সে আমার সুকেশিনী পর্ব ১২

সে আমার সুকেশিনী পর্ব ১২
রাউফুন

আকাশে একচ্ছত্র অন্ধকার। ঘন অন্ধকারকে চিরে মেঘের সাগরে হাবুডুবু খেয়ে একফালি ক্লান্ত চাঁদ দেখা দিয়ে চলেছে থেকে থেকে। বাতায়নের কপাট তীব্র বাতাসে একে অপরের সঙ্গে বাড়ী খাচ্ছে। থোকায় থোকায় ফুলে ভরা লেবু গাছটি থেকে ফুলের গন্ধ বাতাসের সঙ্গে এসে বিউটির ঘ্রান্দ্রেয়ীতে বাড়ী খাচ্ছে।

বিউটি মনে করে, লেবুগাছটা লেবু দিতে পারে না বলেই থোকা থোকা ফুল ফোঁটায়। এখনো লেবুফুলের গন্ধ তার রুমে আসছে। চাঁদের আলো যেনো একটু স্পষ্ট হলো। মেঘ কেটে গিয়েছে বোধহয়। বৃষ্টি আসবে না। বৃষ্টি হলে মন্দ হতো না। এই তীব্র জ্বরের মধ্যেও তার মনে সাধ জাগলো বৃষ্টিতে ভেজার। বৃষ্টির একেকটি ফোঁটায় তার সারা শরীর প্রচন্ড ভাবে কেঁপে কেঁপে উঠবে। সে দু চোখ বন্ধ করে সেই কঁম্পন অনুভব করবে। হঠাৎই তার মনে হচ্ছে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সে ছুটে ছাদে উঠে গিয়ে দেখবে সুপ্রিয় ভাই তার জন্য অপেক্ষা করছে। সুপ্রিয় ভাই তার পাশে এসে তাকে মুগ্ধ হয়ে দেখছে। সুপ্রিয় ভাই দু হাত ভর্তি করে বৃষ্টির পানি জমিয়ে তার দিকে ছুড়ছে আর সে প্রানবন্ত,চাঞ্চল্য সদ্য কিশোরী মেয়ের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।

খিলখিল হাসির শব্দ পুরো ছাদ ভরে যাচ্ছে। তার লম্বা রেশমি চুলের বিনুনি দীর্ঘদিন পর সুপ্রিয় ভাই নিজে হাতে খুলে দিচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার সেই চুলের পানি চষে নিয়ে সেই পানি সে সুপ্রিয় ভাইকে ছুড়ে দিচ্ছে। ইশ! কি মিষ্টি অনূভুতির দূষ্টুমি।

দুজন মানব মানবীর তোলপাড় করে হাসাহাসি, আর নুপুরের রিনিঝিনি শব্দে মুখরিত হচ্ছে চারপাশ। হঠাৎই তার চঞ্চলতা দেখে থেমে যাবে সুপ্রিয় ভাই নামক মানুষ টা। তার দিকে নেশালো দৃষ্টিতে তাকিয়ে তার মনের কথার জানান দেবে। আর বিউটি সেই চাহনিতে, সেই মাদকতা দেখেই বুঝে যাবে সুপ্রিয় ভাইয়ের চাওয়া। তার কোমড় ধরে কাছে টেনে আগ্রাসী চুম্বন করবে তাকে লজ্জা দিতে। আর তার লজ্জারুণ হয়ে যাওয়া সেই মুখের দিক থেকে দৃষ্টি সরবে না। বিউটি তা দেখে লজ্জা পেয়েও শুধাবে,

‘কি দেখছেন সুপ্রিয় ভাই?’
‘তোকে! তোর বয়স বাড়বে না রে, এদিকে আমার চুল দাঁড়িতে পাক ধরেছে। এই দেখ!’
‘পাক ধরেছে ভালো তো।’
‘ভালো?’
‘হ্যাঁ ভালো তো।’
‘কিভাবে?’

