বুকে যে শ্রাবণ তার সিজন ২ পর্ব ৪

বুকে যে শ্রাবণ তার সিজন ২ পর্ব ৪
নিশাত জাহান নিশি

“তোমার প্রশংসা না করে পারছিনা সামান্তা। এক ঢিলে কিভাবে দুই পাখি শিকার করতে হয় তা তোমার কাছ থেকেই শিখা উচিৎ। কিন্তু আমি ভাবছি মিশাল? মিশাল যদি আমাদের প্ল্যান ধরে ফেলে?”
মুহূর্ত কয়েক ভাবল সামান্তা। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস রাখল। প্রবল মনোবল নিয়ে বলল,

“মিশাল ভাইয়ার ব্যাপারটা না হয় আমি বুঝে নিব। তুমি ঐদিকটা সামলে নাও। তাদের দুজনকে নিরাপদে রাখার দায়িত্ব কিন্তু তোমার। যেকোনো সময়ে তোমাদের প্রয়োজন পরতে পারে। সো বি এলার্ট এন্ড কেয়ারফুল।”
“ওকে। তুমি এই ব্যাপারে কোনো টেনশন নিওনা। আপডেট দিতে থাকো আমায়। তোমার যেকোনো প্রয়োজনে আমরা সঠিক সময়ে হাজির হয়ে যাব।”
“ওকে, ভাইয়া। টেইক কেয়ার অফ ইউরসেলভস।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

কলটি কেটে সামান্তা স্বস্তির শ্বাস ফেলল। তবে নিজেকে বিশ্রাম দিলোনা। নতুন উদ্যমে পুনরায় কারো নাম্বারে ডায়াল করতে ব্যস্ত হয়ে পরল। উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠলেন মিজানুর রহমান। সামান্তার পাশে এসে বসলেন। চিন্তিত গলায় বললেন,
“ঐদিকে সব ঠিকঠাক আছে তো? আমরা কিন্তু এই অভিনয়টা বেশি সময় ধরে চালিয়ে যেতে পারবনা। যা বুঝলাম সাহিলের এই সাজানো মৃত্যুতে সবার আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে এলাকাবাসীদের। তাদের তোপের মুখে পরতে পারবনা। সো যা করার তাড়াতাড়ি কর।”

পেরেশান সামান্তা। বেশ উদগ্রীব গলায় বলল,
“আমি জানি বাবা। ওখানকার সব দায়িত্ব যেহেতু আমি আব্রাহাম খানের ওপর ছেড়ে দিয়েছি সো তাঁকে একবার কল করে জানতে হবে ওখানকার খবর কি। আমার মনে হয় তিনি আমাদের চেয়েও বেশি সতর্ক ও দায়িত্বশীল। নিশ্চয়ই খুব শীঘ্রই কোনো একটা সুরাহা হবে।”

ব্যতিব্যস্ত ভঙ্গিতে আব্রাহাম খানের নাম্বারে কল করল সামান্তা। দশদিনের এতো নাটকীয়তার পর সমাপ্তিতে এসে কোনোরকম গন্ডগোল চাচ্ছেনা সে। ভালোয় ভালোয় সবকিছু মিটে গেলেই শান্তি। যতক্ষণ অবধি তাদের প্ল্যান সাকসেসফুল না হবে ততক্ষন অবধি শান্তি মিলবেনা কারো। এভাবে সবাইকে অশান্তির মধ্যে রেখে সামান্তা নিজেও স্বস্তি পাচ্ছেনা। যেখানে প্ল্যান কার্যকরেরও একটি ব্যাপার রয়েছে। সামান্তা চাইছেনা তার প্ল্যান ফ্লপ হয়ে যাক! দু-তিনবার কলটি বেজে যাওয়ার পর পরিশেষে কলটি তুললেন আব্রাহাম খান। বিচলিত স্বরে সামান্তা হ্যালো বলতেই আব্রাহাম খান বেশ চটপটে গলায় বললেন,

“বি কুল সামান্তা। তুমি এতো ঘাবড়ে যাচ্ছ কেন? আমি তো আছি নাকি? এখানকার সব ঠিকঠাক আছে। আমি এখন থানায় যাব। তোমরাও চলে এসো। মিশাল আমার সাথেই রয়েছে। ভাবছি তাকে নিয়ে আমি একেবারে থানায় চলে যাব। আর তোমরা ওখান থেকে সবাই মিলে থানায় চলে এসো। মনে তো হচ্ছে আজই টুটুল চৌধুরীর দ্য ইন্ড হবে!”
“ওকে বাট ঐ বেওয়ারিশ লাশটার কি করবেন?”

