বুকে যে শ্রাবণ তার সিজন ২ পর্ব ২

বুকে যে শ্রাবণ তার সিজন ২ পর্ব ২
নিশাত জাহান নিশি

“কেন আমার সাথে এমন করলে মাবুদ কেন? কেন আমাদের জীবনটাকে এভাবে ধ্বংস করে দিলে? একজনকে রাস্তায় রাস্তায় কুকুরের মতো ঘুরাচ্ছ। আর আমাকে বানালে তার কাছে পৃথিবীর নিকৃষ্ট নারী! আমি তো এমন জীবন চাইনি মাবুদ। এতো বড়ো এক্সিডেন্টের পরেও সেদিন কেন আমার মৃত্যু ঘটলনা? কেন আজও আমাকে বেঁচে থেকেও মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটছট করতে হচ্ছে? কেন?”

সাদা কাফনের কাপড়ে মোড়ায়িত সাহিলের মরদেহ। অবশ্য সাদা কাফনের কাপড়টি এখন আর সাদা নেই। তার শরীর থেকে নিঃসরিত হওয়া টাটকা রক্তে ইতোমধ্যেই তা গাঢ় গভীর লাল বর্ণ ধারণ করেছে! ইশ, কি ভয়ঙ্কর মৃত্যু, বিভৎস দেহ! শরীর শিরশিরিয়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট। হলফ করে বলা যায় তার লাশের দিকে একবার একজন সুস্থ মানুষও যদি তাকায় না, রাতারাতি অসুস্থ হয়ে পরবে। পাড়া-পড়শী ও আত্নীয়-স্বজনরাও তাকাতে পারছেনা তার কাঁটাছেঁড়া লাশের দিকে। তবে ভীড় জমিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে ঠিকই। যতো যাই হোক, ব্যথীত হয়ে তো শোক উদযাপন করতে হবে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

লাশের আশপাশ জুড়ে ছেলেহারা মা-বাবার তীব্র আর্তনাদ ও আহাজারি বিবর্ণভাবে ফুটে ওঠছে। বুক চাপরে গত হয়ে যাওয়া ছেলেকে ডাকছেন নাজিয়া চৌধুরী। সে কি করুন আকুতি। চোখে দেখা যাচ্ছেনা এই মর্মান্তিক দৃশ্য। তাঁর এহেন হৃদয়বিদারক আকুতিতে যেনো স্বয়ং উপর ওয়ালা ও এখন নিচে নেমে আসবেন! ক্ষণে ক্ষণে গলা শুকিয়ে আসছে তাঁর।

নাজিয়া চৌধুরীকে সামলাতে গিয়ে তরুন চৌধুরীও রীতিমত ভেঙে পরেছেন। সন্তান বিয়োগের কষ্ট যে তাঁকেও কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। সীমাহীন যন্ত্রণা বুকে লালন করছেন তাঁরা। তাঁদের একপাশে কাতর হয়ে দাড়িয়ে রয়েছেন মিজানুর রহমান, জেসমিন বেগম, শাহনাজ বেগম, সাইফা, সামিয়া, রুমকি ও সাইফার বর লাবিব! প্রত্যেকেই হতবিহ্বল, আতঙ্কিত ও বিস্মিত। সবার মধ্যেই যেনো হঠাৎ শোক লেগে গেল। কি থেকে কি হয়ে গেল এসব? আদো কি তারা বাস্তবে রয়েছে? নাকি চোখ মেলে কোনো দুঃস্বপ্ন দেখছে?

