বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৫৪

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৫৪
জাওয়াদ জামী

দৃষ্টি মেডিকেলের কেবিনের বিছানায় শুয়ে শূন্য দৃষ্টিতে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করে কেউ ওকে দেখলে ভাববে, মেয়েটা বোধহয় গভীর মনযোগ দিয়ে কিছু দেখছে।
নিহান অনেকক্ষণ ধরেই দৃষ্টিকে লক্ষ্য করছে। ও যে প্রায় পনের মিনিট যাবৎ দরজায় দাঁড়িয়ে আছে, তা দৃষ্টি এখনো বুঝতে পারেনি। নিহান অলস পায়ে দৃষ্টির দিকে এগিয়ে যায়। সরাসরি গিয়ে বসল দৃষ্টির মাথার পাশে। ওর মনের সমস্ত আবেগ নিয়ে, হাত রাখল দৃষ্টির মাথায়।

হঠাৎ কারো স্পর্শ পেয়ে দৃষ্টি ভয়ে কুঁকড়ে যায়। ভিতু চোখে তাকায় আগন্তুকের দিকে। নিহানকে ওর মাথার পাশে বসে থাকতে দেখল। দৃষ্টি কয়েক মুহূর্ত নিহানের দিকে তাকিয়ে থাকে। এরপর ও চোখ নামিয়ে পাশ ফিরে শোয়।
” দৃষ্টি, এভাবে আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিসনা। তুই তো ভালো করেই জানিস, তোর কিঞ্চিৎ অবহেলাও আমার অন্তর পু’ড়ি’য়ে ছা’র’খা’র করে দেয়। সব জেনেও মুখ ফেরানোর সাহস করতে পারছিস তুই!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আজকাল বোধহয় আমাকে ভয় পাচ্ছিসনা? শোন মেয়ে, হৃদয়হরনীদের এতটা সাহসী হতে নেই। তারা হবে কাদার মত নরম। তাদের যেভাবে ভালোবাসব, সেভাবেই তারা ভালোবাসায় সাড়া দিবে। ” নিহান দৃষ্টির সাথে সহজ আচরণ করছে। ও চাচ্ছে দৃষ্টি খুব তারাতারি ওর সাথে সহজ হোক। দৃষ্টির এই নীরবতা ওকে ভিষণ পো’ড়া:চ্ছে।

দৃষ্টি পাশ ফিরেই নিহানের কথা শুনে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। নিহানের মুখোমুখি হতে ওর ভিষণ অস্বস্তি লাগছে। ও কিভাবে নিহানের মুখোমুখি হবে! এই পঁচে যাওয়া শরীর নিয়ে কি কোন প্রেমিকের মুখোমুখি হওয়া আদৌ সম্ভব! কিন্তু নিহান কেন এখানে এভাবে পরে রয়েছে। তার তো পরীক্ষা চলছে? তবে কি সে পরীক্ষা দিচ্ছেনা? দৃষ্টি আর কিছু ভাবতে পারেনা। ওর জন্য সবাই কতটা অস্থির হয়ে আছে, সেটা ও বুঝতে পারছে। কিন্তু ওর করার কিছুই নেই।

” দৃষ্টি, তুই এবার আমাদের সাথে চিটাগং যাবি। তোকে নিয়ে অনেক জায়গায় ঘুরব। চিটাগংয়ের সৌন্দর্য দেখে দেখবি তুই সেই জায়গার প্রেমে পরে যাবি। তুই আর অন্য কোথাও যেতেই চাইবিনা। ”
তবুও দৃষ্টি নিশ্চুপ থাকে। ও কিছুতেই চায়না, ওর এই কলংঙ্কিত জীবনের সাথে নিহান জড়াক। নিহান আরও ভালো কাউকে ডিজার্ভ করে।

