মেজর পর্ব ১০

মেজর পর্ব ১০
জাকিয়া সুলতানা ঝুমুর

মিতু মনে মনে নিজের গালে ঠাস করে একটা থা,প্পড় দিলো।আরেকটু এমন করে কাধে শুয়ে থাকতো,চুপচাপ মুশফিকের নরম কথা,আদুরে চুম্বন অনুভব করতো তা না করে সে গরুর মতো বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে ফেলেছে।তার চোখ খুব সুন্দর,সবাই উপমা দেয় হরিণের মতো চোখ কিন্তু আজ তার মনে হচ্ছে এগুলো মোটেও হরিণের চোখ না এগুলো গরুর মতো চোখ।

নিজের প্রতি নিজের রাগে গা বিষিয়ে উঠলো।বিয়ের পরে এই প্রথম মুশফিক মিতুর দিকে ভালোবাসার চুম্বন এঁকে দিয়েছে আর সে কিনা এটা ভেস্তে দিলো।যদিও তার লজ্জা লাগছে, হাত, পায়ের তালুতে শিরশির করে উঠছে তারপরও নিজেকে সামলানো যেতো কিন্তু মুশফিকের এমন হতবিহ্বল চেহারা দেখে তা আর সম্ভব না।এই মূহুর্তে মুশফিককে দেখে তার মনে হচ্ছে মুরগী চোর।কেমন হতবাক হয়ে,বিষ্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে আছে।মিতু বোকার মতো হাসার চেষ্টা করলো ঠিকই কিন্তু পেটের ভেতর ভ,য় গুড়গুড় করে উঠছে যে বাসায় গিয়ে কি হবে।লজ্জায় তার ইচ্ছা করছে বাস থেকে নেমে ঢাকা ফিরে যেতে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মুশফিক স্মার্টলি নিজেকে সামলে নেয়।মিতুর বোকা হাসির দিকে তাকিয়ে বললো,
“কি হলো?”
“গাড়ির ঝাঁকি লেগে ঘুম ভেঙ্গে গেলো,রাস্তা এতো খা,রাপ! ”
মিতু মুখের সামনে হাত নিয়ে হাই তুললো,যেনো সদ্য ঘুম ভেঙ্গেছে।যে চোখ পিটপিট করে তাকালো,যথাযথ চেষ্টা করছে তাকে দেখে যেনো বুঝা যায় মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে।
মুশফিক মিতুর মুখের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছে।মিতু এমন শিকারী দৃষ্টি দেখে নড়েচড়ে বসে।মুশফিক বললো,

“রাস্তা ভাঙ্গা না,মোড় ঘুরতে গিয়েই ঝাঁকি লেগেছে হয়তো।”
মিতু মাথা নেড়ে আবারও সিটে মাথা রাখে।
মুশফিকের মুখাবয়ব গম্ভীর হয়।চুপচাপ গম্ভীরমুখো হয়ে বসে থাকে,মিতুর সাথে আর একটাও কথা বলেনা।সে ভাবে মিতু সত্যি কথাই বলেছে,ঘুমিয়েই ছিল। নিজের উপর সে যারপরনাই বিরক্ত।এতো কন্ট্রোললেস সে!একটু বেশীই এগিয়ে ফেলেছে মিতু জেগে থাকলে নির্ঘাত খারাপ ভাবতো।এমনিই মেয়েটা তাকে খুব ভয় পায়,তার উপর আবার এতো কাছে চলে আসলে দেখা যাবে কালকে সকালেই ঢাকা চলে যাবে।

রাত একটা পাঁচ মিনিটে কুমিল্লা পদুয়ার বাজারে বাস থামে।রাতের খাবার খাওয়া আর প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেয়ার জন্যই এই বিরতি,বিরতির সময় ত্রিশ মিনিট।মিতু আর মুশফিক নেমে আসে।মিতু হাত দিয়ে নাক চেপে ধরে,অনেকক্ষণ ধরেই বমিভাব হচ্ছিলো বাস বন্ধ করার ফলে ইঞ্জিন থেকে এক প্রকার গন্ধ এসে নাকে লাগে,মিতুর মনে হচ্ছে এতো বিশ্রী গন্ধ সে আগে কখনো পায়নি,তার পেটের নাড়িভুড়ি বের হওয়ার মতো উল্টেপাল্টে যাচ্ছে।সে মুশফিকের পাশ দিয়ে দ্রুত হেটে সামনে গিয়ে গড়গড় করে বমি করে দেয়।