“লাশটা অলরেডি গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়েছে। মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তরুন চৌধুরী খুব ঝামেলা করছিলেন। বললাম উপর মহল থেকে অর্ডার এসেছে লাশটিকে এখনি মর্গে নিয়ে যেতে হবে। কিছুতেই মানছিলেন না তিনি। এরপর নিজেই বলল থানায় যাবেন তিনি। উপর মহলের সাথে কথা বলবেন। ভাবলাম আসুক না একবার থানায়, টুটুল চৌধুরীর পর্দা ফাঁস হওয়াটা একটু দেখুক!”

হু হা করে হাসতে লাগলেন তিনি। শুকনো মুখ সামান্তার, বিবর্ণ ঠোঁট, সেই ঠোঁটে কোনো হাসি নেই। সে এখনও শঙ্কায় রয়েছে। কারণ, টুটুল চৌধুরীকে ধরা চাট্টিখানি কথা নয়। আগের বারও এমন হয়েছিল। সব প্রমাণ জোগাড় করে যাওয়ার পথেই টুটুল চৌধুরীর ষড়যন্ত্রে তাদের সমস্ত প্ল্যান মাঠে মারা গিয়েছিল। সেই অ্যাক্সিডেন্টে জারিফের জীবন হারাতে হয়েছিল, সামান্তার মুখের একপাশ থেতলে গিয়েছিল, লাবিবের সমস্ত শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ্’র রহমত ছিল বিধায় তারা দুজন বেঁচে ফিরতে পেরেছিল। নয়তো তারাও সেদিন জারিফের সাথে পিচঢালা রাস্তায় পিষে যেতো। সেদিনকার সেই লোমহর্ষক ঘটনার কথা ভাবতেই সামান্তার চোখেমুখে অস্থিরতা কাজ করতে লাগল। গাঁ শিওরে ওঠল। আতঙ্কিত হয়ে ওঠল সে। হরদমে শুকনো ঢোঁক গিলতে লাগল। ফুঁপিয়ে ওঠে কাঠ কাঠ গলায় বলল,

“স্যার প্লিজ। মিশালকে নিয়ে আপনি আলাদা গাড়িতে ওঠুন। ঐ মানুষটার জীবন আমি আর রিস্কে ফেলতে পারবনা। আমি তার জীবন ভিক্ষা চাইতে চাইতে উপর ওয়ালাকে বিরক্ত করে ফেলেছি, আর বিরক্ত করতে চাইনা প্লিজ। এবার হয়তো উপর ওয়ালা আমার ওপর নারাজ হয়ে যাবেন।”

“ওহ্ কাম অন সামান্তা। আগের বার যা হয়েছে এবার তা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। টুটুল এবার আর কোনো চাল চালতে পারবেনা। তবুও তোমার মনের শান্তির জন্য আমরা আলাদা গাড়িতে করেই যাব। চিন্তা মুক্ত থাকো তুমি ওকে? তোমরাও কুইকলি চলে এসো থানায়। আর সময় নষ্ট করোনা।”

ঝটপট করে কলটি কেটে দিলেন টুটুল চৌধুরী। মিশাল কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে তার সূক্ষ্ণ ও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আব্রাহাম খানের কারসাজি দেখছিল। আর কিছু সময় অন্তর অন্তর সিগারেটে ফুঁক দিচ্ছিল। আব্রাহাম খানকে বেশ সন্দেহ হচ্ছিল তার। সেই সন্দেহ থেকে মিশাল দু’কদম এগিয়ে এলো আব্রাহাম খানের দিকে। নাক-মুখ থেকে ধোঁয়া নিঃসরণ করে কঠিন গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,

