মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ১৪
Tahrim Muntahana
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে। এখনো ডেকোরেশন তেমন কমপ্লিট হয়নি। আদরের মাথা ধরে গেছে তবুও কাউকে বুঝতে না দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। একটু বসা দরকার। পাশের চেয়ারে বসতেই আরেকজনের অস্তিত্ব লক্ষ্য করে সে। ফট করে চোখ খুলতেই আতিক কে বসে থাকতে দেখে। কিছুটা অবাক হলেও বুঝতে দেয় না। আতিকের হাতে শরবতের গ্লাস। আদরের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে সে; এখানে আসার কারণ টাই ভুলে গেছে। আদর বিরক্তি দৃষ্টিতে তাকাতেই আতিক নড়েচড়ে বসে। হেসে বলে উঠে,
মা তোমাকে দিতে বলল। খেয়ে নাও!
আদর বুঝতে পারে ব্যাপার টা। সে অবুঝ নয়। মিসেস আতিয়া যে তাকে ভিষণ পছন্দ করেছে সে জানে; আতিক কে পাঠানোর অর্থ টাও তার বুঝার বাকি নেই। হাসলো আদর; ক্লিয়ার হওয়া দরকার। অযহত পরে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। শরবতের গ্লাস টা নিয়ে কয়েকবার চুমুক দিলো আদর। আতিক তখনো দেখে চলছে তাকে। আদর গলা ঝেড়ে কিছু বলবে তার আগেই উপস্থিত হয় পিয়ানি। কটমট চোখে তাকিয়ে বলে উঠে,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
এই মেয়ে আমার ভাইয়ের সাথে কি করছো?
আদর তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে পিয়ানিকে দেখে। কিছুটা ভড়কে যায় পিয়ানি। আতিক নিজেও পিয়ানির ব্যবহারে অবাক হয়েছে। কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদর উঠে দাঁড়ায়। একদম পিয়ানির বরাবর দাঁড়িয়ে শান্ত গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে,
এটাই যেন লাস্ট বার হয় এমন ব্যবহারের। সবাইকে নিজের মতো ভাবলে দুনিয়া চলবে না। আর আমাকে সবার সাথে মেলালে বড্ড ভুল করবেন মিস পিয়ানি। প্রথম কথা আমি আপনার বড় তাই সম্মান দিয়ে কথা বলবেন। দ্বিতীয় কথা কাজিনের বিয়েতে এসেছেন ভালো ভাবে থাকেন। পাখা বেশী বড় হলে আদর আহমেদ ছেটে দিতে জানে। আমার সাথে কথা বলার আগে আমার ব্যাপারে স্টাডি করে নিবেন; আপনার জন্যই ভালো হবে। অল্প বয়সে এক সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে কেউ চলে যেতে চায় না!
আদর দাঁড়ায় না। নিজের স্বভাব মতো হেঁটে চলে যায়। শান্ত হুমকিতে পিয়ানির রাগ হলেও সুক্ষ্ম একটা ভয় কাজ করে মনে। আজকের টুন টা সবদিনের থেকে আলাদা। পিয়ানি চলে যায়। আতিকের মুখে হাসি ফুটে উঠে। মেয়েটা সবার থেকে আলাদা। বেশ পছন্দ হয়েছে এটিটিউট।
অন্যদিকে আদর নিজের জিন্সের পকেট খামচে ধরে আছে। রাগে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে যেন তার মাথায়। বিয়ে বলে সে মেয়েটিকে ছেড়ে দিলো; শুধুমাত্র ভাইয়ের জন্য নাহলে আজই এই মেয়েকে তার অবস্থান দেখিয়ে দিতো। নিজের ঘরে ঢুকেই কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরেই বের হয়ে আসে। তাড়াহুড়োই শাওয়ার নিয়েছে সে। এখনো অনেক কাজ বাকি। চুল মুছতে মুছতে বের হয়েই নিজের ঘরে হৃদান কে দেখে; পাত্তা দেয় না।
ঘরে যেন সে ছাড়া আর কেউ নেই। হৃদান বুঝতে পারে তার হৃদয়হরণী এখনো তার উপর রেগে আছে। সকাল অনেক বকেছে না খাওয়ার জন্য তাই আদর পণ করেছে কথা বলবে না এই লোকের সাথে। আদরের এক্সপ্রেশন দেখে হৃদান দুষ্টু হেসে বলে উঠে,
তুমি কিভাবে এই কাজ টি করতে পারলে। আমি তো বিশ্বাস ই করতে পারছি না। শেষমেষ নিজের ইজ্জত টা এইভাবে খোয়াতে হলো। আমার ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে এইভাবে আমার সর্বনাশ করলে। কি অপরাধ ছিলো আমার?