নিহান বুঝতে পারছে দৃষ্টি কাঁদছে। দৃষ্টির কান্না যেন ওর বুকে হাতুড়ি পেটাচ্ছে। ও আর কিছু না বলে চুপচাপ বসে থেকে, দৃষ্টির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকল।
প্রায় এক ঘন্টা পর নিহান কেবিন থেকে বেরিয়ে আসল। এখন আর সবাই মেডিকেলের করিডোরে ভীড় করেনা। তবে কেউনা কেউ সর্বদাই দৃষ্টির আশেপাশেই থাকছে।

প্রায় আটদিন থেকে তাহমিদ কোন রুগী দেখছেনা। ও সব সময়ই আইসিইউর সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। ঠিক যেমন এখন দাঁড়িয়ে আছে। ওর দৃঢ় বিশ্বাস, হঠাৎ একদিন কুহু জেগে উঠে ওকে চমকে দিবে। ও যদি এখানে না থাকে, তবে কুহু জেগে উঠে, তাহমিদকে না দেখলে নিশ্চয়ই অভিমান করবে। তাহমিদ চায়না ওর জন্য কুহুর মনে সামান্যতমও অভিমান জন্মাক। মেয়েটা এত যন্ত্রপাতির মধ্যে থেকে যেদিন বেরিয়ে আসবে, সেদিন নিশ্চয়ই তার পাশে ভালোবাসার মানুষটিকেই চাইবে। তাই তাহমিদ আইসিইউ’র সামনে থেকে এক পা ও নড়তে চায়না।

নিহান দৃষ্টির কেবিন থেকে বেরিয়ে সোজা তাহমিদের কাছে আসল। তাহমিদ তখন কাঁচের দরজা দিয়ে কুহুর দিকে একমনে তাকিয়ে আছে। নিহান এসে তাহমিদের কাঁধে হাত রাখল।
তাহমিদ পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখল নিহান সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটার চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। এখানে আসার আগে নিশ্চয়ই কেঁদেছে।

” দৃষ্টির সাথে কথা বলতে পারলি? কি বলল ও? ”
” না ভাই, আজও দৃষ্টি আমাকে দেখে মুখ ফিরিয়ে রেখেছিল। আমিই একা কিছুক্ষণ বকবক করেছি। কিন্তু ও আমার কথা শুনে কাঁদছিল। ” নিহান ম্লান হেসে বলল।
” তুই নিরাশ হবিনা। মেয়েটার ওপর দিয়ে যা গেছে, তাতে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। তুই কিন্তু হাল ছাড়বিনা। প্রতিদিনই ওর সাথে গিয়ে গল্প করবি। হোকনা সেটা একতরফা। হাল ছেড়ে দেয়া মানেই কিন্তু হেরে যাওয়া। আর তুই নিশ্চয়ই হারতে চাসনা? ”

” না ভাই, আমি হারতে শিখিনি। আর আমি হাল ছেড়ে দেয়ার পাত্রও নই। দৃষ্টি যতই মুখ ফিরিয়ে রাখুক না কেন, আমার ভালোবাসা দিয়ে ওকে আমি স্বাভাবিক করবই। ”
” নিহান, তুই এখানেই দাঁড়িয়ে থাক কেমন? আমি একটু আসছি। কোথাও যাবিনা কিন্তু। কুহু ঘুম থেকে উঠে যদি দেখে আমি নেই, তবে ওকে বলিস আমি আশেপাশেই আছি। ওকে মোটেও অভিমান করার সুযোগ দিবিনা। আমি দশ মিনিটেই আসছি। এই দশ মিনিট কুহুকে তোর জিম্মায় রেখে যাচ্ছি। ”

তাহমিদের পাগলামি দেখে নিহান অবাক চোখে তাকিয়ে রয়। একজন মানুষের মনে তার স্ত্রী’র জন্য কতটা ভালোবাসা থাকলে এমনভাবে ভাবতে পারে! যে মেয়েটা আটদিন ধরে কোমায় আছে, তার কি এই দশ মিনিটে আদৌ ঘুম ভাঙ্গবে? এ-ও কি সম্ভব!

