হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব ১০

হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব ১০
সাদিয়া জাহান উম্মি

অবশেষে কাঙ্খিত দিনটি এসেই পরলো। আজ আরাবী আর জায়ানের বিয়ে।বউ সাজে বসে আরাবী।একটু পরেই তাকে জায়ানের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে।বাহির থেকে চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ আসছে।বরপক্ষ আর কনেপক্ষের মাঝে বরযাত্রী প্রবেশের টাকার জন্যে তুমুল ঝ’গড়া চলছে।জায়ান এসে পরেছে ওকে নিতে।

আরাবীকে নিজের রানি করে নিয়ে যাওয়ার জন্যে এসে পরেছে।আরাবীর সারা শরীর কাঁপছে।চিন্তা, অস্থিরতা,ভয়,ভালোলাগা সব যে একসাথে ঝেঁকে ধরেছে ওকে।দুরুদুরু বুক নিয়ে বসে আরাবী। হাত দুটো মেলে ধরলো আরাবী। কি গাঢ় সে রঙ মেহেদীর।কাল জায়ান নিজে ওর নাম লিখে দিয়েছিলো আরাবীর হাতে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

হাতে জায়ানের নামটা দেখে মুচঁকি হাসলো আরাবী।উঠে দাঁড়ালো আরাবী।আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে আরেকবার পরখ করে নিলো।লাল খয়েরী রঙের লেহেঙ্গা, মাথায় সোনালী রঙের ওড়না দেওয়া,খোঁপা করা চুলগুলো লাল,সাদা গোলাপ ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজানো।গা ভর্তি স্বর্ণের গহনা সাথে ব্রাইডাল মেক-আপ।একদম পার্ফেক্ট বউ লাগছে আরাবী।ভীষণ সুন্দর।জায়ান ওকে বউ সাজে দেখে কি রিয়েকশন দিবে ভেবেই লজ্জাতুর হাসলো আরাবী।দুহাতে মুখ ঢেকে নিলো।

-‘ ওই মিয়া?এতো কিপটা কেন আপনি হ্যাঁ?আর বিয়ে তো আপনার না তাই নাহ?আপনি টাকা না দেওয়ার কে হ্যাঁ? জায়ান ভাইয়া টাকা বাহির করুন জলদি।’
আলিফার কথায় ইফতি চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো।বললো,
-‘ মিয়া? এই মিয়া টিয়া এসব আবার কি হ্যাঁ? আর সেম কথা তো আমিও বলতে পারি তাই নাহ?বিয়ে কি তোমার?তুমি টাকা চাইবে কেন?’
আলিফা রেগে বলে,

-‘ বান্ধবীটা আমার।সো আমি টাকা চাইবো না তো কে চাইবে হ্যাঁ? এই ফিহা তুমি কিছু বলো?তোমারও তো বোনের বিয়ে।’
ফিহা নাকচ করে বলে,
-‘ উফ আলিফা আপু আমি কথা বললে তোমাকে এনেছি কেন?আমি এতো চিল্লাপাল্লা করতে পারবো না।আমার গলা ব্যাথা করবে।আমি দাঁড়িয়ে আছি এটাই অনেক।’
আলিফা ফিহার কথায় রেগে বলে,

-‘ ন্যাকা কোথাকার একটা।’
তারপর ইফতির দিকে ফিরে আবার বলে,
-‘ টাকা না দিলে গেট ছাড়বো না।আর আমার বান্ধবীকেও দিবো না।ফিরে যান আপনারা।’
ইফতি জায়ানের হাত ধরে বলে,

-‘ হ্যাঁ, হ্যাঁ আমরাও আসবো না।টাকা তো আমি দিবোই নাহ।এই ভাইয়া চলো তো তুমি।’
জায়ান অসহায় হয়ে দুপক্ষের ঝগড়া দেখছে।তার মন চাচ্ছে এক্ষুনি ছুটে আরাবীর কাছে চলে যেতে।আর ওরা কিনা কি ঝ’গড়াঝাঁটি করছে।আর ইফতি গা’ধাটাও বলছে চলে যাবে।এটার মাথা খা’রাপ নাকি।জায়ান ইফতির থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো।তারপর বলে,