বলো? আজ আমি অপারগ বলে তুমি আমার সাথে এটা করতে পারলে। উপর ওয়ালা আছে; তিনিই এর শোধ নিবে আমাকে সুস্থ করে তখন আমিও দেখবো তুমি আমার বউয়ের হক কিভাবে নষ্ট করো!
আদরের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। হৃদান যে অভিনয় করছে সে বুঝতে পেরেছে কিন্তু সকালের কথা জানলো কি করে? এই কথা ভেবেই আদরের মাথা নষ্ট! এবার এই লোক তার মান ইজ্জতের ফালুদা করে দিবে। অসহায় মুখে এসব ভাবতেই হঠাৎ করে হৃদানের শেষের কথাটা মনে হয়। বউয়ের হক নষ্ট করছে মানে? এই লোককি অন্য কিছু মতলব করেছে নাকি? মুহূর্তেই আদরের মুখশ্রীতে রাগ ফুটে উঠে। থতমত খেয়ে যায় হৃদান। আদরের রিয়েকশন গুলো দেখে সে হাসছিলো নিঃশব্দে। হঠাৎ রেগে গেল কেন। হাতের তোয়ালে টা ছুড়ে ফেলে হৃদানের সামনে এসে দাঁড়ায় আদর। হুইল চেয়ারের দুইপাশের হাতলের উপর হাত রেখে হৃদানের দিকে ঝুঁকে আদর। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে,
বউয়ের হক নষ্ট মানে? ইউ পৃদান চৌধুরী একদম শরীর থেকে মাথাটা আলাদা করে দিবো আদর ছাড়া কারো কথা ভাবলে। আপনি একান্তই আমার; শুধু মাত্র আমার। আপনার জীবনে তৃতীয় নারীটি আমি ছিলাম, আমি আছি এবং আমিই থাকবো। যখন তখন চুমু খাবো, জাপটে ধরবো, কোলে উঠবো, পিঠে চড়ে বসবো। সব সহ্য করে যেতে হবে। ওকে!
কথাগুলো বলেই আদর হৃদানের বাম গালে শব্দ করে চুমু খায়। হৃদান জাস্ট শকড হয়ে যায়। আপনাআপনি হাত চলে যায় তার গালে। সকালে না হয় জেগে ছিলো না। কিন্তু এখন! সারা শরীর বিদ্যুৎ খেলে গেলো হৃদানের। এতক্ষণ রেগে কাজটা করে বসলেও হৃদানের রিয়েকশন দেখে আদরের সব রাগ হাওয়া; একরাশ লজ্জা এসে ভর করলো। লাজুক হেসে দৌড়ে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। তখনি চোখে পড়লো হৃদযা-সুবাহ কে। দুজন দাঁত কেলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে; হাতে ফোন। হৃদানের জানার পেছনে যে তার দুই বান্দর বেস্টু আছে বুঝতে পেরেই ওদেরকে দিলো এক দৌড়ানি। ওদের আর পায় কে, এক দৌড়ে পগারপার!