মুশফিক মিতুকে ধরে।মেয়েটার কষ্টে তার নিজেরই খারাপ লাগছে।এই যে বমি করতে কি কষ্ট হচ্ছে।এক পর্যায়ে বমি করতে করতে মিতু দুর্বল হয়ে যায়।মুশফিক তার হাত ধরে সামনের দোকান থেকে পানির বোতল এনে চোখে মুখে পানি দিয়ে, কিছুটা পানি মাথায় দেয় কিছুটা পানি খেতে দেয়।
মুশফিক বললো,
“কিছু খাবে?”
মিতুর পেটে খুব খিদা আছে কিন্তু বমির ভয়ে বললো,
“না।”

মুশফিক সামনে তাকায়।হোটেল নুরজাহান।বেশ নামকরা হোটেল,হানিফ বাস এই হোটেলের সামনেই থামে।সে মিতুকে নিয়ে ভেতরে যায়। মিতু ওয়াশরুমে যায়।এই ফাঁকে সে হাত মুখ ধুয়ে নেয়, যতোটুকু পারা যায় ফ্রেশ হয়।প্যান্ট থেকে মিতুর ছিটকে আসা বমি পরিষ্কার করে।বেরিয়ে এসে দেখে মিতু দাঁড়িয়ে আছে,সে বের হওয়ার পরে তার পায়ের দিকে তাকিয়ে বললো,

“আপনি পরিষ্কার করলেন কেনো?আমিই পরিষ্কার করে দিতাম।”
“কি?”
মিতু হাতের ইশারায় প্যান্ট দেখিয়ে বললো,
“ময়লা।”
মুশফিক বুঝতে পারলো মিতু কিসের কথা বলছে।মেয়েটা খেয়াল করেছে।সে হেসে বললো,
“তোমাকে পরিষ্কার করতে হবে?আমিই পারি এসব।”

মিতু ফ্যাকাসে চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।মুশফিক মিতুর কাছে যায়।মাথার চুল ক্লিপ ছেড়ে উশখু খুসকু হয়ে আছে,মিতুকে একটা চেয়ারে বসিয়ে মাথার চুলগুলো যতোটা সম্ভব গুছিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে দেয়।মিতু মুগ্ধ হয়ে মুশফিকের দিকে তাকিয়ে আছে।মানুষটা এতো যত্নশীল!মুশফিক বললো,

“কি খাবে?পেট তো খালি।”
মিতু না করে।মুশফিক বললো,
“না খেলে আরও খারাপ লাগবে। ”
“আবার বমি হবে।”
মুশফিক বললো,

“কিছু হবে না।তুমি বসো।কি খাবে?ভাত?”
“না অন্যকিছু।”
“আচ্ছা।”
কিছুক্ষণ পরে মুশফিক ফিরে আসে।মিতুর হাতে দুটো ট্যাবলেট দিয়ে বললো,
“খেয়ে নাও।”
মিতু চুপচাপ খেয়ে নেয়।ওয়েটার তাদের খাবার দিয়ে যায়।কলিজা ভুনা,সবজি আর পরোটা।মিতু একটু খায়,মুশফিক জোর করেও খাওয়াতে পারে না। মুশফিক খেয়ে, কফি আনে।মিতু যে খেতে পারছেনা এটা চুপচাপ দেখছে।মিতুকে বাসে উঠিয়ে সে নেমে যায়।

নিরিবিলি বাসে মানুষ নেই বলতে গেলে,সবাই নিজ প্রয়োজনে নেমে পরেছে।আস্তে আস্তে সবাই ফিরে আসে। কিছুক্ষনের মাঝে মুশফিকও ফিরে আসে,হাতে অনেকগুলো খাবার।মিতু দুর্বল কন্ঠে বললো,
“এগুলো কি?”
“চিপস,জুস,চকলেট,আচার।”
মিতু নাক সিটকে বললো,
“আমি কিছু খাবো না ”
মুশফিক হাসে।সিটে বসে বললো,
“আচ্ছা।”