-‘ ইফতি টাকাটা দিয়ে দে নাহ।’
আলিফা জায়ানের এহেন কথা শুনে খুশিতে গদগদ হয়ে বলে,
-‘ দেখছেন আমাদের দুলাভাই কতো ভালো।ভাইয়া আপনি টাকা দিন।সবাই প্রবেশ করবে শুধু আপনার এই ভাইকে বাহিরে ফেলে রাখুন।একে ঢুকতে দিবো না আমি।ব্যাটা কিপটা।’
নূর হা করে আলিফার দিকে তাকিয়ে।আলিফা যে এমন ঝ’গড়া করতে পারে ও ভাবতেই পারেনি।এতোদিন তো কি সুন্দর করে ওদের সাথে কথা বলতো।নূর বলে উঠে,

-‘ আলিফা আপু।তুমি এমন ঝ’গড়া করছো কেন?’
আলিফা একহাত কোমড়ে রেখে আরেক হাত দিয়ে ইফতিকে দেখিয়ে নূরের উদ্দেশ্যে বললো,
-‘ আমি ঝ’গড়া করছি নাকি তোমার এই ভাই ঝ’গড়া করছে।পুরাই মেয়ে মানুষের মতো ঝ’গড়াখু’ন্নি। ইভেন মেয়ে মানুষের থেকেও বেশি।’
ইফতি আলিফার কথা রেগেমেগে বললো,

-‘ এই মেয়ে এই ঝ’গড়াখু’ন্নি কি হ্যাঁ? এইগুলা কেমন ভাষা?জীবনেও এসব শুনিনি আমি।হোয়াট ইজ ঝ’গড়াখু’ন্নি হ্যাঁ?’
ইফতির বলার ধরণ দেখে আলিফা না হেসে পারলো না।বেচারা রেগে লাল হয়ে গিয়েছে।আলিফা খিলখিলিয়ে হেসে দিলো।ইফতির রাগ যেন সেখানেই গলে পানি হয়ে গেলো।আলিফার দিকে হ্যাং মেরে তাকিয়ে রইলো। আলিফার হাসির শব্দগুলো যেন ওর হৃদয়ের ঝংকার তুলে দিচ্ছে।ধ্যান ভাঙলো নূরের ধাক্কায়,

-‘ ইফতি ভাইয়া আর কতোক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবো?পা ব্যাথা করছে তো।’
ইফতি আলিফার দিকে তাকিয়ে বলল,
-‘ দেখো তোমরা যা চাইছো এতোটা দিবো না।আমরা যা দিবো তাই নেও।তারপর গেট ছেড়ে দেও।’
আলিফা দৃঢ় গলায় বলে,

-‘ এক পয়সাও কম নেবো নাহ। জায়ান ভাইয়া আপনি টাকা দিবেন কিনা বলেন।এই ঝগড়াখুন্নি লোকটা বেশি করছে।এই বিয়ে কি আপনার? এমন করেন কেন হ্যাঁ?’
-‘ বিয়ে কি তোমার?’
-‘ আমার বান্ধবীর বিয়ে।’
-‘ আমার ভাইয়ের বিয়ে।’
-‘ আপনি চুপ থাকুন।’
-‘ তুমি চুপ থাকো।’

জায়ান বিরক্ত হয়ে গেলো এই দুটোর ঝ’গড়া দেখে।ধৈর্য’র বাঁধ ভে’ঙ্গে গেলো বেচারার।জায়ান ধ’মকে উঠলো,
-‘ আমি বিয়ে করতে এসেছি এখানে।নাকি তোদের কমেডি শো দেখতে এসেছি হ্যাৃ?আমাকে কি জোকার মনে হচ্ছে?এখানে আর কতোক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবো হ্যাঁ?’
নূর ভাইয়ের কথায় ফিঁক করে হেসে দিলো।জায়ান নূরকে ধ’মক দিয়ে বলে,
-‘ তুই হাসছিস কেন?’
নূর একগাল হাসলো।বললো,