দৃষ্টি এতক্ষণ কেঁদে কেঁদে চোখমুখ ফুলিয়ে ফেলেছে। মেয়েটার ফর্সা মুখ লাল হয়ে আছে। কেবিনে একজন নার্স সর্বদা ওর দেখভাল করছে। তাহমিদ কেবিনে ঢুকতেই নার্স মেয়েটি বেরিয়ে গেল। তাহমিদকে দেখেই দৃষ্টি চোখ বন্ধ করে ফেলল। তাহমিদ সেটা ঠিক দেখে ফেলেছে।

” দৃষ্টি, চোখ খোল। আমি জানি তুই জেগে আছিস। তোর সাথে কয়েকটা কথা বলতে চাই। এবং সেগুলো জরুরী। ”
তবুও দৃষ্টি চোখ খুললনা। আসলে ও নিজের লজ্জা চোখ বন্ধ করে লুকাতে চাইছে।
তাহমিদ দৃষ্টির পাশে বসে ওর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিল।

” আমি তোর বড় ভাই, দৃষ্টি। তাই আমার কাছে নিজেকে লুকিয়ে রাখিসনা। মানুষের জীবন চড়াই-উৎরাই অনেকবারই আসে। তাই বলে ভেঙে পরলে চলেনা। চড়াই-উৎরাই পার করে কিভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে, সেই পথটাই সর্বদাই খুঁজতে হয়। খুঁজতে খুঁজতে দেখবি সেই পথ তোর সামনে চলে এসেছে। এই যে গত আটদিন ধরে তুই এখানে আছিস, এতে কিন্তু তোর সাথে সাথে বাকি সবাই কষ্ট পাচ্ছে।

কিন্তু তাদের কষ্ট কখন বেশি হচ্ছে জানিস? যখন তুই তাদের দেখে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিস, তখন তাদের কষ্ট হচ্ছে। সবাই তোর মুখে হাসি দেখতে চায়। তোকে সুখী দেখতে চায়। তোর সুখেই এখন তাদের সুখ। একবার চিন্তা করে দেখেছিস, তুই কতগুলো মানুষের সুখের চাবিকাঠি? তোর মুখের এক চিলতে হাসি, সবার মুখে হাসি ফোটাবে। এই সুযোগ কেউ হাতছাড়া করে বলতো? আমি হলে এই সুযোগ নিমেষেই লুফে নিতাম। ” তাহমিদের কথা শুনে দৃষ্টি ডুকরে কেঁদে উঠল।

” ভাইয়া, এই নষ্ট শরীর নিয়ে আমার ভিষণ লজ্জা হচ্ছে। কারও মুখের দিকে তাকাতে গেলেই, কারও সাথে কথা বলতে গেলেই আমার মন বলছে, দৃষ্টি তুই পঁচে গেছিস। তোর শরীর পঁচে গেছে। এই পঁচা শরীর নিয়ে তোর কিসের এত আদিখ্যেতা? তখনই আমি আর সামনে এগোতে পারছিনা, ভাইয়া। ”

” কি বললি তুই? তোর শরীর পঁচে গেছে! মানুষের শরীর কখনো পঁ’চে’না’রে পাগলি মেয়ে। শুধু মাঝেমধ্যে ধুলাবালি লেগে নোংরা হয়। আর পরিষ্কার পানি দিয়ে শরীর ধুয়ে নিলে সেই নোংরা বিলীন হয়ে যায়। মনে রাখবি শরীর কখনো কারও পবিত্রতার সার্টিফিকেট দিতে পারেনা। তোর এই ছোট্ট জীবনে অনেক কিছু দেখার বাকি রয়ে গেছে। একটা দূর্ঘটনা তোর জীবনকে বদলে দিয়েছে। তারমানে এই নয় যে তুই এক জীবনে সবকিছু দেখে নিয়েছিস।