“ঐটা সাহিলের লাশ নয় তাইতো?”
রহস্যাত্নক হাসলেন আব্রাহাম খান। মিশালের মাথায় টোকা মেরে বললেন,
“সিক্স সেন্স ভালো তোমার। যাই হোক, চলো আমরা গাড়ি খুঁজি। বলছি কি তোমার মতো ভাগ্যবান পুরুষ মানুষ পৃথিবীতে খুব কমই আছে। জীবন নষ্ট করার এই নিষিদ্ধ নগরীতে অন্তত কেউ তো একজন আছে যে তোমার জীবন সাজাতে এসেছে! সৃষ্টিকর্তা কিন্তু পৃথিবীতে এমন ভাগ্য দিয়ে খুব কম মানুষকেই পাঠায়। এই প্রথম কারো ভাগ্য নিয়ে আমার খুব জেলাস ফিল হচ্ছে।”

হাত থেকে সিগারেটটি ছুড়ে ফেলে দিলো মিশাল। বিরক্তবোধ করল সে! কপাল ঘঁষে অসহ্যকর গলায় বলল,
“স্যার প্লিজ। সামান্তার প্ল্যানটা আমাকে খুলে বলুন! কি করতে চাইছে সে?”
“উঁহু। এখন তো এতোকিছু বলা যাবেনা ইয়াং ম্যান। টুইস্ট জানতে হলে আমার সাথে যেতে হবে।”
পুলিশের জীপে তোলা সাহিলের লাশের পাশে তরুন চৌধুরী ও নাজিয়া চৌধুরী বসলেন। ছেলের শোকে তরুন চৌধুরী পাথর হয়ে গিয়েছেন প্রায়। আড়চোখে নাজিয়া চৌধুরী একবার আব্রাহাম খানের দিকে তাকালেন। বুড়ো আঙুল উঠিয়ে তিনি গুড পারফর্মেন্স বুঝিয়ে মুচকি হাসলেন! জীপটিকে ফলো করে একটি সি.এন.জি ভাড়া করে মিশাল ও আব্রাহাম খান চললেন থানার উদ্দেশ্যে।

বদ্ধ রুম। রুমের মাঝখানে একটি টেবিল। টেবিলটিে দুইপাশে দুইটি চেয়ার এবং মাঝ বরাবর একটি লাইটের ব্যবস্থা করেছে। টিমটিমে আলো বিরাজ করছে রুমটি জুড়ে। ডি.আই.জি স্যারের মুখোমুখি বসে আছেন টুটুল চৌধুরী। পাশেই মাথা নুইয়ে দাড়িয়ে রয়েছেন আব্রাহাম খান। আশ্চর্যের বিষয় হলো সাহিলের গাড়ির সাথে সংঘর্ষ হওয়া ট্রাক ড্রাইভারটি পুরো অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন টুটুল চৌধুরীর সামনে।

ভয়ে বুক কাঁপছে টুটুল চৌধুরীর। ঘণ্টা কয়েক পূর্বেই তো তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হসপিটালে দেখেছিলেন টুটুল চৌধুরী। কিন্তু এখন তো জলজ্যান্ত ও সুস্থ অবস্থায় লোকটি তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অনবরত ঘাম ঝরছে টুটুল চৌধুরীর গাঁ বেয়ে। শঙ্কিত দৃষ্টি ফেলে তিনি একবার ডি.আই.জি স্যারের দিকে তাকাচ্ছেন তো একবার আব্রাহাম খানের দিকে তাকাচ্ছেন! কিছু একটা অনর্থ ঘটবে আজ তার আংশিক হলেও তিনি আঁচ করতে পারছেন।

