবনা। তুমি নিশ্চিন্তে বাড়ি যাও। এদিককার ঝামেলা মিটলে কুহু কয়দিন গ্রামে গিয়ে থেকে আসবে। ”
” আমি জানি আপা, আপনার মত শ্বাশুড়ি থাকতে আমার মেয়ের কোন সমস্যাই হবেনা। কিন্তু আজ মনটা মানছেনা। মেয়েটাকে রেখে যেতে কষ্ট হচ্ছে। ”
” এক কাজ কর, কায়েস। তোমরা ঢাকায় চলে এস। ছেলে-মেয়েদের এখানেই ভর্তি করিয়ে দাও। সবাই একসাথে থাকতে পারব। তখন তোমার এই মেয়েটাও চোখের সামনেই থাকবে। ওর জন্য তোমার চিন্তা করতে হবেনা। ” শফিউল রাশেদিন সহাস্যে কায়েসকে বললেন।
” দেখেছ শ্বশুর মশাই, আমার বাবা তোমার সমস্যার সমাধান কিভাবে করে দিল। বাসায় গিয়ে মামীর সাথে আলোচনা কর, তোমার বোনদের সাথেও আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই নাও। দৃষ্টি, শিহাবও ভালো স্কুলে পড়তে পারবে। আবার সবাই মিলেমিশে থাকতে পারবে। কি বড়মা, ঠিক বলেছিতো? ”
” তুই কখনো ভুল বলতে পারিস, বাপ? তবে ওরা গ্রামে ফিরেছে কিছুদিন হল। আগে সব বুঝে নিক। ব্যবসা, জমিজমা সব বুঝে নিয়ে, তারপর যা করার করবে। আমি কিংবা আমরা আমার ভাইয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাবনা। ”
” তুমি ঠিক বলেছ, বড় আপা। আগে ব্যবসা সামাল দিয়ে নিই। সারাজীবন সবকিছু আব্বাই দেখাশোনা করেছে। তাই আমার সব সামলাতে একটু অসুবিধাই হচ্ছে। ”
” মামা, আর দেরি করোনা। এখন রওনা না দিলে বাড়িতে পৌঁছাতে রাত হয়ে যাবে। ”
” হ্যাঁ ভাগ্নে, এখনই বের হচ্ছি। শফিউল ভাই, আপনি আপাকে নিয়ে বেড়াতে যাবেন। দুলাভাই, আমি বের হলাম। কুহুকে নিয়ে কিন্তু আপনি গ্রামে যাবেন। আমি অপেক্ষা করে থাকব। ”
” তোমার মেয়ে জামাই কুহুকে আমার সাথে পাঠালেই তবে নিয়ে যেতে পারব। কিন্তু যদি তোমার বোনকে নিয়ে যেতে বল, তবে সেই প্রতিশ্রুতি আমি তোমাকে দিতে পারব। ” সানাউল রাশেদিনের কথা শুনে কায়েস হেসে তাহমিদের দিকে তাকায়।
” জামাই বাবা, তোমাকে কি কিছু বলতে হবে? আমার দুলাভাই কিন্তু কুহুকে নিয়ে যেতেই পারে। ”
” তোমার কিছুই বলতে হবেনা। আমি আমার শ্বশুর বাড়িতে, সে তার শ্বশুর বাড়িতে যাবে। এতে কি কথা থাকতে পারে! তবে দিনশেষে দু’জনের গন্তব্য এক বাড়িতেই। এখানেও আমাকে না চাইলেও তার সহ্য করতে হবে। শ্বশুর বাড়িতে গেলেও না চাইলেও আমাকে সহ্য করতে হবে। ভদ্রলোকের কোথাও গিয়ে শান্তি নেই। তার কপালটাই আমিময়। ”
” কায়েস, তুই রওনা দে। এদের কথায় কান দিসনা। এদের কোন কাজ নেই, তাই একে-অপরকে খোঁ’চা’য়। সাবধানে যাবি। ঔষধ ঠিকমত খাবি। আর একমাস পর এসে তোর জামাইকে দেখিয়ে যাস। ” আফরোজা নাজনীন জানেন দু’জনের কথায় বাঁধা না দিলে তার ভাইয়ের যাওয়া হবেনা।
কায়েস সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে যায়।
কায়েস যাওয়ার পর পাঁচ দিন কেটে গেছে। শিউলি একটু আগেই কুহুকে ফোন করেছিল। আজ কয়েকদিন থেকে শিউলি প্রতিদিন নিয়ম করে একবার কুহুকে ফোন করে। আগেরমত রুক্ষভাবে কথা বলেনা। এতে অবশ্য কুহুর বেশ ভালোই লাগে। যে ছোটমা কখনোই কুহুকে সহ্য করতে পারেনি, সেই ছোটমা এখন ওর সাথে নরম স্বরে কথা বলে। অবশ্য শিউলি যতক্ষণ কথা বলে, বেশিরভাগই তাহমিদের প্রসংশা করে। কুহু বুঝতে পারে, ছোটমার বদলের পেছনে তাহমিদের পরোক্ষভাবে কোন হাত আছে। কুহু কয়েকবার তাহমিদকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছে। কিন্তু প্রতিবারই তাহমিদ শুধুই হেসেছে। কোন জবাব দেয়নি।