‘আমার শখের পুরুষের দিকে তাকাবে না কোনো তরুণী। তাকে দেখে মুগ্ধ হবে না। তার প্রেমে পড়বে না অন্য কোনো নারী। আমি চাই তোমার চুল দাঁড়ি পেঁকে একেবারে সাদা ফুরফুরে হয়ে যাক।’
‘লোকে তোকে বুড়ো লোকের বউ বলবে বিউটি!’
‘তাতে কার কি? বর আমার! বুড়ো হলেও সে আমার আর কচি হলেও সে আমার।’
‘বেশ কথা শিখেছিস তো!’

‘তা শিখবো না? আপনিই তো শিখিয়েছেন!’
‘তুই আমায় বিয়ে করবি না বিউটি?’
‘সেই অপেক্ষাতেই তো কতো গুলো বসন্তকে একলা ছাড়লাম। আপনার দেখা নেই কেন সুপ্রিয় ভাই?’
‘এই যে আমি। তোর অনুভবে, তোর কল্পনায়, তোর নিঃশ্বাসে, তোর অস্তিত্বের মাঝে বিলীন হয়ে আছি আমি, তোর আপাদমস্তক জুড়েই তো আমি। শুধুমাত্র আমিই!’

‘ভালোবাসার অনুভূতি কল্পনা করা মানে বুঝেন সুপ্রিয় ভাই? সে ব্যাক্তিটিকে এতোটাই ভালোবাসে যে তাকে গভীর ভাবে কল্পনা করে এবং যা কল্পনা করে সেটা বাস্তবে অনুভব করে।’
‘ভালোবাসায় হলো মস্ত এক কল্পনা। ভালোবাসা একটা সুন্দর স্বপ্নের মতো। এক জন্মের দুঃখের মতো। ভালোবাসা আস্তো এক সুখের পাহাড়ের গা বেয়ে টুপটাপ করে পড়া ঝর্ণার মতো। ঝর্ণার সুন্দর মুখরিত করা কলতাণের মতো। ইয়্যু ক্যান ফীল লাভড ওয়ানস হোয়্যার-এভার ইয়্যু ওয়ান্ট!

এভরি মোমেন্ট, এভরি প্লেস, এভরি ব্রেদ্ , এভরি স্যুইট স্মাইল, উইদ্ ডীপ পেইন এন্ উইদ্ গ্রেট হ্যাপিনেস!’
‘কি রে বিউটি, এই বিউটি। কি বিড়বিড় করছিস? স্বপ্ন দেখছিস নাকি? তোর ঘুমের ঘোরে কথা বলার রোগও আছে তবে?’
‘কি হয়েছে চিল্লাচ্ছিস কেন? দেখছিস না বৃষ্টিতে ভিজতেছি। কি সুন্দর বৃষ্টি!’

‘এবারে কি সত্যিই মাথাটা গেলো তোর? এই উঠ! উঠ বলছি!’ বিউটিকে ধাক্কা দিলো মারিয়াম।
‘আহ! মারিয়াম তুই এমন ষাড়ের মতো চেঁচাস কেন? সুন্দর করে কথা বলতে কি হয়?’
বিউটি আড়মোড়া ভেঙে উঠলো। মারিয়ামের চেঁচামেচিতে তার সুন্দর স্বপ্নের বারোটা বাজলো। সুপ্রিয় ভাইকে কি সুন্দর লাগছিলো। ইশ! বৃষ্টিতে ভিজলে বুঝি কাউকে এতো সুন্দর লাগে?

বিউটি জোর করে মারিয়ামকে নিজের পাশে বসালো। মারিয়াম ভ্রু কুচকে বললো, ‘কি রে তুই লজ্জা পাচ্ছিস মনে হচ্ছে! ব্যাপার কি?’
‘একটু আগে স্বপ্ন দেখছিলাম।’
‘কি দেখছিলি? ছেলেদের মতো ঐসব নাকি? ষেহ্ বান্ধবী, ষেহ্। আজকাল এসব স্বপ্ন দেখিস তুই?’
বিউটি বালিশ দিয়ে জোরেশোরে একটা বাড়ী দিলো মারিয়ামের মাথায়! মারিয়াম খেঁকিয়ে উঠলো।