একটা কথা জেনে রাখ, একটা দুর্ঘটনা কখনোই কারও জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। রবং অনেক সময় বড় কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করে। এই যে তুই কারও সাথে কথা বলছিসনা, এটা কি ঠিক করছিস? তুই নিজের সাথে সাথে সবাইকে শাস্তি দিচ্ছিস। নিহান ছেলেটা তোর গলা শোনার জন্য ছটফট করছে। মামী তোর সুস্থতার জন্য দিনরাত জায়নামাজে বসে কাটাচ্ছে। তোর চিন্তায় মামা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে। এখন তুই যদি সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখিস, কেমন করে চলবে বলতো? ”

এতক্ষণে দৃষ্টির খেয়াল হল, এই কয়দিন আব্বু ওর কাছে আসেনি। ও এই কয়দিন শুধু নিজের দুঃখ বিলাসে মত্ত ছিল, তাই আব্বুর বিষয়টা ওর মাথায় আসেনি। আর আপু? সে-ও তো অসুস্থ হয়ে গেছিল? সে এখন কেমন আছে? আর শিহাব? এই মুহুর্তে দৃষ্টির নিজেকে স্বার্থপর মনে হচ্ছে। সত্যিই তো, ওর সাথে সাথে কতগুলো মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। ও চোখের পানি মুছে উঠে বসল।

” ভাইয়া, আব্বুর কি হয়েছে? আব্বু ভালো আছে তো? আর আপু। আপু কেমন আছে? আপু একবারও তো আমার কাছে আসলনা? ”
” মামার হার্টের সমস্যা বাড়ায় তাকে, এখানেই ভর্তি করা হয়েছে। আগের থেকে মামা এখন একটু ভালো আছে। আর তোর আপুও এখানেই আছে। তবে সে গত আটদিন থেকে ঘুমিয়ে আছে। তার ঘুম কবে ভাঙ্গবে কেউই জানেনা। ”

” ক..কি হয়েছে আপুর? আমি দেখেছিলাম র’ক্তে আপুর চারপাশ ভেসে যাচ্ছিল। কিন্তু আমার কিছুই করার ছিলনা। আপুর নিথর দেহ দেখা ছাড়া আমার কোনও উপায় ছিলনা। শিহাব অনেক ডাকল আপুকে, কিন্তু আপু সাড়া দেয়নি। ”
” সে আর কারও ডাকে সাড়া দেবে কিনা, তা আমরা কেউই জানিনা। তুই একবার ভাব, যার একটা মেয়ে কোমায়, আরেকটা মেয়ে জীবনে চরম আঘাত পেয়ে সবার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে , যার ছেলেও অসুস্থ, অস্বাভাবিক আচরন করছে।

সেই বাবা কি কখনোই ভালো থাকতে পারে? যদি তার একটা মেয়ে অন্তত সুস্থ, স্বাভাবিক থাকত, সে নিজেকে শান্তনা দিতে পারত। আমি যেখানে আমার সন্তানের আসার খবর না জেনেই, তার চলে যাওয়ার কথা শুনে দহনে পু’ড়’ছি। সেখানে সে তার সন্তানদের নিজ হাতে মানুষ করেছে, ছোট থেকে বড় হতে দেখেছে, তাদের মুখে বাবা ডাক শুনে কলিজা জুড়িয়েছে। সেই মানুষটা তার মেয়েদের এভাবে দেখে ভালো থাকতে পারে? ”

আজকে দৃষ্টির অবাক হওয়ার পালা। ওর অজান্তেই এত কিছু ঘটে গেছে! ওর সামনে বসে থাকা এই মানুষটা কত কষ্ট চেপে রেখে কথাগুলো বলছে, ভাবতেই দৃষ্টির কান্না পেল। আপু সন্তানসম্ভবা ছিল! সেই ছোট্ট প্রানটা দুনিয়ায় আসার আগেই ওর থেমে যেতে হল! আপু কোমায়! তাহমিদ ভাইয়া এতকিছু সহ্য করছে কেমন করে! দৃষ্টি আর কিছু ভাবতে চাইছেনা। ওকে আব্বুর জন্য হলেও স্বাভাবিক হতেই হবে। আম্মু হয়তো অনেক কষ্ট পাচ্ছে। তাকে আর কোন কষ্ট পেতে দেবেনা দৃষ্টি।