-‘ ভাইয়া আমার কাছে একটা আইডিয়া আছে।’
-‘ কি আইডিয়া জলদি বল।যদি আইডিয়া ভালো না হয়।তাহলে থা’প্পড় দিয়ে তোর গাল লাল করে দিবো।আমার মাথা কিন্তু অনেক খা’রাপ হয়ে গিয়েছে।’
জায়ানের কথায় নূর বিরক্ত হয়ে বলে,

-‘ কথায় কথায় শুধু ধ’মকাও। এমন কেন তুমি?’
-‘ তুই বলবি?’
নূর মুখ ভেংচি কেটে বলে,
-‘ বলছি।তুমি ওদের বলো ভাবিকে এখানে আনতে।ভাবি যদি বলে আলিফা আপুরা যতোটাকা চেয়েছে তাই দিতে তাহলে তুমি দিয়ে দিবে।আর যদি না আনে তাহলে তুমি টাকা না দিয়েই ভীতরে প্রবেশ করবে।আমি সিউর ওরা ভাবিকে এখানে আনবে না।আর তোমার টাকাও দিতে হবে না।ইফতি ভাইয়া আর আরাবী আপুর ঝ’গড়াও থেমে যাবে।’
জায়ান বাঁকা হাসি দিলো।বললো,

-‘ পুরো একদিনের জন্যে আমার কার্ড তোর।’
-‘ ইয়াহুউউউ!’
জায়ান এইবার গলা খাকাড়ি দিলো।আলিফার উদ্দেশ্যে গম্ভীর গলায় বলে,
-‘ আলিফা আমার কথা শুনো।’
আলিফা ইফতির সাথে ঝ’গড়া থামিয়ে জায়ানের দিকে ধ্যান দিলো।জায়ান আবারও বললো,

-‘ আমি একশর্তে টাকা দিবো।’
আলিফা ভ্রু-কুচকে বললো,
-‘ কি শর্ত?’
জায়ান বাঁকা হাসলো।বলে উঠলো,

-‘ আরাবীকে এখানে নিয়ে এসো।ও যদি নিজে আমাকে তোমাদের দাবি করা টাকা দিতে বলে আমি নির্দ্বিধায় টাকা দিয়ে দিবো।আর যদি ওকে না আনতে পারো তাহলে একটাকাও আমি দিবো না।তুমি গেট ছেড়ে দিবে এমনিতেই।’
আলিফা সাথে সাথে চেচিয়ে বললো,
-‘ অসম্ভব এখানে আরাবীকে আনাই যাবে নাহ।’
-‘ তাহলে গেট ছেড়ে দেও।টাকার আশাও।’

জায়ানের কথায় আলিফা কাঁদো কাঁদো মুখে তাকালো।ইফতি ফিঁক করে হেসে দিলো।আলিফার শরীর জ্ব’লে গেলো ইফতির হাসিতে।রেগে বলে,
-‘ এই একদম হাসবেন নাহ।একেবারে দাঁত ভে’ঙ্গে দিবো আপনার।’
ইফতি হাসতে হাসতেই বলে,
-‘ আমি তো হাসবোই দেখি তুমি কি করো।’

আলিফা রেগে কিছু বলবে তার আগেই জায়ান টান টান হয়ে দাঁড়িয়ে বললো,
-‘ আলিফা কি করবে?আরাবীকে আনবে?নাকি বিনা টাকায় গেট ছাড়বে?’
আলিফা অ’গ্নিচোখে ইফতির দিকে তাকিয়ে ধুপধাপ পা ফেলে চলে গেলো।ইফতি আলিফাকে চলে যেতে দেখে ভাবুক গলায় বলে,

-‘ এই মেয়ে কি সত্যি সত্যিই ভাবিকে আনতে চলে গেলো নাকি?’
এদিকে জায়ান অস্থির হয়ে দাঁড়িয়ে।আলিফা যে আরাবীকে আনতে গিয়েছে তা সে ভালোভাবেই জানে।আরাবীকে এখনি দেখতে পাবে ভেবেই মনটা আরো ব্যাকুল হয়ে যাচ্ছে ওর।