‘এই তুই আমাকে মারছিস কেন? তুই এমন ভাবে লজ্জা পাচ্ছিস যেনো কাল রাতে তোর বাসর রাত ছিলো। তোর বিয়েও হয়নি আর কাল সেহেতু বাসর রাতও ছিলো না। তবে কি আমি ঐসব ধরে নিবো না?’
‘চুপ যা বেয়াদব, বেশরম মেয়ে। বিয়াত্তা মহিলারা লাজ লজ্জা ভুলে যায় তোকে দেখেই বুঝলাম। আমায় কখনো এসব বলতে দেখেছিস? জানিস, আমি সুপ্রিয় ভাইকে স্বপ্নে দেখেছি। তাকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজছিলাম। কি সুন্দর লাগছিলো তাকে ভেজা নাক, ভেজা ঠোঁট, ভেজা চোখ, গাল, আর ভেজা চুল। কি সুন্দর লাগছিলো তাকে!’

‘হয়েছে? তোর বলা শেষ? এবার থাম। এই শরীরে তো অফিসে যেতে পারবি না। ফ্রেশ হয়ে নে আন্টি ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে আছেন। চলে যায়।’
মারিয়াম চলে গেলে বিউটি মুচকি মুচকি হেসে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। আজ তার মুড ভীষণ ভালো। ব্রেকফাস্ট করে ঘরে আসার আগে সে হাশেম আলীর রুমে গেলো। রকিং চেয়ারে বসে খবরের কাগজ পড়ছেন তিঁনি। পায়ের শব্দে তিনি বুঝলেন তার মেয়ে এসেছে রুমে।

‘বিউটি, মা কিছু বলবে?’
‘আব্বু, আমার তোমার সঙ্গে ভীষণ ইম্পর্ট্যান্ট কথা আছে! ফ্রী আছো?’
‘আব্বু তার রাজকন্যার জন্য সব সময় ফ্রী। বসো পাশে।’

বিউটি বসলো। হাশেম আলী খবরের কাগজ রেখে দিলেন। মেয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করলেন। পাট কাঠির ন্যায় শুকনো মেয়ে তার আরও শুকিয়ে গেছে। মুখ সংকীর্ণ হয়ে চোখ দেবে গেছে। তবুও মনে হচ্ছে সদ্য আঠারো বছরে পা দেওয়া কোনো কিশোরী তার সামনে বসে আছে। এমনটা কি শুধুই তার মনে হয় নাকি অন্যদেরও? হতেই পারে তার মেয়েকে তার কাছে সেই ছোট টাই মনে হয়!

বাবা-মায়ের কাছে তার সন্তানরা কি কখনোই বড় হয়? এইতো সেদিন তিনি মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করালেন। এই টুকু মেয়ের কি উচ্ছ্বাস, পড়ার প্রতি কি অমায়িক টান। ছেলেদের মতো প্যান্ট শার্ট পড়ে থাকতো বলে অনেকেই ভেবে বসতো বিউটি তার মেয়ে নয় ছেলে। তবে চুল লম্বা হওয়ার পর আর কেউ-ই এই প্রশ্ন করেনি। মেয়েটা শুধু অংকে একটু দূর্বল ছিলো। ক্লাস নাইনে উঠার পর সেবার সব টিচাররা তো বলেই বসলো, ‘ আপনার মেয়ে এতোটা আগ্রহী সব সাবজেক্টে, প্রতিটি বিষয়ে অন্যতম মার্ক আনে।

সেদিন ওর হ্যান্ড রাইটিং দেখে আমি তাজ্জব বনে গেছি। এই টুকুন মেয়ের এতো সুন্দর হ্যান্ডরাইটিং সত্যিই প্রশংসনীয় বৈকি! আর সেই মেয়ে কিনা ম্যাথে মাত্র টেনেটুনে ফিফর্টি ফাইভ পার্সেন্ট মার্ক। মানা যায়? ওমন ব্রাইট স্টুডেন্ট এর থেকে এই রকম বাজে রেজাল্ট কি মানতে পারি? বুঝলেন হাশেম সাহেব, মেয়েকে ভালো অংকের টিচার ধরিয়ে দিন। দেখবেন অংকে দূর্বল থাকবে না। এখন অন্য সাবজেক্টে বেস্ট মার্ক পেয়ে ফার্স্ট হচ্ছে ঠিকই কিন্তু পরে যে কি করবে!’