” ভাইয়া, আব্বুর কাছে আমাকে নিয়ে যাবে? আচ্ছা, আমাকে কবে রিলিজ দেবে? আমাকে কি আবার তোমরা গ্রামে পাঠিয়ে দেবে? ”
” তুই আমাদের সাথে থাকবি। মামা সুস্থ হলেই তাকে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দেব। তোকেও রিলিজ কালকেই দেবে। এরপর শুধু আমার বউয়ের সুস্থ হওয়ার পালা। চল তোকে মামার কাছে নিয়ে যাই। তবে শোন, তার সামনে গিয়ে একটুও কাঁদবিনা। আমি বলেছিনা, তুই-ই সকলের সুখের চাবিকাঠি। মনে থাকবে? ”

” থাকবে, ভাইয়া। আমি আব্বুর সামনে গিয়ে একটুও কাঁদবনা। ”
” আয় আমার হাত ধর। আমি তোকে ধরে নিয়ে যাব। আমি এখানে এসেছি দশ মিনিটের বেশি হয়েছে। নিহানের কাছে আমি দশ মিনিট সময় চেয়েছিলাম, আমার বউকে পাহারা দিতে। তোকে মামার কাছে পৌঁছে দিয়েই আমি আমার বউয়ের কাছে যাব। আর তুই নিহানের সাথে তোর কেবিনে যাবি। নিহানের সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলবি। ছেলেটা এই কয়দিন অনেক কষ্ট পেয়েছে। ওকে আর কষ্ট পেতে দিসনা। ”

” ভাইয়া, তোমার সব কথা আমি শুনব, শুধু নিহান ভাইয়ার সাথে আমাকে কথা বলতে বলোনা। আমি চাইনা আমার জন্য ভাইয়া তার জীবন নষ্ট করুক। সে আরও ভালো কাউকে ডিজার্ভ করে। ”
” তোকে না পেলেই ওর জীবন নষ্ট হবে। আর তুই-ই ওর যোগ্য। তুই নিশ্চয়ই চাইবিনা, একটা ছেলে তোর জন্য ধুঁকে ধুঁকে ম’রু’ক? তোকে না পেলে নিহান জ্যান্ত লা’শ হয়ে বেঁচে থাকবে। এই বিষয়ে আর কোনও কথা হবেনা। আমি তোকে মামার কাছে পৌঁছে দিয়ে, নিহানকে সেখানে পাঠিয়ে দেব, তুই ওর সাথে কথা বলবি, ঠিক আছে? ”

দৃষ্টি তাহমিদের কথা অমান্য করলনা। সায় দিল ওর কথায়। সবাই ওর জন্য এত ভাবছে! ওকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে চাইছে! দৃষ্টি ভাবে সবাই এত ভালো কেন?
তাহমিদ দৃষ্টিকে তার বাবার কাছে নিয়ে যায়।
কায়েস কেবিনের বেডে শুয়ে আছে। তার শরীর শুকিয়ে গেছে। চোখের নিচে কালি পরেছে। নার্স তার প্রেশার চেইক করছিল।

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৫৩

তাহমিদের সাথে দৃষ্টিকে দেখে কায়েসের দুচোখ পানিতে ভরে গেল। কয়েকদিন পর সে তার মেয়েকে দেখছে। দৃষ্টি গুটি গুটি পায়ে এসে বাবার পাশে বসল।
তাহমিদ কায়েসকে চোখের ইশারায় কিছু বলে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল।

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৫৫