লাশের এক কোণায় হাঁটুতে মাথা ঠেকিয়ে নির্বিকার চিত্তে বসে রয়েছে সামান্তা। পরনে এখনও তার লাল চকচকে শাড়ি। দ্বিধায় পরে গেল শাড়িটি কি এখনি তার খুলে ফেলতে হবে? মুখশ্রীতে তোলপাড় করা রোষানল তার! অতিরিক্ত ক্রন্দনের ফলে চোখ দুটো ফুলেফেঁপে একাকার। চোখের সাদা অংশ থেকে যেন আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে। লেলিহান শিখা।

ক্ষীণ ও একরোঁখা দৃষ্টিতে সে সাহিলের থেতলে যাওয়া মুখটির পানে অবিশ্রান্তভাবে ক্ষোভ ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। রীতিমত অস্বাভাবিক দেখাচ্ছে তাকে। কোনোরূপ নড়াচড়াও করছেনা সে। ভেতর থেকে বিকট ও বিকৃত গোঙানোর শব্দ নিঃসৃত হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেনো কোনো প্রেতাত্না ভর করেছে তার ওপর! সামান্তার এহেন ক্রিয়াকলাপ বেশ অনেকক্ষণ যাবত লক্ষ্য করছেন তার মা জেসমিন বেগম। মেয়ের এই অস্বাভাবিক আচরণে তিনি রীতিমত আশ্চর্য হয়ে সামান্তার পাশে এসে বসলেন। সামান্তাকে দু-একবার ঝাঁকুনি দিলেন। ভীত গলায় বিড়বিড়িয়ে সামান্তার কানে গুঞ্জন তুলে বললেন,

“এই কি হয়েছে তোর? এমন ভূতের মতো বসে আছিস কেন?”
দৃষ্টি ঘুরিয়ে সামান্তা তার মায়ের দিকে একবার ফিরে তাকালো। হিংস্র রূপ তার, কি ভয়ঙ্কর চাহনি। কোটর থেকে চোখ দুটি বের হয়ে আসার উপক্রম! বিষধর সাপের ন্যায় ফোঁস ফোঁস করছে সে। মনে হচ্ছে যেনো এক্ষণি তার মাকে আস্ত চিবিয়ে খাবে! ভয় পেয়ে জেসমিন বেগম চিৎকার করে ওঠলেন। তাৎক্ষণিক সামান্তা তার হিতাহিত জ্ঞান হারালো! লুটিয়ে পরল তার মায়ের বুকে। সামান্তাকে দু’বাহুতে আগলে ধরলেন জেসমিন বেগম। অশ্রুসজল গলায় তিনি চিৎকার করে মিজানুর রহমানকে ডাকলেন। বললেন,

“এই শুনছ? সামান্তা যেনো কেমন করছে। একটু এদিকে এসো তো।”
“কই দেখি? কি হয়েছে আমার মেয়ের?”
বিচলিত হয়ে মিজানুর রহমানসহ প্রত্যেকে সামান্তার দিকে এগিয়ে এলেন। তখনি নাজিয়া চৌধুরী গলা ফাঁটা চিৎকার দিয়ে ওঠলেন। রোষভরা গলায় তিনি মিজানুর রহমানকে শাসিয়ে বললেন,

“ভাই প্লিজ। তুমি তোমার এই অলক্ষ্মী, অপয়া, সর্বনাশী মেয়েটাকে নিয়ে আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যাও। তার মুখটাও দেখতে চাইছিনা আমি। এই মেয়েকে বিয়ে করিয়ে আনার পর থেকেই আমাদের পরিবারে একের পর এক অঘটন ঘটছে। আর আজ তো আমি আমার বুকের মানিককেই হারিয়ে ফেললাম। আর চুপ থাকতে পারছিনা আমি। তখনও চুপ থাকাটা ঠিক হয়নি আমার।

বুঝতে পারিনি তখন আমার এই চুপ থাকাটা আজ কাল হয়ে দাঁড়াবে। মেয়েটা খেয়ে দিলো আমার ছেলেকে। মেরে দিলো আমার ছেলেটাকে। এখন কি নিয়ে বাঁচব আমি? আমার বুকের মানিক যে চিরতরে বিদায় নিলো আমাকে ছেড়ে। কেন আমি সেদিন জেদ ধরেছিলাম এই অলক্ষী মেয়েটাকে আমার ছেলের বৌ বানাতে? যার খেসারত আমার ছেলেটাকে এখন তার জীবন দিয়ে দিতে হলো।”