অন্য টিচার বললেন, ‘আপনার মেয়ে অংকে এতো দূর্বল হলো কিভাবে? ছোট বেলা থেকে অংক শেখান নি? এভাবে চললে দেখবেন ম্যাথমেটিক্স এর জন্য মেট্রিক পাশ করছে না।’
হাশেম আলী বেশ বিব্রত হয়ে বলতেন, ‘একেবারে অল্প বয়স থেকেই ছড়াছড়ির বই ঘাঁটতে শুরু করেছে। এবিসিডির বই পড়তে শিখেছে প্রায় কথা বলা শেখার সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু কি জানেন?

ধারাপাত বইটার ধারে কাছেও ঘেঁষেনি। বলতো, কী বাজে বই রে এটা। এক কুড়োবা-কুড়োবো, লিজ্যে এসব কি?ধেৎ, এ বই আমি ছোঁবই না কোনো দিন। কি বিচ্ছিরি, সারা বইয়ের কোথাও একটা ছবি পর্যন্ত নেই। আর কি অংক পড়বো? এক থেকে দশ, দশ থেকে শো এই তো বেশ। এটাকে বই বলে? ছিঃ আর পড়বো না৷ অনেক পারি। এতো বিচ্ছিরি বই কে বানিয়ছে বাবা? এটা কোনো বই হলো?’

মেয়ের কথায় তিনি হেসে উঠতেন প্রান খুলে। আগের কথা ভেবে তিনি প্রায় এখনো শব্দ করে হেসে উঠলেন। বিউটি বাবার দিকে তাকিয়ে আছে।সে বসে থেকে বেশ অনেক্ষন অপেক্ষা করলো। তার বাবাকে চোখ বন্ধ দেখে উঠে যেতে নিলেই বাবার ওমন হাসি শুনলেন। বিউটি সহাস্যে প্রশ্ন করলো,

‘হাসছো কেন আব্বু? আমি ভাবলাম ঘুমিয়ে গেছো। ডাকতেও পারছিলাম না আবার আমার কথাটাও বলা ইম্পর্ট্যান্ট ছিলো তাই চলেও যেতে পারছিলাম না। ভাবলাম তুমি উঠলেই না হয় বলা যাবে।’
‘না মা, তোমার ছোট বেলার কথা ভাবছিলাম। তুমি অংক করতে গিয়ে কি বলতে মনে আছে? বলতে ইশ কি বিচ্ছিরি বই, এই অংক গুলোর ধারা কে করেছে?’

এই বলে তিনি আবার হাসলেন। বিউটি নিজেও হাসলো বাবার কথা শুনে। বাবার পাশে রাখা একটা টুলসে বসে আছে সে। হাশেম আলী বললেন,
‘এখন বলো কি তোমার ইম্পর্ট্যান্ট কথা?’
‘সুপ্রিয় ভাই এবং তার বাবার সম্পর্কে কি সন্দেহ করেছিলে আব্বু?’
‘তুমি তাদের ব্যাপারে এতো আগ্রহী কেন মা?’ বিউটি সেদিনের কথা এখনো মনে রেখেছে? যারপরনাই অবাক হয়ে গেলেন হাশেম আলী।

বিউটি কিছুটা অপ্রস্তুত হলো। বললো, ‘সেদিন তুমি তো কথা সম্পুর্ন করোনি। তাই পুরোটা জানতে চাইছি।’
‘সুপ্রিয় ছাড়াও যে হিকমতের আর একটা কন্যা সন্তান আছে জানো?’
‘মানে? আমি তো জানতাম না?’