আদর নিচে নেমেই জটলা দেখতে পায়। পা চালিয়ে হাঁটা ধরে সে। কোনো রকম গন্ডগোল চায় না এই বিয়েতে। ভিড় ঠেলে ভেতরে যেতেই রামিয়াকে নিচে বসে থাকতে দেখে। বুঝতে পারে না ব্যাপার টা। এদিক ওদিক তাকিয়ে একপাশে পিয়ানি দেখে; বাঁকা হাসি লেগে আছে মুখে। কিছু না বলে একটু পেছনে সরে আসে সে। দেখতে চায় ব্যাপার টা কি হয়েছে। পিয়ানি ইশারা দিতেই একটা ছেলে গর্জে বলে উঠে,
এই মেয়ে সমস্যা কি? তখন থেকে পিছু পড়ে আছো? আবার ইচ্ছে করে ধাক্কা দিলে। সুন্দর ছেলে দেখলে মাথা ঠিক থাকে না? অসভ্য মেয়ে!
অপমানে মাথা নিচু করে নেয় রামিয়া। এই নিয়ে দুই বার অন্যকারো মুখে অসভ্য শুনতে হলো। সে তো কিছুই করেনি। কাজ করছিলো ছেলেটাই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো। রামিয়ার ছোট্ট মাথায় ব্যাপার টা ঢুকছে না। এত মানুষের সামনে অপমান টাও হজম করতে পারছে না। পিয়ানি তো সবার আড়ালে হেসেই যাচ্ছে। তার খুব মজা লাগছে রামিয়ার চোখের পানি! আদর তবুও এগোলো না। ছেলেটাকে শেষ পর্যন্ত দেখতে চায়। রামিয়া চেষ্টা করে উঠতে পারলো না। তখন বসেই বলে উঠলো,
মিথ্যে বলছেন কেন? আপনিই তো হুট করে ধাক্কা দিলেন!
ইউ স্টুপিড আবার মিথ্যা বলছো। লজ্জা করে না? পাত্তা পাও নি বলে এখন ফাঁসাতে চাইছো। তোমাদের মতো মেয়েকে আমার ভালো করে চেনা আছে।
ছেলেটির কথা শুনে রামিয়া একদম চুপ হয়ে যায়। বড় একটা ধাক্কা খেয়েছে সে। এর আগে এমন পরিস্থিতির সাথে পরিচিত নয় বলেই সে কথা বলতে পারছে না। এই সুযোগ টাই নিলো পিয়ানি। ছেলেটির কথায় সম্মতি জানিয়ে বলে উঠলো,
হ্যাঁ ছেলেটি ঠিকই বলেছে। এই অসভ্য মেয়েটাই পিছু পিছু ঘুরছিলো। লজ্জা নেই এসব মেয়ের।
পিয়ানির কথায় সেখানে থাকা ছেলে-মেয়ে গুলো রামিয়ার দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়ে রইলো। রামিয়া এবার ঝরঝর করে কেঁদে দিলো। আদরের আর সহ্য হলো না। অনেক দেখেছে; এবার দেখানোর পালা। জিন্সের সিক্রেট পার্টে হাত দিয়ে দেখলো রিভলবার আছে। বাঁকা হেসে বলে উঠলো,
আচ্ছা তাই নাকি? ঠিক কখন থেকে পিছু পিছু ঘুরছিলো?
সবার চোখ এবার আদরের দিকে পড়তেই আদর গিয়ে রামিয়াকে ধরে দাঁড় করালো। এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ছেলেটির সামনে দাঁড়িয়ে পিয়ানির দিক তাকালো। আদর কে দেখেই পিয়ানি পিছিয়ে যায়। সে তো আদর কে শাওয়ার নিতে দেখে এসেছিলো; এত তাড়াতাড়ি আসলো কি করে। ছেলেটি আদরের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। খানিকটা চেনা চেনা মনে হচ্ছে। আদর রামিয়াকে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে ছেলেটিকে বলে,
আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি?
ছেলেটি নড়েচড়ে বলে উঠে,
অনেক সময় ধরে। আর আপনাকে কেন বলবো?
এতসব কান্ড ঘটানোর আগে আপনাদের খেয়াল রাখা উচিত ছিলো সারা রিসোর্টে সিসি ক্যামেরা লাগানো। ফুটেজ আনাবো?