তরুন চৌধুরীও এবার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠলেন। বসা থেকে দাড়িয়ে গেলেন তিনি। দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে তিনি সামান্তাকে তার মায়ের বুক থেকে ঠেলে মাটিতে ফেলে দিলেন! হতবাক মিজানুর রহমানের মুখোমুখি দাড়িয়ে তিনি চোয়াল উঁচিয়ে বললেন,

“শুনেছেন তো আপনার বোন কি বলেছে? আপনার মেয়েকে নিয়ে আপনি ও আপনারা এক্ষণি আমাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। সেমপ্যাথি দেখানোর নাটক করতে হবেনা আর। সেদিন আপনি আমার ওয়াইফকে, আমার ছেলেকে ভুলিয়ে ভালিয়ে এই অলক্ষুনি মেয়েটাকে বিয়ে করার জন্য জোর করেছিলেন। আমার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে আমার ছেলে আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিল সেদিন।

এহসান করেছিল আপনাদের ওপর। আজ সেই এহসানের মূল্য পেল আমার ছেলে তাও আবার নিজের জীবনের বিনিময়ে। বের হয়ে যান আপনারা আমার বাড়ি থেকে। না হয় আমি বাধ্য হবো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে আপনাদের এই বাড়ি থেকে বের করতে।”
হতভম্ব মিজানুর রহমান নিশ্চল গলায় তরুন চৌধুরীকে বললেন,

“এসব তুমি কি বলছ তরুন? আমরা এখানে নাটক করতে এসেছি? অতিরিক্ত ড্রাঙ্ক অবস্থায় ড্রাইভ করার ফলে কার এক্সিডেন্টে তোমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে তরুন। এখানে আমার মেয়ের হাত থাকবে কেন? কিসব লজিকলেস কথা বলছ তুমি? এমন তো নয় যে, আমার মেয়ে কার ড্রাইভ করছিল, আর তার অসাবধানতার ফলে তোমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতি তো আমার মেয়েরও হয়েছে। অল্প বয়সে বিধবা হতে হয়েছে তাকে। আমাদের পরিবারের জন্যও এটা বিরাট শোক। তাছাড়া সাহিল আমার বোনের ছেলে আমার ভাগ্নে। কেন তার মৃত্যুকে ঘিরে আমরা এখানে নাটক করতে আসব?”

“আমি আপনার মুখ থেকে কোনো জ্ঞানের কথা শুনতে চাচ্ছিনা! প্লিজ বের হয়ে যান আপনারা আমার বাড়ি থেকে। আপনারা এই বাড়িতে থাকলে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবেনা।”
ইতোমধ্যেই পুলিশ ও কনস্টেবল চলে এলেন ঘটনাস্থলে। সাহিলের লাশ পোস্ট মর্টেম করানোর জন্য। তরুন চৌধুরীকে ডেকে আনলেন “টুটুল চৌধুরী!” আহত মন নিয়ে মাটিতে পরে থাকা সামান্তাকে তখন মিজানুর রহমানসহ প্রত্যেকে ধরাধরি করে মাটি থেকে তুলছিলেন। সামান্তার দিকে টুটুল চৌধুরীর তীক্ষ্ণ নজর স্থির! মাথা থেকে ক্যাপটি খুলে তিনি উত্তেজিত তরুন চৌধুরীকে বললেন,