মৃদু ঝাঁকুনি দিয়ে বাস আবার চলতে শুরু করে।মিতু আস্তে করে,সজ্ঞানে,সইচ্ছায় মুশফিকের কাধে মাথা রাখে।মুশফিকের হঠাৎ নিজেকে খুব পূর্ণ লাগে,সুখের আতশবাজি জেনো চারদিকে ফুটে উঠে।সে মিতুর হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নেয়।মিতু নরমস্বরে বললো,
“আমার শুয়ে পরতে ইচ্ছে করছে।”
“শুয়ে পরো।”
মিতু মাথা তুলে বললো,
“কোথায়?”
মুশফিক নিজের কোল দেখিয়ে বললো,
“এখানে।”

মিতু সিট পর্যবেক্ষণ করে দেখে সিট বেশ বড়,অনায়াসে শুয়ে যেতে পারবে।মিতু পা মুরে গুটিসুটি মেরে শুয়ে পরে।মুশফিক মিতুর মাথায় হাত ভুলিয়ে দেয়।একটা হাত মিতুর হাত আঁকড়ে ধরে।মিতু অবাক হয়ে মুশফিকের দিকে তাকিয়ে থাকে।এই মুশফিক তার কাছে নতুন।সে বললো,
“তখন আমার ময়লা পরিষ্কার করতে আপনার ঘৃণা হলো না?”
মুশফিক কিছুক্ষণ মিতুর দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,

“ঘৃণা হবে কেনো?”
“হওয়াটাই তো স্বাভাবিক ছিলো।”
“তুমি আমার স্ত্রী আর আমি তোমার স্বামী।আমরা দুজন একে অপরের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষ যার কাছে নির্দিধায় সবকিছু বলা যাবে,করা যাবে।একে অপরের বিন্দু পরিমান সমস্যাও সুক্ষ্ম নজরে দেখতে হবে,যত্ন নিতে হবে।শুধুমাত্র আমি তোমার হাজবেন্ড বলে যে তুমি শুধু আমার সেবা করবে আর তোমার অসুস্থতায় আমি তোমার সেবা না করে নাক কুঁচকে দূরে সরে থাকবো।তা কি করে হয়?আমি সবসময় তোমার যত্ন নেবো।”

মিতুর বুকটা সুখে কেমন চিনচিন করে উঠে।মনে মনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানায় এতো ভালো মন-মানসিকতাসম্পন্ন জীবনসঙ্গী দেয়ার জন্য।মুশফিক মিতুর চোখে তার জন্য স্পষ্ট মুগ্ধতা দেখতে পায়।সে হাস্কি স্বরে বললো,
“তাছাড়া ভালোবাসার মানুষের কোনো কিছুতেই ঘৃণা আসে না।”
মিতু ঠোঁট কাঁমড়ে ধরে অপলক মুশফিকের দিকে তাকিয়ে থাকে।একটু পরে আস্তে করে বললো,
“আমি আপনার ভালোবাসার মানুষ? ”

মুশফিক ঠোঁট টিপে হাসে।মিতুর নাকে টোকা দিয়ে বললো,
“উম্ম।এখনো হওনি কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে,আশা করি।”
মিতুর বলতে ইচ্ছে হলো,তা ভালোবাসার মানুষই যদি না হলাম তাহলে কপালে চুমুটুমু দেয়ার কি দরকার ভাই!ভালোবেসেই না হয় এসব করো।কিন্তু এসব কি মুখে বলার সাহস মিতুর আছে সে চুপ করে থাকে।মুশফিক তেতুলের আচার মিতুর মুখের সামনে ধরে।মিতু মাথা নাড়ে,মুশফিক বললো,
“খাও ভালো লাগবে।”

মিতু চুপচাপ খায়।মুশফিক একে একে চিপস,জুস,চকলেট, আচার সব খাইয়ে দেয়।মিতু চুপচাপ শুয়ে থাকে মুশফিকের গায়ের মিষ্টি আদুরে ঘ্রাণ তাকে অন্যরকম আবেশে জড়িয়ে রাখে।সে চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে যায়।মিতু ঘুমানোর পরে মুশফিক তার মোবাইল ফোন দিয়ে ঘুমন্ত মিতুর কয়েকটা ছবি তুলে নেয়।
মানুষের কথার শব্দে মিতুর ঘুম ভেঙ্গে যায়।নিজেকে আবিষ্কার করে মুশফিকের কোলে।সে মুশফিকের কোলে সেই কখন শুয়েছে।মিতু মুশফিকের সাথে মিশে আছে।মুশফিক তার দিকে কেমন মিষ্টি চোখে তাকিয়ে আছে,মিতু জলদি উঠতে চায়।মুশফিক তাকে উঠতে সাহায্য করে বললো,