শাহনাজ সুলতানা দুপুরের খাবার রান্না করছেন। এমন সময় কলিংবেল বেজে ওঠে।
শাহনাজ সুলতানা ওড়নায় মুখ মুছে দরজার দিকে এগিয়ে যান।
” বাব্বাহ্ টুকটুকি, তুই এসেছিস! কি সৌভাগ্য আমার। যে মেয়ে পড়ার বাহানায় এদিকে পা মাড়ায়না, সেই মেয়ে আজ আমার বাসায়! ”
” উফ্ খালামনি, ভেতরেতো ঢুকতে দাও। এই ভর দুপুরে তেতেপুড়ে তোমার বাসায় আসলাম। আর তুমি আমাকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছ। ” সিক্তা ঠোঁট ফুলিয়ে বলল।
” ভুল হয়ে গেছে, টুকটুকি সোনা। আয় ভেতরে আয়। তা কি মনে করে, এই অসহায়ের বাসায় আসলি? ”
” আবার শুরু করেছ, খালামনি? আমি কি চলে যাব? ”
” আচ্ছা, আর বলবনা। তুই একটু বস, আমি তোকে শরবত করে দিচ্ছি। ” শাহনাজ সুলতানা সিক্তার হাত ধরে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসালেন।
” আমি শরবত খাবনা। আরোশি কোথায়, খালামনি? ”
” ও স্কুলে আছে। তুই কি কোথাও গিয়েছিলি? নাকি সরাসরি আমার এখানেই এসেছিস? ”
” এদিকে একটু কাজ ছিল। তাই এসেছিলাম। ” ইতস্তত করে জবাব দেয় সিক্তা।
” দুই মিনিট বস, মা। আমি শরবত নিয়ে আসছি। আর না হলে এক কাজ কর, চোখমুখে পানি দিয়ে আরোশির রুমে গিয়ে রেস্ট নে। আমি রুমেই শরবত নিয়ে যাচ্ছি। ”
” তুমি এত অস্থির হচ্ছ কেন, খালামনি! আমি এখন শরবত খাবনা। আচ্ছা খালামনি, আনান ভাইয়া কোথায়? ভার্সিটিতে গেছে নাকি? ”
” ও রুমেই আছে। ঘুমাচ্ছে বোধহয়। আজকে ভার্সিটিতে যায়নি। ”
” তুমি কি করছিলে? ” ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল সিক্তা।
” রান্না করছিলাম, মা। তুই কিন্তু আজ যেতে পারবিনা বলে দিলাম। ”
” থাকব কি-না বলতে পারছিনা, তবে দুপুরে তোমার হাতে খেয়েই তবে যাব। শোন খালামনি, তুমি রান্না কর। আমি তোমার ছেলের সাথে বোঝাপড়া করে আসি। তার সাথে কতদিন ঝগড়া করিনি। আমার মস্তিষ্ক শুধু ঝগড়া ঝগড়া করছে। আজ তোমার ছেলের খবর আছে। ” সিক্তা একরকম ঠেলে শাহনাজ সুলতানাকে রান্নাঘরে পাঠিয়ে দেয়।
শাহনাজ সুলতানা সিক্তার কথা হাসতে থাকেন। তিনি ভালো করেই জানেন, আনান-সিক্তার সম্পর্ক দা-কু’ড়া’লে’র ন্যায়।
আনান দরজা – জানালা বন্ধ করে শুয়েছিল। সিক্তা দরজায় ধাক্কা দিয়ে খুলতেই, অন্ধকার গ্রাস করল ওকে। ও হাতড়ে জানালার কাছে এসে দুইটা জানালার গ্লাস খুলে দেয়। মুহূর্তেই আলো এসে পুরো রুম আলোকিত করল। বিছানায় চোখ পরতেই দেখল, আনান খালি গায়ে উপুর হয়ে শুয়ে আছে।
” আম্মু, জানালা খুললে কেন! আমাকে একটু শান্তিতে থাকতেও দিবেনা। ” স্বগতোক্তি করল আনান।
” কে তোর মা? যাকে তাকে মা ডেকেই দাদার চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করবি? ”
পরিচিত গলার আওয়াজ পেয়েই চমকে উঠল আনান। এক ঝটকায় শোয়া থেকে উঠে বসল।
” তুই! ”
” কেন অন্য কাউকে আশা করেছিলি? ” সিক্তা ভেজা গলায় বলল। আনানের দিকে তাকিয়ে ওর বুক ধক করে ওঠে। চেহারার কি হাল করেছে!