আরাবী যখন নিজের ভাবনায় ব্যস্ত তখন ঠাস করে দরজা খুলে ধুপধাপ পা ফেলে রুমে প্রবেশ করলো আলিফা।চমকে উঠলো আরাবী।আলিফা সেদিকে ভ্রু-ক্ষেপ না করে বলে,
-‘ তোর দেবরটা এক নাম্বারের হাড়কিপ্টা সাথে একটা ঝ’গড়াখু’ন্নি।গেটের টাকা দিলো না তো দিলোই না।উফ অস’হ্য।’
তারপর আরাবীর হাত ধরে বলে,

-‘ এই চল তাড়াতাড়ি হাতে সময় নেই।’
আরাবীকে টেনে নিয়ে যেতে নিবে কিন্তু তার আগে আবারও থেমে গেলো আরাবী।আরাবীর সোনালী ওড়না সামনের দিকে লম্বা করে রাখা। মানে ওর মুখশ্রী ঢাকার জন্যে সামনে একটু বড় রেখেছে।আরাবী তা মাথার উপরে উঠিয়ে রেখেছে।আলিফা এইবার তা নামিয়ে দিয়ে আরাবীর মুখ ঢেকে দিলো।তারপর বলে,

-‘ জায়ান ভাইয়া বলেছে তোকে সেখানে নিয়ে যেতে।তুই যদি বলিস আমাদের দাবিকৃত টাকা দিয়ে দিতে তবেই সে দিবে।আর তোকে না আনলে সে একটাকাও দিবে না।টাকা ছাড়াই তাকে ঢুকতে দিতে বলেছে।এখন তোকে আমি সেখানে নিয়ে যাচ্ছি।ভুলেও তুই ঘোমটা উঠাবি না বিয়ে পড়ানোর আগে তোর মুখ জায়ান ভাইয়া যেন না দেখে।তুই শুধু সেখানে গিয়ে আমাদের টাকা দেওয়ার কথা বলেই চলে আসবি সোজা এখানে,বুঝেছিস?’

আরাবী এতোক্ষণ হা করে আলিফার সব কথা শুনছিলো।পরমুহূর্তেই হেসে দিলো।আলিফা বিরক্ত হয়ে বলে,
-‘ হাসিস না তো চল।’
আলিফা সেখানে নিয়ে যেতে লাগলো আরাবীকে।আরাবী মনে মনে হাসলো।সে তো জানে কোন টাকা দেওয়ার কিছুই না। লোকটা তাকে দেখার জন্যেই এমন শর্ত দিয়েছে।তবে বিয়ের আগে তো ওকে দেখতে পারবে না জায়ান।ভেবেই মুচঁকি হাসলো আরাবী।

এদিকে আরাবী লাল খয়েরী লেহেঙ্গা পড়া, সোনালী ওড়না মাথায় জড়ানো আরাবীকে আসতে দেখে উৎসুক হয়ে দাঁড়িয়ে।কিন্তু ওর আশায় এক ঘামলা পানি ঢেলে দিয়ে আরাবী ইয়া বড় ঘোমটা দিয়ে ওর পুরো মুখ ঢেরে রেখেছে।আলিফা তো আরো একধাপ উপরে।সে আরাবীর সামনে একগাদা মানুষ দাঁড় করিয়ে দিলো।এতে আগে যাও একটু দেখতে পাচ্চিলো। এখন তাও দেখতে পাচ্ছে না জায়ান।জায়ান বিরক্ত হয়ে গেলো। অস’হ্য কন্ঠে বলে,

-‘ এটা কি হলো আলিফা?’
আলিফা হেসে বলে,
-‘ কি হলো দুলাভাই? এনেছি তো আরাবীকে।এই আরাবী দুলাভাইকে টাকা দিতে বল।’

আরাবী তো ধ্যান মেরে তাকিয়ে জায়ানের দিকে।ওর হুশজ্ঞান নেই।ঘোমটার আড়াল থেকেই জায়ানকে দেখছে।লোকটাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।খয়েরী রঙের সেরওয়ানির মাঝে সোনালী জারি সুতোর কাজ করা।মাথায় পাগরি পরে বর বেশে দাৃড়ানো জায়ানকে দেখে যেন আরাবীর হৃদয় থমকে গিয়েছে।