টুটুল চৌধুরীর আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থা দেখে জাদরেল ডি.আই.জি স্যার বেশ আয়েশ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলেন। ব্যগ্র হেসে তিনি ট্রাক ড্রাইভারটিকে বললেন,
“তো ওসমান সাহেব বলুন? কার নির্দেশে আপনি মিস্টার সাহিলকে গাড়ি চাঁপা দিয়েছিলেন?”
কোন প্রকার বিচলিত না হয়ে ওসমান সাহেব ডি.আই.জি স্যারের চোখে চোখ রাখলেন। বেশ সাহস নিয়ে শক্ত গলায় বললেন,

“টুটুল স্যারের নির্দেশেই আমি সাহিল সাহেবকে গাড়ি চাঁপা দিয়েছিলাম স্যার! এর আগেও আমি উনার নির্দেশেই পুলিশের একটি জীপকে চাঁপা দিয়েছিলাম। সেখানে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। টাকার লোভে আমি অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম স্যার। দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। মায়ের কসম খেয়ে বলছি স্যার আর কখনও আমি এসব ধরনের কাজ করবনা। এই শেষবারের মতো আমাকে ক্ষমা করে দিন।”
তাৎক্ষণিক উত্তেজিত হয়ে টুটুল চৌধুরী চেয়ার ছেড়ে ওঠে গেলেন! ওসমান সাহেবের শার্টের কলার চেপে ধরলেন। ঝাঁজালো গলায় বললেন,

“এই? তুই মিথ্যে বলছিস কেন? আমি কবে, কখন তোকে এসব করতে বলেছিলাম? কে তোকে আমার বিরুদ্ধে বলতে হায়ার করেছে বল? কি ভেবেছিস আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোরা পাড় পেয়ে যাবি? এতো সহজ?”
“আরে স্যার কি করছেন? মরে যাবো তো আমি। প্লিজ ছাড়ুন।”
ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠলেন ডি.আই.জি স্যার। তাঁর সামনে এমন বেয়াদবি? তাৎক্ষণিক আব্রাহাম খানকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বললেন,

“এই আব্রাহাম। থামাও টুটুলকে। প্রমাণ ছাড়া আমি তাকে এখানে ডাকাইনি। তাকে ভদ্রভাবে বসতে বলো। আমাকে ক্ষেপাতে বারণ করো। এতে কিন্তু সে তার নিজেরই বিপদ ডেকে আনবে।”
বহুকষ্টে হাতাহাতি করে আব্রাহাম খান অবশেষে টুটুল চৌধুরীর থাবা থেকে ওসমান সাহেবকে রক্ষা করতে সক্ষম হলেন। একটানে টুটুল চৌধুরীকে চেয়ারে বসিয়ে দিলেন তিনি। দাঁতে দাঁতে চেপে বললেন,

“দয়া করে ডি.আই.জি স্যারের সামনে কোনো বেয়াদবি করবেন না। তিনি আপনার জুনিয়র নন, যেভাবে খুশি সেভাবে তাঁর সাথে আচরণ করতে পারবেন। তিনি আপনার, আমার এবং আমাদের ডিপার্টমেন্টের সবার সিনিয়র। সো আচার আচরণে একটু পরিবর্তন আনুন।”
“তুই আমাকে আচার-আচরণ শিখাবি? তোর কাছ থেকে এখন আমার উপদেশ শুনতে হবে? সুযোগে পেয়ে সৎ ব্যবহার করছিস?”

শান্ত হওয়ার চেষ্টা করলেন টুটুল চৌধুরী। কয়েক দফা রুদ্ধশ্বাস ফেলে তিনি ডি.আই.জি স্যারের হিংস্র চোখে কোমল দৃষ্টি রাখলেন। ধীর গলায় বললেন,
“দেখুন স্যার। এই ট্রাক ড্রাইভার যা বলছে সব মিথ্যে বলছে। আমাকে ফাঁসানোর জন্য বলছে। তার সাথে এর আগে আমার কখনও দেখা হয়েছে কিনা তা নিয়েই তো আমি সন্দিহান। যদি তার কথা সত্যি হয় তো তাকে প্রমাণ দেখাতে বলুন! কারো মুখের কথার ওপর ডিপেন্ড করে আপনি আমাকে জেরা করতে পারেন না।”