ছেলেটি এবার ভয় পেয়ে পিয়ানির দিকে তাকায়। আদর নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারে না বলেই বাহাদুর কে ডেকে বলে উঠে,
বাহাদুর বাহাদুর! এই ছেলেকে নিয়ে যাও। আমার বোনের সাথে এমন করার উচিত শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দিবে। আর মিস পিয়ানি কে আমি দেখে নিবো। ওয়েট এন্ড সি!
রামিয়াকে নিয়ে চলে যায় আদর। সবাই বুঝতে পারে ব্যাপারটা। ছেলেটা হাতে পায়ে ধরেও বাঁচতে পারে না। আর পিয়ানি তো আদরের থেকে বাঁচতে বাবার সাথে বসে আছে। সে জানে আদর এত লোকের মাঝে সিনক্রিয়েট করবে না। আর আদর ভাবছে অন্যকিছু। সম্পূর্ণ আলাদা।
নিচে ঘটা খবর টাই দেওয়ার জন্য পান্চু হৃদান কে খুঁজছে। আদরের রুমে উঁকি দিয়েই হৃদান কে গালে হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখে অবাক হয় সে। বস বলে ডাক দিয়েও কাজ হয় না। গিয়ে ধাক্কা দিতেই হৃদান ধড়ফড়িয়ে উঠে। একটু আগের কথাগুলো মনে হতেই হো হো করে হেসে উঠে সে। হাসির শব্দে চমকে উঠে ঠাস করে পড়ে যায় পান্চু। হুইল চেয়ারের হাতলের সাথে টাক মাথায় বারি লেগে বিকট শব্দ হয়।
হৃদান আবার হেসে উঠে। পান্চু আর সইতে পারে না; ভয়ে ব্যাথায় অজ্ঞান হয়ে যায়। হৃদান হাসি ভুলে বেকুবের মতো তাকিয়ে রইলো। পান্চু কি তাকে ভুত ভেবেছে না কি! হৃদান পান্চুকে ফেলেই বাইরে চলে যায়। থাকুক পড়ে কিছুক্ষণ। ভিতু একটা। দরজার ওখানে যেতেই বুঝতে পারে সামনে কিছু ছেলে-মেয়ে আছে। হৃদান পকেট থেকে মাস্ক পড়ে নেয়; পাশে রাখা ক্যাপ টা পড়ে ফোন বের করে দেখে নেয় নিজেকে। চিনতে পারলেই জেঁকে ধরবে সবাই। তার থেকে বেশী ভয় তো সে আদর কে পাচ্ছে। হৃদান চৌধুরীর কি দিনকাল আসলো!
আজ হলুদ। তিনটা প্যান্ডেল করা হয়েছে। একটাতে আতইয়াব, আরেকটা তে হৃদযা-মৃহান আরেকটিতে সুবাহ। একসাথে হলে যার যার বাড়ির লোক নিজেদের মতো আনন্দ করতে পারবে না বলেই আদর এরকম ভাবে আয়োজন করেছে। যদিও বুদ্ধিটা তাকে হৃদান ই দিয়েছে। ডেকোরেশন দেখেই সবার মাঝে আমেজ সৃষ্টি হয়েছে দ্বিগুণ হারে। খাওয়া-দাওয়া আর বিয়ের প্যান্ডেল সবার জন্যই একটা একটা করে করা হয়েছে।
চারপাশে তো গার্ডের অভাব নেই। সবাই যে যার মতো রেডি হচ্ছে। তিনবাড়ির তিন রকমের ড্রেস কোড। বড়রা মিলেই ঠিক করেছে এটি। আদর হৃদানের পোশাক টাই অন্যরকম। কারণ তারা দুজন ছাড়া চারজন হলুদ করবে না। মাস্ট থাকা চাই ই চাই। প্রথমে আতইয়াবের হলুদ হবে। সুবাহ-মৃহান ও এসেছে যোগ দিতে। তবে হৃদযা আসতে পারেনি বড়দের জন্য।