“এতো তাড়া কিসের?আস্তে উঠো।”
মিতু আস্তে করে বললো,
“ডাকেননি কেনো?পা ব্যাথা করছে না?”
মুশফিক হেসে বললো,
“না।ঠিক আছে।”
গাড়ি থেমে আছে।মিতু বাহিরের দিকে তাকিয়ে বললো,
“আমরা কি পৌছে গিয়েছি?”
“না।”
“তাহলে গাড়ি থেমেছে কেনো?”

“আমরা এখন খাগড়াছড়ি আছি।এটা খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা।এখানে একটা আর্মি চেকপোস্ট আছে।সামনে খুব আঁকাবাঁকা রাস্তা।রাতে গাড়ি চালানো রিস্ক তাই সেনাবাহিনীরা রাতে এখানে আসা সব গাড়ি আটকে দেয়, ভোরের আলো ফুটলে ছেড়ে দেয়।”

“অহ আচ্ছা।”
“আপনি কি এখানে আসেন?”
“না আমি আসিনা।কিন্তু মাঝে মাঝে দরকার লাগলে আসতে হয়।কিছুদিন আগে একটা ড্রা,গের চালান হচ্ছিলো তখন এসেছিলাম।”
মিতু অবাক হয়ে বললো,
“তারপর? ”
“ধরে ফেলেছি। ”
“আচ্ছা।”

কিছুক্ষণ পরে ভোরের আলো ফুটে উঠে।বাস গাড়ি পাহাড়ের উপর উঠতে থাকে।পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তায় হেলেদুলে বাস উঠতে থাকে।মিতুর ভয় লাগে,সে মুশফিকের দিকে ভয়ে ভয়ে তাকায়।মুশফিক বললো,
“এটা আলুটিলা পাহাড়।এই পাহাড় উঠতে বিশ মিনিট লাগবে।”
“ভয় লাগছে।”
“ভয়ের কিছু নেই,আমি আছি তো।”

মিতু মুগ্ধ হয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে থাকে।দূরে কি সুন্দর পাহাড়।সকালের সাদা কুয়াশা যেনো পাহাড় আঁকড়ে ধরে রেখেছে।তার চোখে মুখে মুগ্ধতার রেশ।মুশফিক চুপচাপ মিতুর উচ্ছাস দেখছে।মুশফিক হাত দিয়ে এটা সেটা মিতুকে দেখাচ্ছে,চিনাচ্ছে।কিছুক্ষণ পরেই তারা খাগড়াছড়ি শহরে চলে আসে।বাস থেকে নেমে সকালের ঠান্ডা বাতাসে গা মাখে।মুশফিক ব্যাগপত্র নিয়ে একটা গাড়িতে উঠে বসে।

এখান থেকে আর্মি কটেজ অনেক দূরে।যাওয়ার পথের দৃশ্য মিতুকে মুগ্ধ করেই ক্ষান্ত হলো না বরং প্রকৃতির প্রেমে পরতে বাধ্য করলো।মুশফিক মিতুকে সব চিনিয়ে নিচ্ছে।যখন আর্মি কটেজে পৌছালো তখন সকাল সাড়ে ছয়টা বাজে।মিতু গাড়ি থেকে নেমে কটেজের দিকে তাকায়।দূরে এমন আরও কটেজ আছে,দেখতে একইরকম।সে জিজ্ঞাসার দৃষ্টি মেলে মুশফিকের দিকে তাকায়।মুশফিক মিতুর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,