আব্রাহাম খানের দিকে তাকালেন ডি.আই.জি স্যার। গম্ভীর গলায় বললেন,
“শোনাও তবে কল রেকর্ডিংটি! কাল রাতে এই ট্রাক ড্রাইভারের সাথে টুটুলের যা যা কথোপকথন হয়েছে শোনাও সব।”

ক্রুর হাসলেন আব্রাহাম খান। ওসমান সাহেবের ফোনটি নিয়ে কল রেকর্ডিং অন করলেন। যেখানে দুজনের মধ্যে সুস্পষ্ট কথোপকথন হচ্ছিল কিভাবে সাহিলকে ট্রাক চাপা দিয়ে মা’র’তে হবে! উত্তেজনায় ঘাম ঝরতে লাগল টুটুল চৌধুরীর। ঢকঢক করে পানি গিলতে লাগলেন তিনি। বুঝতে বেশি বেগ পেতে হলোনা সাহিলও এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত! কারণ, গতকাল রাতে তারা দুজন একসাথে বসে বিয়ার গিলছিল! নেশায় বুদ হয়ে গেলে টুটুল চৌধুরীর মাথা ঠিক থাকেনা। তখন তাকে যা করতে বলা হবে তখন সে তাই করবে। খটকা লেগে গেল টুটুল চৌধুরীর। আব্রাহাম খানের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ফেললেন তিনি। গুরতর গলায় প্রশ্ন ছুড়লেন,

“ঐটা কি সত্যিই সাহিলের লাশ ছিল?”
কথাটি বলেই তিনি ঝট করে চেয়ার ছেড়ে ওঠে দাঁড়ালেন। টুটুল চৌধুরীর সন্দেহকে প্রশ্রয় দিলেন না আব্রাহাম খান। এতে তাদের প্ল্যান চোপাট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শতভাগ। এখনই মোক্ষম সময় টুটুল চৌধুরীকে চেপে ধরার। সঙ্গে সঙ্গেই টুটুল চৌধুরীকে রাগিয়ে দেওয়ার চাল চাললেন তিনি। চোয়াল উঁচিয়ে টুটুল চৌধুরীকে শাসিয়ে চিৎকার করে বললেন,

“হ্যাঁ ওটা সাহিলেরই লাশ ছিল! খু’ন করেছেন আপনি সাহিলকে। শুধু সাহিলকেই নয়, সেইদিনের সেই দুর্ধর্ষ অ্যাক্সিডেন্টটি আপনার কারণেই হয়েছিল। আপনিই হলেন জারিফের খু’নি! মিশালকে ফাঁসানোর সমস্ত চক্রান্ত আপনার ছিল। প্রাক্তন ডি.আই.জি স্যারের সাথে সামিল ছিলেন আপনি। তার ভাগ্নেকে বাঁচাতে গিয়ে আপনি মিশালকে ফাঁসিয়েছিলেন সেদিন। সামান্তা ও লাবিবের হাফ মার্ডারের প্ল্যানটিও আপনারই ছিল। দু- দুজন জলজ্যান্ত মানুষকে খুন করেছেন আপনি। দুটো হাফ মার্ডার করছেন! খু’নি, খু’নি খু’নি আপনি। একজন জাত খু’নি।”

আগুনে ঘি ঢেলে দিলেন আব্রাহাম খান। এবার দেখার পালা আগুন কতখানি তাঁতলো। উত্তেজনার বশে টুটুল চৌধুরী আক্রোশভরা গলায় বিরামহীনভাবে বলতে শুরু করলেন,

বুকে যে শ্রাবণ তার সিজন ২ পর্ব ৩

“হ্যাঁ। আমি খু’ন করেছি জারিফকে! সেদিন আমার প্ল্যানের কারণেই জারিফের খু’ন হয়েছিল। সামান্তা ও লাবিব আ’হ’ত হয়েছিল। কিন্তু আমি সাহিলকে খু’ন করিনি! গত কাল রাতেও আমরা একসাথে বসে ড্রিংকস করেছিলাম! সাহিলকে আমি সত্যিই খু’ন করিনি।”

বুকে যে শ্রাবণ তার সিজন ২ পর্ব ৫