“ঘটনাস্থল থেকে কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। মনে হচ্ছেনা এটা পরিকল্পিত কোনো মা’র্ডা’র। ড্রাঙ্ক অবস্থায় ড্রাইভ করলে এক্সিডেন্ট হবেই, এটা স্বাভাবিক বিষয়। তবে যে ট্রাকের সাথে সাহিলের গাড়ির এক্সিডেন্ট হয়েছিল সেই ট্রাকের ড্রাইভারকেও আমরা জিম্মায় এনেছি। মোটামুটি তিনিও আ’হ’ত অবস্থায় হসপিটালে ভর্তি। লাশ এখন পোস্ট মর্টেমের জন্য নিয়ে যেতে হবে। উপর মহল থেকে অর্ডার এসেছে।”

ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠলেন তরুন চৌধুরী। কাঁদতে কাঁদতে তিনি ধপ করে মাটিতে বসে পরলেন। সাহিলের লাশটির দিকে অশ্রুবিজরিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। টুটুল চৌধুরীও তার পাশে বসলেন। তার নিখুঁত ও সূক্ষ্ম দৃষ্টি দ্বারা ভীড় ঠেলে বাড়ির ত্রিসীমানায় চোখ বুলালেন। কাউকে একটা খুঁজতে ব্যস্ত তিনি। সেই কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিটিকে খুঁজে না পেয়ে হতাশ হলেন তিনি। থুতনী চুলকে তিনি তরুন চৌধুরীর উদ্দেশ্যে বললেন,

“মিশাল কোথায়? তাকে কোথাও দেখছিনা যে।”
“জানিনা। পাগলটা হয়তো এখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাস্তার কুকুরদের সাথেই এখন তার বসবাস!”
ব্যগ্র হাসলেন টুটুল চৌধুরী। মিশালের অধঃপতন দেখে বিরাট খুশি হলেন তিনি! পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছিলেন যেনো। এভাবেই যে তার পথে কাটা হয়ে দাড়াবে মিশালের মতোই তার জীবনটাকেও ধ্বংস করে দিবেন তিনি। লাশ পোস্ট মর্টেম করার প্রস্তাব রাখলে নাজিয়া চৌধুরী তা প্রত্যাখ্যান করলেন। এক্সিডেন্টের প্রভাবে এমনিতেই সাহিলের শরীর থেতলে ও ছিঁড়ে গেছে! তার ওপর পোস্ট মর্টেম। উপর মহলকে কিছু টাকা খাইয়ে লাশটি রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তরুন চৌধুরী। টুটুল চৌধুরীও এতে সায় দিলেন।

চূড়ান্ত অপমানিত ও অবহেলিত হয়ে সামান্তাকে নিয়ে তার পরিবার সাহিলদের বাড়ি থেকে বের হয়ে এলো। বাড়ির মেইন গেইটে পা রাখতেই অপ্রত্যাশিতভাবে মিশালের মুখোমুখি হয়ে গেল তারা! সাহিলের মৃত্যুর খবর পেয়ে রাস্তা থেকে এক প্রকার দৌড়ে এসেছে মিশাল। অবিরত শ্বাস ওঠা নামা করছে তার। টপটপ করে ঘাম ঝরছে গাঁ থেকে। ক্লান্ত, শ্রান্ত ও অবিচ্ছিন্ন সে। উপস্থিত সবাই নিথর দৃষ্টিতে মিশালের দিকে তাকিয়ে রইল। সামান্তা এখনও জ্ঞানশূণ্য অবস্থায় তার মায়ের বুকের সাথে মিশে রয়েছে। শুকনো ঢোঁক গিলল মিশাল। কাঠ কাঠ গলায় সবার উদ্দেশ্যে বলল,
“কিভাবে হলো এক্সিডেন্ট?”