“মেজরের রাজ্যে স্বাগতম আমার প্রিয়তমা।এই বাড়ি তোমার। এই বাড়িতে আমি তোমার কাছে শুধু শান্তি চাই, আর ভালোবাসা।”
মিতুর মুখে হাসি ফুটে উঠে।মুশফিকের দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে আসস্থ করে। আস্তেধীরে কটেজের ভেতরে যায়।নিচে বড় হলরুম,সোফা আর টিভির সংযোগে সাজানো।পাশে বড় কিচেন।অন্যপাশে দুটো রুম।মাঝখানে সিড়ি।মুশফিক ইশারা করে উপরে যেতে।মিতু সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসে।উপরে তিনটা রুম,এক রুমের একপাশে বড় খোলা বারান্দা।এই রুমটায় মুশফিক থাকে।মিতুকে নিয়ে সেটায় যায়।মিতু রুমে ডুকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে,রুমটা দেখেই বুঝা যায়,ভিষণ রুচিশীল, মার্জিত মানুষের পছন্দ খুবই অনন্য।মুশফিকের বাসায় যেমন সাদার সমারোহ এখানেও তাই।সব সাদা।সে বারান্দায় আসে।তারপর মুখ দিয়ে বললো,

“ওয়াও!এতো সুন্দর! ”
মিতুর সামনে উঁচু উঁচু পাহাড়।সে চোখের পলক ফেলার ভাষা হারিয়ে ফেলে।কতোক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলো যানা নেই।পেছন থেকে মুশফিক বললো,
“এখন থেকে প্রতিদিনই দেখতে পারবে।এখন আসো গোসল কর।”
মিতু মুশফিকের দিকে তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নেয়।শুধুমাত্র তোয়ালে পরে এভাবে ঘুরছে কেনো?ছিহ! মতলব কি?মেজরদের কি লজ্জা শরম থাকে না নাকি?মুশফিক বললো,

“যাও। আমার ডিউটি আছে মিতুল। ”
মিতু সামনে এগিয়ে আসে।
“আমাকে মিতুল বলেন কেনো?”
“আমার পছন্দ,ভালো লাগে,মিষ্টি লাগে।”

মিতু হেসে রুমে যায়।লাগোয়া সুন্দর বাথরুমে ঢুকে আরেকবার মুগ্ধ হয়।দেয়াল ঘেষে বাথট্যাব,আর সামনে সুন্দর জানালা,সেই জানালা দিয়ে পাহাড় দেখা যায়।গোসল করতে করতে প্রকৃতি দেখা যাবে।মিতু জলদি গোসল করে বেরিয়ে আসে।রুমে কেউ নেই। মিতু মাথা মুছতে মুছতে নিচে আসে।মুশফিক নাস্তা বানাচ্ছে।ফ্রোজের পরোটা আর ডিম ভাজি।আরেক চুলায় আদা দেওয়া রঙ চা।মিতু কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।মুশফিকের হাতের কাজ দেখে বুঝা যাচ্ছে মুশফিক রান্নাবান্নায় দক্ষ।মুশফিক বললো,

“ভালো লাগছে?”
মিতু হেসে বললো,
“হ্যাঁ।”
মুশফিক টেবিলে এনে নাস্তা রাখে।মিতুকে পরোটা দিয়ে সে শসা,টমেটো,গাজর আর এক কাপ চা খায়।মিতু অবাক হয়ে বললো,
“আপনি এসব খেয়েই থাকবেন?”
“হ্যাঁ।”
“পরোটা খান না?”

“খাই মাঝে মাঝে।গতকাল রাতে পরোটা খেলাম না,সেটা তো অভার ছিলো তাই এখন সালাদ দিয়ে কাটাকাটি ।”
মিতু এবার বুঝলো এমন পাথরকোদা শক্ত,শরীরের রহস্য কি।সে নাস্তা করে বিছানায় চলে আসে।নরম তুলতুলে বিছানা।মিতু শোয়ার পরেই আরামে চোখ বন্ধ হয়ে গেলো।কিছুক্ষণ পরে কপালে হাতের স্পর্শ পেয়ে মিতু চোখ খুলে তাকায়,কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছে বুঝেইনি।মুশফিক ইউনিফর্ম পরে প্রস্তুত।মিতু আস্তে করে বললো,

মেজর পর্ব ৯

“এই আপনাকে এতো সুন্দর লাগছে কেনো?”
মুশফিক মিতুর দিকে ঝুকে আসে।
“আমি তো মিতুর বর তাই একটু আল্ট্রা লেভেলের সুন্দর।”

মেজর পর্ব ১১