হৃদান কে নিয়ে নিচে নামছে আদর।
ম্যাচিং ড্রেস দেখে অনেকেই অনেক কিছু বলাবলি করছে তবে সেদিকে কারোরই পাত্তা নেই। হৃদানের হাতে ক্যামেরা। একেরপর এক ছবি তুলেই যাচ্ছে। আদরের মুখ থেকে যেন হাসি সরছেই না। এত পরিমাণ খুশি আজকে সে বলার বাহিরে। তার পেছনে রামিয়া আসছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে দুই বোনকে। আদর রা নিচে নামতেই আতইয়াব কে নিয়ে আসা হলো। হলুদ ছোঁয়ানোর আগেই আতইয়াব বলে উঠলো,
আমি চাই সর্বপ্রথম আমার ফুল দুটো আমাকে হলুদ ছোঁয়াবে।
আদর-রামিয়া ঝকঝকে হাসে। জ্বলে উঠে কিছু মানুষের চোখ। দুজনের প্রতি এত ভালোবাসা সহ্য করার মতো না! দুজন একসাথে গিয়ে আতইয়াব কে হলুদ মাখায়। দু’তিনটা ছবি উঠেই আদর হাত ভর্তি হলুদ নিয়ে আতইয়াব কে একদম ভূত বানিয়ে দেয়। খিলখিল করে হাসতে থাকে। হৃদান সব ভুলে হা করে প্রেয়সীকে দেখতে থাকে। একসময় আপনাআপনি বুকে হাত দিয়ে বলে উঠে,
হায়, আমি তো শেষ।
আদর ভেঙচি কেটে হৃদানের পাশে দাঁড়ায়। অন্যদিকে মিসেস আতিয়া ছেলেকে ঠেলছে আদরের পাশে পাশে থাকার জন্য। আতিক সাহস পাচ্ছে না। মায়ের জোরাজুরি তে অগত্যা তাকে যেতেই হয়। আতিকের হাসিতে আদর হালকা হাসে। তীক্ষ্ম চোখে আতিক কে পর্যবেক্ষণ করে হৃদান। কিছু বলবে তার আগেই আদর তাকে নিয়ে হাঁটা ধরে। এখন হৃদযা-মৃহানের কাছে যেতে হবে।
আদর-হৃদান কে দেখেই হৃদযা-মৃহান এগিয়ে আসে। প্রথমে আদর-সুবাহ হৃদযাকে হলুদ ছোঁয়ায় তারপর দুই ভাই। এভাবেই হলুদ ছোঁয়ানো শেষ হয়। প্যান্ডেলের পর্দা সরিয়ে দিতেই তিন বাড়ির মানুষ একত্র হয়। হলুদের অনুষ্ঠান নাচ গান না হলে হয়! সবাই নাচ গানে ব্যস্ত থাকলেও আদর হৃদানের পাশেই বসে থাকে। একা ছাড়তে ইচ্ছে করে না তার। বসেই হাত তালি দিচ্ছে সে। হঠাৎ ই গালে কারো স্পর্শ পেয়ে হাত থামিয়ে দেয়।
কেঁপে উঠে খানিক টা। পাশে তাকাতেই আতইয়াবের স্যার কে চোখে পড়ে। অবাক হয়ে তাকায় আদর। রাজীব আহমেদ নিজের কাজে নিজেই থতমত খেয়ে যায়। এখন যদি প্রশ্ন করে বসে কি জবাব দিবে। হৃদান ব্যাপার টা বুঝতে পারে তাই সম্পূর্ণ এডিয়ে গিয়ে আদরকে অন্য কথায় ব্যস্ত করে তোলে।
মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ১৩
এই সুযোগে রাজীব আহমেদ নিজের রুমে চলে যায়। চোখটা কেমন ছলছল করে উঠে তার। আতইয়াব কেও হলুদ দিয়েছে সে; খুব ইচ্ছে করলো মেয়েটাকে একটু আদর দিতে। কেন যে আবেগ টাকে কন্ট্রোল করতে পারে না। এর জন্যই হয়তো তাকে ধরা পড়তে হবে!