‘না জানারই কথা। হিকমতের প্রথম স্ত্রীর কথা লুকিয়ে রেখেছিলো সবার থেকে। প্রথম স্ত্রী মা’রা যায় সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে। এরপর বিবাহ করে সুপ্রিয়র মাকে। সুপ্রিয় জন্মের পর প্রায় অনেক পর বিষয়টা সামনে আনে হিকমত সুপ্রিয়র মায়ের কাছে। সুপ্রিয়র মা সবটা মেনে নিয়ে সতীনের মেয়েকে বুকে আগলে নেন। মেয়েটি ছিলো সোনার মেয়ে। কি অমায়িক চেহেরা। আমার ট্রান্সফার হওয়ার পর তোমাদের নিয়ে এই ঢাকায় শিফট হলাম। কিন্তু গ্রামে আমার দরকার ছিলো। সেটা সেরে ভাবলাম গিয়ে হিকমতের সঙ্গে দেখা করে আসি।

এতোদিনের ভালো সম্পর্ক। এক সঙ্গে কতো জামাতের নামাজ আদায় করেছি। ভালো বন্ধুত্ব হয়েছিলো। তুমিও তো সুপ্রিয়র সঙ্গে বেশ মিশেছো। সখ্যতা গড়ে উঠেছিলো। ভাবলাম দেখা সাক্ষাৎ করে যা-ওয়া যাক। সেদিন যখন ওঁদের খোঁজ করতে গেলাম দেখলাম বাড়িতে তালা ঝোলানো। হিকমতের আগের শ্বশুর বাড়ি গিয়েও খোঁজ নিয়েছি। কোথাও পায়নি। তাহলে রাতারাতি একটা পরিবার গেলো কোথায়? গ্রামেরও কেউ-ই কিছু বলতে পারলো না। হঠাৎই কি এমন হলো যে এমন উধাও হলো আর এলাকার কেউ-ই তা জানলো না। এখানেই সন্দেহ হলো।’

‘তোমার সন্দেহটা কি আব্বু?’
হাশেম আলী ঘাঁমছেন। সেদিনের ঘটনা মনে পরলে আজও তার শরীরের লোম কা’টা দিয়ে উঠে। বিউটি লক্ষ্য করে বাবাকে পানি এগিয়ে দিলো। হাশেম আলী পানি পান করে বললেন,

‘সন্দেহ হয় ওর বাড়ির দরজার উপর রক্তের ছাঁপ দেখে। পরে পুলিশের কাছে খবর দিয়ে বাড়ি ভাঙার পর দেখি সম্পুর্ন রুমে র’ক্ত। কিন্তু কেউ-ই নেই রুমের মধ্যে। গ্রামের সবাই-ই এই ঘটনায় তাজ্জব বনে যায়। এতো কিছু ঘটেছে তারা কেউ-ই কিচ্ছু টের পায়নি? আমার সন্দেহ কেউ তাদের নিখুঁত ভাবে খু’ন করেছে! না হলে এখানে অন্য কাহিনি আছে। সুপ্রিয়র র’ক্তা’ক্ত জামা……।’

‘খু’ন হয়েছিলো মানে?’ বিউটির সারা শরীর কাঁপছে। কি করবে সে? তবে কি সুপ্রিয় ভাই আর তার পরিবার….নাহ, নাহ তা হতেই পারে না।
হাশেম আলী আরও কিছু বলবেন সেসময় দরজায় ঠকঠক আওয়াজ হলো। বিউটি আর হাশেম আলী এক সঙ্গে তাকালো। বিউটি হঠাৎই আগ্নেয়গিরির ন্যায় ক্রুদ্ধ হয়ে গেলো। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা লোকের অস্তিত্ব অনুভব করে বুঝলো সেটা সায়র।

রাগে ক্ষোভে বিউটি সরাসরি সায়রের কলার চেপে ধরলো। হাশেম আলী অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন বেশ। মেয়ের এমন ভয়ংকর রূপ তার কাছে অপরিচিত। সায়র চোখের ইশারায় তাকে বাইরে যেতে বললো। হাশেম আলী বাইরে চলে গেলেন। বিউটি সায়রের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,

সে আমার সুকেশিনী পর্ব ১১

‘আপনাকে তো সেদিনই বললাম, আমি আব্বুর সঙ্গে কথা বলার সময় কারোর ইন্টোরিয়্যোর পছন্দ করি না! বলিনি? বলেছি কি না?’
‘কলারটা ছেড়ে চেঁচান! এতো নিকটে এসেছেন যে এই অবস্থাতেও আমি কন্ট্রোল হাঁরাচ্ছি!’

সে আমার সুকেশিনী পর্ব ১৩