” আমি তোর বড় ভাই। বড় ভাইকে তুই করে বললে খুব একটা ভালো দেখায়না। ”
” রাখ তোর বড় ভাই। এই তোর না আজকে পরীক্ষা ছিল? পরীক্ষা না দিয়ে তুই বাসায় কেন? ”
আনান সিক্তার কথার উত্তর না দিয়ে চুপ থাকে।
” কথা বলিসনা কেন? তুই ভাইয়াকে মিথ্যা বলেছিস? যে মানুষটা প্রতিদিন তোকে ফোন দেয়, তোর খোঁজ নেয়। তাকে তুই মিথ্যা বলেছিস? ” সিক্তার চোখে পানি।
” তুই আমার রুম থেকে বেরিয়ে যা। আমি ঘুমাব। ”
আনান বিছানায় পিঠ ঠেকাতেই সিক্তা এসে ওকে হ্যাঁচকা টানে তুলে বসাল।
” আমি কোথাও যাবনা। তুমি কি করবে? ”
” কিছুই করবনা। তোর ইচ্ছে করলে রুমে থাক। কিন্তু আমাকে বিরক্ত করিসনা। আমাকে ঘুমাতে দে। ”
” আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে, তুমি নাক ডেকে ঘুমাবে এটাতো আমি হতে দিবনা। ”
” কেন এসেছিস? ”
” নে’শা করছ নাকি আজকাল? চেহারা দেখে মনে হচ্ছে, জন্মের পর থেকেই গ’ঞ্জি’কা সেবন করে আসছ। ”
” আমার চেহারা নিয়ে আবার এত মাতামাতি কেন? আমি নে’শা করলে তোর কোন সমস্যা আছে? ”
” আছেই তো। আমার বাবার ছোট জামাই নে’শা করবে এটা কি মানা যায়! তাছাড়া আমি ফ্রেন্ডদের কি বলতে পারব, আমার জামাই নে’শা করে! আমার কি কোন সম্মান নেই! ” সিক্তা কাঁদছে আর নাক টানছে।
” কি বললি! আরেকবার বল। ”
” আগে চোখের পানি মুছিয়ে দাও। দেখছনা আমি কাঁদছি। চোখের সামনে নিজের প্রিয় মানুষকে কাঁদতে দেখেও এমন ক্যাবলার মত বসে আছ কেন? ” সিক্তা আনানের দিকে মুখ এগিয়ে দিয়ে বলল।
আনান বিশ্বাস করতে পারছেনা সিক্তার কথা।
” তুই সত্যি বলছিস! তোর চোখের পানি মুছিয়ে দিলে আবার ঝারি দিবিনাতো? ”
সিক্তা কোন কথা না বলে শুধু মাথা ঝাঁকায়।
আনান আনন্দে দিশেহারা হয়ে গেছে। ও এক সেকেন্ডে সিক্তাকে বুকে জরিয়ে নেয়। পরম যত্নে মুছে দেয় ওর চোখের পানি। এরপর ঠোঁট ছোঁয়ায় ওর কপালে।
” এই কয়দিন আমাদের বাসায় যাওনি কেন? জানো আমার কত কষ্ট হয়েছে? আজ মিথ্যা বলে বাসা থেকে বেরিয়েছি, শুধু তোমার জন্য। ”
” তোর সামনে গেলে যে আমার কষ্ট বাড়ত। তাই দূরে থেকেছি। কিন্তু কষ্ট আমার একটুও কমেনি। বরং বেড়েছে। ”
” বিয়ে করবে আমাকে? ”
” কখন? ”
” এখন। ”
” চল। তুই একটু বস। আমি ফ্রেস হয়ে তোকে নিয়ে কাজী অফিসে যাব। ”
” বাসায় বলতে পারবে? ”
” কেন পারবনা? আমার সাহস দেখতে চাস? তবে ড্রয়িংরুমে চল। তোর খালামনিকে বলছি। এরপর আমার শ্বশুরকে ফোন দিয়ে বলব। ”
” বুঝেছি, তোমার অনেক সাহস। কিন্তু আজ বিয়ে করতে হবেনা। আগে কয়দিন চুটিয়ে প্রেম করি। তারপর বিয়ে। ”
” চুটিয়ে প্রেম করার সুযোগ পাব? তুই তো খুলনা চলে যাবি। ”
” কে বলেছে, খুলনা যাব? আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি হচ্ছি। তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছিনা। আমি থাকবনা, এই সুযোগে অন্য মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করবে, এটা হতে দিবনা। ”
বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ২৫
” সত্যিই তুই খুলনা যাবিনা! ”
” নাহ্। তোমার চোখের সামনেই থাকব। ”
আনান কিছু না বলে সিক্তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।