মিশাল এবং তার প্রশ্নকে আমলে নিলেন না মিজানুর রহমান। মিশালের উপস্থিতি কোনোভাবেই পছন্দ হলোনা তার। এদিক ওদিক তাকিয়ে তিনি বাড়ির সকলকে উদ্দেশ্য করে ভগ্ন গলায় বললেন,
“সবাই গাড়িতে ওঠো। এখানে আর এক মুহূর্তও সময় ব্যয় করতে চাইছিনা আমি।”

মিশালকে একা রেখে বাড়ির সবাই এক এক করে গাড়িতে ওঠে গেল। মিজানুর রহমানের আদেশ মানতে বাধ্য সবাই। তাই মিশালের প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটাকে কেউ গুরুত্বপূর্ণ মনে করলনা। রুমকি ইশারায় মিশালকে বুঝালো তাদের সাথে গাড়িতে ওঠতে। তবে মিশাল শুনলনা রুমকির কথা। জানালার কাঁচে মাথা ঠেকিয়ে রাখা সামান্তার নির্জীব, শুকনো ও অবচেতন মুখখানির দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে রইল।

রোদের তেজস্বী আলো জানালার কাঁচ গলিয়ে পরছে সামান্তার বিস্তীর্ণ মুখমণ্ডল জুড়ে। ইশ! হয়তো খুব অস্বস্তি হচ্ছে মেয়েটার। মুখের কুঁচকে যাওয়া অংশটুকু হয়তো বেশ জ্বালাপোঁড়া করছে! কি অদ্ভুত না? কিছুক্ষণ আগ অবধিও যে মানুষটিকে মিশাল পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ মনে করত এখন হঠাৎ সেই মানুষটির প্রতিই তার অকৃত্রিম মায়া জন্মাতে লাগল। ভেতরটা ভীষণভাবে কেঁদে ওঠল। গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণভাবে সামান্তা ও তার দুঃখকে অনুভব করতে লাগল।

মনে হলো তার অভিশাপ বুঝি সামান্তার ওপর লেগে গেল। কিন্তু সে তো কখনও সামান্তাকে অভিশাপ দেয়নি। ঠকে যাওয়ার দুঃখ থেকে হয়তো তার প্রতি অধিক নারাজ ও ক্ষেপে ছিল। তবে কি তার রুহের হায় লাগল সামান্তার ওপর? এতোটাই বুঝি শক্তিশালী এই রুহের হায়?

তবে আচমকাই মিশাল তার কপাল ও ভ্রুযুগল কুঁচকে নিলো। মনে হলো সামান্তা তার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসল! বিকৃত মুখমণ্ডল, পাশবিক আনন্দ তার চোখেমুখে ঠিকরে পরছিল। কোথাও একটা রহস্য জড়ানো ছিল। হয়রান হয়ে গেল মিশাল। তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলনা। তৎক্ষণাৎ চোখ দুটো কচলে নিলো মিশাল। উজবুক হয়ে পুনরায় তাকালো সামান্তার দিকে।

এখনও অবধি সামান্তার দিকে তাজ্জব দৃষ্টি স্থির মিশালের। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো পূর্বের অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই রয়েছে সামান্তা। সেই অজ্ঞান অবস্থায়। দিন দুনিয়ার খবর নেই তার। আর সেখানে বাঁকা হেসে তার দিকে তাকানোটা তো নিছকই কল্পনা। তবে কি মিশাল ভুল দেখল? এতক্ষণ যা যা দেখল সব ভুল ছিল?

বুকে যে শ্রাবণ তার সিজন ২ পর্ব ১

সত্যিই কি মাথা এবং চোখের ব্যামো হয়েছে তার? কপাল ঘঁষতে ঘঁষতে মাথা ঝাকালো মিশাল। ভোঁ ভোঁ এক বিকট শব্দ হচ্ছিল তার মাথা থেকে শুরু করে কান দুটিতে। ইতোমধ্যেই মনে হলো পেছন থেকে এসে কেউ তার কাঁধে হাত রাখল। ঝাঁজালো হেসে ভয়ঙ্কর স্বরে শুধালো,
“সাহিলকে তুই মা’র্ডা’র করেছিস তাইনা?”

বুকে যে শ্রাবণ তার সিজন ২ পর্ব ৩