আরাবীর মাঝেমধ্যে বিশ্বাস করতে ক’ষ্ট হয়।এমন একটা সুদর্শন পুরুষ নাকি আর একটু পরেই ওর স্বামি হয়ে যাবে।ওর অর্ধাঙ্গ, ওর চিরজীবনের সাথী,ওর জীবনসঙ্গী। আলিফা আরাবীর নড়চড় না দেখে আরাবীকে ধা’ক্কা দিলো।এতে যেন হুশ ফিরলো আরাবীর।আলিফা করমর করে বলে,

-‘ কিরে কিছু বলছিস কেন?’
আরাবী যেন কথাই বলতে পারছে না। জায়ানকে দেখে যেন ওর বাকশক্তিও লোপ পেয়েছে।আরাবী বহু ক’ষ্টে কাঁপা গলায় বলে,

-‘ দি..দিয়ে দিন না ওরা যা চাইছে।আজই তো এমন করবে।দিয়ে দিন।’
কথাটা বলতে দেরি।আলিফা ইশারা করলো আরাবীর এক কাজিনকে। সে দ্রুত আরাবীকে সেখান থেকে নিয়ে গেলো।ঘটনাটা দ্রত ঘটলো যে কেউ কিছুই বুঝলোই না।আলিফা ইয়া বড় হাসি দিয়ে বলে,
-‘ কি দুলাভাই আপনার শর্ত আমি মেনেছি।এইবার টাকা দিন।’

আর কিইবা করার আছে।বরপক্ষকে হার মানতে হলো কনেপক্ষের কাছে।জায়ান গুনে গুনে পাক্কা নগদ ত্রিশ হাজার টাকা দিলো আলিফার হাতে।আলিফা সুন্দর ভাবে কেঁ’চি দিলো জায়ানের হাতে।জায়ান গম্ভীর মুখ নিয়েই ফিতা কে’টে দিলো।সবাই হৈ হৈ করে উঠলো।বরপক্ষকে ভীতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হলো। ইফতি যেতে নিতেই আলিফা হাতের টাকা দিয়ে বাতাস করার দেখিয়ে বলে,

-‘ ঝ’গড়াখু’ন্নি সরি সরি আপনি তো ছেলে ঝ’গ’ড়াখু’ন্না হবে। এতোক্ষণ আমি ভুল বলছিলাম।যাক ঝ’গড়াখু’ন্না হেরে গেলো।’
ইফতি কিছুই বললো না।শুধু দু আঙুল ওর চোখের দিক ইশারা করে আবার আলিফার দিকে ইশারা করলো।এমন তিনচারবার করলো।মানে পরে তোমাকে দেখে নিবে।এমন বুঝালো।আলিফা ভেংচি কাটলো।ইফতি রাগে ফুসতে ফুসতে চলে গেলো।

এদিকে আরাবীর কাজিন আরাবীকে রুমে দিয়ে আসতেই আরাবী দ্রুত ঘোমটা উঠিয়ে জোড়েজোড়ে শ্বাস নিলো।লোকটাকে দেখে তার শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছে।আরাবী বিছানায় বসে ঢকঢক করে একগ্লাস পানি খেয়ে নিলো।ঠিক তখনই ব্যাগে রাখা আরাবীর ফোনে মেসেজ টোন বেজে উঠলো। আরাবী ফোনটা বের করে দেখে জায়ান মেসেজ করেছে।আরাবী দুরুদুরু বুক নিয়ে মেসেজ ওপেন করলো।সেখানে লিখা

হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ বোনাস পর্ব 

‘ আমার তৃষ্ণা পেয়েছে।ভীষণ রকম তৃষ্ণা।স্নিগ্ধ এক কাঠগোলাপকে দেখার তৃষ্ণা পেয়েছে।আমার এই তৃষ্ণা যেন কাঠগোলাপ দ্রুত মিটিয়ে দেয়।আমি সেই অপেক্ষায়।’

হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব ১১